২৪ নভেম্বর, ২০১৫ ২২:৫৫

বরিশালের জয়

অনলাইন ডেস্ক

 বরিশালের জয়

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) তৃতীয় দিনের দ্বিতীয় খেলায় সন্ধ্যা পৌনে সাতটায় মুখোমুখি হয় বরিশাল বুলস এবং সিলেট সুপারস্টারস। আল আমিন হোসেনের দুরন্ত বোলিং আর তাইজুলের মায়াবী ঘূর্ণিতে লো-স্কোরিং ম্যাচেও এক রানের জয় পেয়েছে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল বুলস।

টস জিতে আগে ব্যাটিং নেওয়া মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল ১৯.৩ ওভারে সবক’টি উইকেট হারিয়ে মাত্র ১০৮ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে সিলেটের ইনিংস শেষ হয় ১০৭ রান তুলে।

স্বল্প রানের টার্গেটে প্রথমবারের মতো বিপিএলের চলতি আসরে জয় পেতে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশালের আল আমিনের পেসে কাবু হয় সিলেটের টপঅর্ডাররা। আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক তুলে নেন টাইগার পেসার আল আমিন। ইনিংস সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট তুলে নিয়ে সিলেটের ব্যাটিংয়ে ধ্বস নামান টাইগার এ পেসার।

আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ওপেনিং জুটিটা বেশ ভালোই মানিয়ে নেয় বুলস। ২৩ বলে ৩৪ রান তুলে নেয় বরিশালের দুই ওপেনার শাহরিয়ার নাফিস এবং রনি তালুকদার। ১৫ বলে দুটি বাউন্ডারিতে ২০ রান করে সুবাশিষ রায়ের বলে উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন রনি তালুকদার। আরেক ওপেনার নাফিসের ব্যাট থেকে আসে ১২ রান। ফিদেল অ্যাওয়ার্ডের বলে রবি বোপারার তালুবন্দি হওয়ার আগে নাফিস ১১ বলে দুটি বাউন্ডারি হাঁকান।

ব্রেন্ডন টেইলর ৯, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৭ রান করে ফিরলে সাব্বিরের ব্যাট থেকে আসে ১৪ বলে ১৫ রান। এছাড়া সেকুজে প্রসন্ন (০), কেভিন কুপার (২), মোহাম্মদ সামি (০), আল আমিন (৩) ব্যাট হাতে তেমন কিছুই করতে পারেননি। ১০ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন তাইজুল ইসলাম।

তবে, দলের রান কিছুটা সচল রাখেন নাদিফ চৌধুরি। দলীয় ১০১ রানের মাথায় ইনিংসের ১৭তম ওভারের শেষ বলে রান আউট হয়ে ফেরেন ২৮ বলে একটি করে চার ও ছয়ে ২৪ রান করা নাদিফ।

সিলেটের হয়ে ৪ ওভার বল করে ১৮ রান খরচায় তিনটি উইকেট তুলে নেন নাজমুল ইসলাম। ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন রবি বোপারা। এছাড়া একটি করে উইকেট পান ফিদেল অ্যাওয়ার্ডস, সুবাশিষ রায় এবং মোহাম্মদ শহীদ।

১০৯ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশালের পেসার আল আমিনের বোলিং তোপে পড়ে মুশফিকের সিলেট। ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন মুনাবেরা এবং মুমিনুল হক। দ্বিতীয় ওভারে দলীয় ৯ রানের মাথায় মুমিনুলকে ফিরিয়ে দেন আল আমিন। উইকেটের পেছনে ব্রেন্ডন টেইলরের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে মুমিনুল ব্যক্তিগত ২ রান করেন।

চতুর্থ ওভারে আবারও আক্রমণে আসেন আল আমিন। প্রথম বলে রবি বোপারা সীমানা ছাড়া করেন এ পেসারকে। পরের বলেই ব্রেন্ডন টেইলরের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন বোপারা (৪)। তৃতীয় বলে নুরুল হাসানকে (০) সরাসরি বোল্ড করে সাজঘরের পথ দেখান আল আমিন। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে উইকেটে আসা মুশফিককে নিজের চতুর্থ বলে বোল্ড করেন টাইগার পেসার। মুশফিকের (০) স্ট্যাম্প ভেঙে চলতি আসরের প্রথম হ্যাটট্রিকের আনন্দে মাতেন আল আমিন।

বিপিএলের তিন আসর মিলিয়ে এটি দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। প্রথম আসরে হ্যাটট্রিক করেছিলেন দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে খেলা পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ সামি। আর প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আল-আমিন পেলেন হ্যাটট্রিকের স্বাদ।

দলীয় ১৮ রানের মাথায় টপঅর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপাকে পড়া সিলেটের ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব পালন করেন মুনাবেরা এবং ওয়াইজ শাহ। ব্যাটিং ক্রিজের অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখতে থাকা ওপেনার মুনাবেরা খেলেন ৩৬ রানের ইনিংস। তার ৩১ বলে সাজানো ইনিংসে ছিলো ৬টি বাউন্ডারি। তাইজুলের দ্বিতীয় শিকারে সাজঘরে ফেরেন মুনাবেরা। মাত্র এক বল আগেই তাইজুল এলবির ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন ১১ রান করা ওয়াইজ শাহকে। দলীয় ৬২ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারায় সিলেট।

এরপর আরেকবার ব্যাটিংয়ের হাল ধরার দায়িত্ব নেন নাজমুল ইসলাম এবং নাজমুল হোসেন মিলন। দুই নাজমুলে এগুতে থাকে সিলেটের রানের চাকা। গুরুত্বপূর্ণ ২৮ রানের জুটি গড়েন তারা। ১৭তম ওভারের শেষ বলে পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ সামির বলে বোল্ড হন ১৪ বলে ১৬ রান করা নাজমুল ইসলাম।

১৯তম ওভারে আক্রমণে এসে আল আমিনের আরেকটি দুরন্ত স্পেল দেখা যায়। তৃতীয় বলে তাইজুলের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করান সিলেটের হাল ধরা নাজমুল হোসেন মিলনকে। আল আমিনের পঞ্চম শিকারে সাজঘরে ফেরার আগে মিলনের ব্যাট থেকে আসে ১৫ রান।

শেষ ওভারে সিলেটের দরকার ছিলো ৮ রান। প্রথম বলেই তাইজুল ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ শহীদকে। দ্বিতীয় বলে ফিদেল অ্যাওয়ার্ডস দুই রান তুলে নেন। তৃতীয় বলে নেন আরও একটি রান। ফলে, শেষ তিন বলে হাতে এক উইকেট রেখে ৫ রান দরকার হয় সিলেটের। চতুর্থ বলে সুবাশিষ রায় কোনো রান নিতে পারেননি। জিততে হলে সিলেটের প্রয়োজন দুই বলে ৫ রান দরকার। শ্বাসরুদ্ধকর এ ম্যাচের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে আসে একটি রান। আর শেষ বলে দুই রান তুলতে পারলেও সিলেট হেরে যায় মাত্র ১ রানে।

বরিশালের হয়ে সেকুজে প্রসন্ন ৪ ওভার বল করে ২০ রান খরচ করে উইকেট শূন্য থাকেন। ৪ ওভার বল করে উইকেট শূন্য থাকেন ১৪ রান দেওয়া কেভিন কুপার। ৪ ওভারে মাত্র ৯ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ সামি। আর ৪ ওভারে ৩৬ রান দিলেও সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট পান আল আমিন হোসেন। তাইজুল ৪ ওভারে ২৩ রান খরচায় নেন আরও তিনটি উইকেট।

বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ নভেম্বর ১৫/ সালাহ উদ্দীন

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর