২ এপ্রিল, ২০১৬ ১৩:১৫
ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস নিয়ে তোলপাড়

ক্ষমা চেয়েও কঠিন উইকেটে মুশফিকুর

অনলাইন ডেস্ক

ক্ষমা চেয়েও কঠিন উইকেটে মুশফিকুর

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টেন পর্বে ভারতের কাছে হারার পরে মুশফিকুর রহিম নিয়ে ভক্তদের রায় ছিল, কী করলেন মুশফিক! আর বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের বিদায়ের পরপরই বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক সম্পর্কে তাঁর অনুরাগীদের প্রতিক্রিয়া— কী বললেন মুশফিক! শনিবার ভারতের জনপ্রিয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা তাদের একটি খবরে শুরুতে এভাবেই মুশফিককে নিয়ে কাটাছেঁড়ার চেষ্টা করেছেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো।

বৃহস্পতিবার রাতে ঠিক কী বলেছিলেন মুশফিক? ভারতের হারের পর দুটি স্ট্যাটাস দেন মুশফিক। প্রথমটায় ম্যাচের পর টিভিতে কথা বলছেন ধোনি এই ছবি দিয়ে লেখেন— ‘এটাই হল সুখ...!!! হাহাহা...!!! ভারত সেমিফাইনালে হেরে গেছে।’ দ্বিতীয়বার ওয়েস্ট ইন্ডিসের খেলোয়াড়দের উল্লাসের ছবি দিয়ে মন্তব্য— ‘এটাই হল সুখ... এখন অনেক ভাল ভাবে ঘুমোতে পারব। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুর্দান্ত!!!’

মুশফিকের এই জোড়া স্ট্যাটাসের জেরে ক্রিকেট মহলে তোলপাড় শুরু হয়। পরে তিনি আরও একটা টুইট করে ক্ষমা চেয়ে এবং আগের টুইটগুলো মুছে দিলেও বিতর্ক থামেনি। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িত কেউ কেউ এই ঘটনায় রীতিমতো হতবাক। বিসিবি কর্তারা ডেকে তাঁর সঙ্গে কথা বললে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

যদিও সরকারিভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কেউ মুশফিক নিয়ে সে ভাবে কড়া প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন না। এ ব্যাপারে তাঁর সরকারি বক্তব্য চাওয়া হলে বিসিবির মিডিয়া ম্যানেজার রাবিদ ইমাম বলেন, ‘‘এটা মুশফিকুরের ব্যক্তিগত ব্যাপার। বোর্ড এ ব্যাপারে মাথা ঘামাতে চায় না।’’ প্রায় একই কথা বলছেন বাংলাদেশের অন্যতম নির্বাচক হাবিবুল বাশারও। শুক্রবার ফোনে ধরা হলে প্রথমে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে আধ ঘণ্টা বাদে ফোন করুন। আমি দেখি মুশফিকের সঙ্গে কথা বলতে পারি কি না।’’ পরে যোগাযোগ করা হলে হাবিবুল বলেন, ‘‘আমি মুশফিককে ফোনে পেলাম না। তবে এটা বলব, ও যদি সত্যি দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে থাকে, তা হলে ব্যাপারটাকে এখনেই শেষ করে দেওয়া ভাল। এটা নিয়ে আমার কথা বলার কোন মানে হয় না।’’  

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড এই নিয়ে কী ভাবছে? বাংলাদেশ টিমের সঙ্গে দীর্ঘদিন ম্যানেজার হিসেবে থাকা সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার খালেদ মামুদ সুজনকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। তবে বিসিবির মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনস চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস ফোনে বললেন, ‘‘সোশ্যাল নেটওয়ার্কে এটা মুশফিকুরের ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া হলেও এটা ক্রিকেটের স্পিরিট বিরোধী। দরকারে ওর সঙ্গে কথা বলতে পারি। কারণ ও টিমের সিনিয়র ক্রিকেটার।’’

মুশফিকের স্ট্যাটাসের পর বাংলাদেশ সমাজ এবং ক্রিকেট মহল কার্যত দু’ভাগ। ঢাকায় ফোন করে জানা গেল, কেউ কেউ মনে করছেন, মুশফিকুরের এই স্ট্যাটাস ক্রিকেটের স্পিরিটের বিরোধী। এতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নিয়ে ভুল বার্তা গেছে। কেউ কেউ আবার এই বিতর্কে মুশফিকের পাশেই। তাদের যুক্তি, আইসিসি এবং ভারতীয় ক্রিকেট মিলে বাংলাদেশকে অনেকভাবে বঞ্চিত করেছে। তার উপর সে দিন ভারতের বিরুদ্ধে তিন বলে দু’রান তুলতে না পারার মানসিক যন্ত্রণা তো ছিলই। সব কিছু থেকেই আবেগের বশে এই কাণ্ড করেছেন মুশফিক।

বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের এই দুই স্ট্যাটাসের পরেই শুরু হয় ভারতীয় সমর্থকদের পাল্টা কমেন্ট। যার টার্গেট ছিলেন বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কই। পরে শুক্রবার ফের স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন মুশফিক। তিনি লেখেন— ‘দুঃখিত বন্ধুরা.. আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের একজন বড় সাপোর্টার। যাই হোক কড়া প্রতিক্রিয়ার জন্য দুঃখিত।’

যা উল্লেখ করে ইউনুস বলছেন, ‘‘মুশফিকুরও হয়তো বুঝতে পেরেছে ওর ওই স্ট্যাটাসের প্রতিক্রিয়া ভাল হয়নি ভক্তদের মধ্যে। তাই মনে হয় পরে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছে।’’

বিডি-প্রতিদিন/০২ এপ্রিল, ২০১৬/মাহবুব

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর