খালেদ মাহমুদের পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। দুজনেই ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। দুজনেই মাঠ থেকে বিদায় নিলেন। ২০০৬ সালে মাহমুদকে হঠাৎ করে মাঠ থেকে বিদায় জানায় সে সময়কার বিসিবি। এবার অবশ্য মাহমুদুল্লাহ বিদায় নেন আনুষ্ঠানিকভাবে সিদ্ধান্ত জানিয়ে। গতকাল ৩৮ বছর ২৫১ দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে টি-২০ বিদায় জানান হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। ১৪১ টি-২০ ম্যাচ খেলা মাহমুদুল্লাহকে বিদায় জানান নাজমুল হোসেন শান্তসহ গোটা দল স্মারক উপহার দিয়ে। মাহমুদুল্লাহর বিদায়ী ম্যাচে টাইগার বোলারদের তুলোধুনো করেছেন সূর্যকুমার যাদব, সঞ্জু স্যামস, হার্দিক পান্ডিয়া, রায়ান পরাগরা। স্বাগতিকদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ম্লান হয়ে পড়ে নাজমুল বাহিনী। বিশেষ করে টর্নেডো মেজাজে ব্যাটিং করেন ভারতীয় ওপেনার সঞ্জু স্যামসন। তার ৪৭ বলে ১১ চার ও ৮ ছক্কায় ১১১ রানে ভর করে ভারত সংগ্রহ করে রেকর্ড ৬ উইকেটে ২৯৭ রান। টি-২০ ক্রিকেটে যা দেশটির দলগত সর্বোচ্চ। ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ৩৫ বলে ৭৫ রান করেন ৮ চার ও ৫ ছক্কায়। পান্ডিয়া ৪৭ রান করেন ১৮ বলে ৪ চার ও ৪ ছক্কায়।
২৯৮ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ খেলতে নেমে ৭ উইকেটে ১৬৪ রান সংগ্রহ করে। ১৩৩ রানে জিতে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করল ভারত। তাওহিদ হৃদয় ৪২ বলে অপরাজিত ৬৩, লিটন ২৫ বলে ৪২ রান করেন।
সিরিজে প্রথমবার খেলার সুযোগ পান বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ তামিম ও স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান। টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে তানজিদ সাকিব তৃতীয় বলে সাজঘরে ফেরত পাঠান অভিষেক শর্মাকে। এর পরই সঞ্জু স্যামসন ও সূর্যকুমার ম্যাচের চিত্র পাল্টে ফেলেন আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে। দুজনে একে অপরের সঙ্গে অলিখিত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেতে ৬৯ বলে ১৭৩ রান যোগ করেন। দুজনে যখন ব্যাটিং করছিলেন, তখন মনে হচ্ছিল অনায়াশে টি-২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান করবে ভারত। টি-২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ স্কোর ৩ উইকেটে ৩১৪, নেপাল করেছিল মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬ উইকেটে ২৯৭ রান করেছে ভারত। আগের সর্বোচ্চ রান আফগানিস্তানের। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ উইকেটে ২৭৮ রান করেছিল দেশটি। বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের স্কোরটি যে কোনো দলের পক্ষে সর্বোচ্চ। ভারতের সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ২৬০, প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ৪ উইকেটে ২২৪ রান। স্যামসন আগের দুটি ম্যাচে রান করেছেন যথাক্রমে ২৯ ও ১০। গতকাল ব্যাটকে খাপ খোলা তলোয়ার বানিয়ে বিধ্বংসী টর্নেডো ব্যাটিং করেন। এতটাই বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাটিং করেন যে, ৬ ওভারের পাওয়ার প্লেতে নেন ৮২ রান। ১০ ওভারে ১ উইকেটে ১৫২ এবং ১৫ ওভারে ছিল ২ উইকেটে ২১৩ রান। শেষ ৫ ওভারে ভারত সংগ্রহ করে ৮৪ রান। এর মধ্যে স্যামসন ৪৭ বলে ১১১ রান করেন। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন ৪০ বলে এবং হাফসেঞ্চুরি করেন ২২ বলে। টেস্টে টানা ২ ম্যাচ হারার পর টি-২০ সিরিজে হ্যাটট্রিক হারে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ হয়ে শূন্য হাতে ফিরে আসছে।