১ অক্টোবর, ২০১৬ ২১:৩৮

দেশের মাটিতে টানা ষষ্ঠ সিরিজ জয় বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক

দেশের মাটিতে টানা ষষ্ঠ সিরিজ জয় বাংলাদেশের

দেশের মাটিতে টানা ষষ্ঠ সিরিজ ও ওয়ানডেতে নিজেদের শততম জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আজ শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানকে ১৪১ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে এ কৃর্তি অর্জন করেছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।

তামিম ইকবালের শতক ও সাব্বির রহমানের অর্ধশতকসহ ১৪০ রানের চমৎকার জুটির উপর ভর করে বাংলাদেশের করা ২৮০ রানের টার্গেট ব্যাট করতে নেমে ৩৩ ওভার ৫ বলে ১৩৮ রানে অলআউট হয়ে যায় আফগানিস্তান।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ২৭৯ রান করে বাংলাদেশ।

বড় লক্ষ্য তাড়া করে জয়ে স্বপ্ন দেখা আফগানিস্তানের ইনিংসের শুরুতেই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শাহজাদকে সরাসরি বোল্ড করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরিয়ে প্রথম ধাক্কা দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তার করা গুড লেন্থের বলটি জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে যান শাহজাদ। বলটি ব্যাট ফাঁকি দিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে।

আফগানদের দলীয় ৫ রানেই প্রথম উইকেটের পতন ঘটে। শাহজাদ ৭ বল খেলে ফেরেন শূন্য রানে। এরপর অবশ্য নওরোজ মোঙ্গল আর রহমত শাহ মিলে ৪৭ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় কাটানোর ইঙ্গিত দেন।

এরপরই আট বছরের বেশি সময় পর জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া মোশাররফ হোসেন রুবেলের ঘূর্ণিতে সাজ ঘরে ফেরেন নওরোজ মোঙ্গল। এরপর তার বলেই তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ তুলে দেন হাশমতুল্লাহ শহিদি।

এরপর আফগান দর্শকরা যখন দলীয় অধিনায়ক আসগর স্টানিকজায়ের দিকে তাকিয়ে ফিলেন তখন ১৭তম ওভারে রহমত শাহের সঙ্গে একটি দ্রুত রান তুলতে গিয়ে সাকিব আল হাসানের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হয়ে ফিরে যান তিনি।

আসগর স্টানিকজায়ের বিদায়ের পর রহমত শাহ আর সামিউল্লাহ সেনওয়ারি ২৮ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টা করলে তাসকিন আহমেদকে আক্রমণে আনেন মাশরাফি। জুটিটা ভাঙেন তিনিই।

তাসকিনের একটি বাউন্সার খেলতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লাগলে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন সেনওয়ারি (১৩)। পরবর্তীতে রহমত শাহকেও ফেরান তাসকিন। ৭৩ বলে ৩৬ রান করে আউট হন রহমত শাহ।

আফগানদের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবীকে রিটার্ন ক্যাচে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান মোশাররফ রুবেল। ১০ বলে মাত্র ৩ রান করেন তিনি। এরপর মোসাদ্দেক হোসেন বোলিংয়ে এসেই প্রথম দুই বলেই সেট হওয়া দুই ব্যাটসম্যান রশিদ খান (১৭) ও নজিবুল্লাহ জাদরানকে (২৬) তুলে নিয়ে আফগানিস্তানকে খাদের কিনারে পৌঁছে দেন।

দৌলত জাদরান ০ রানে ফিরেয়ে দিয়ে আফগানদের কফিনে শেষ পেরেক মারেন শফিউল ইসলাম। মিরওয়াই আশরাফ ৪ রানে অপরাজিত থাকেন।

এই সিরিজ জিততে হলে রান তাড়ায় নিজেদের রেকর্ড ভাঙতে হতো আফগানদের। ২০১৪ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে সেরা জয় পেয়েছিল তারা। কিন্তু সেই সুযোগ তাদের দেয়নি মাশরাফির দল।

৮ ওভারে ১ মেডেনসহ ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার মোশাররফ হোসেন রুবেল।

এর আগে তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমানের ১৪০ রানের চমৎকার জুটির উপর ভর করে আফগানিস্তানকে ২৮০ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশ। আজ শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৮ উইকেটে ২৭৯ রান করে বাংলাদেশ।

মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ওয়ানডেতে ক্যারিয়ারের সপ্তম ওডিআই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তামিম ইকবাল। শুরুতেই সৌম্য সরকারের (১১) বিদায়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে ভালো অবস্থানে রেখে সাব্বির রহমান (৬৫) সাজঘরে ফিরে গেলে দলকে দৃঢ় ভিত্তি গড়ে দেন তামিম ইকবাল (১১৮)। দলীয় ২১২ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন তিনি।

তামিমের বিদায়ের সময়ও মনে হচ্ছিল দলীয় তিনশ’ রান হওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার। কিন্তু তামিম ও সাব্বির এই সম্ভাবনা জাগালেও শেষের ব্যাটিং ব্যর্থতায় পারেনি মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

প্রথম ম্যাচে মাত্র ২০ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আজ শনিবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে টস জিতে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নেমে সেই ভুল করেননি তামিম ইকবাল। ১১৮ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে মোহাম্মদ নবির বলে আউট হন তিনি। ১১টি চার ও দুই ছক্কার সাহায্যে এই রান করেন তিনি।

এর আগে তিন নম্বরে নামা সাব্বির রহমানের সঙ্গে ১৪০ রানের চমৎকার একটি জুটি উপহার দেন তামিম ইকবাল। আফগানদের বিপক্ষে বেশ সাবলিল ব্যাটিং করে তিনটি ছয় ও ছয়টি বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ার সেরা ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন সাব্বির রহমান। রহমত শাহর বল উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করতে গিয়ে আউট হওয়া এই ব্যাটসম্যানের ওয়ানডেতে আগের সেরা ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫৭।

আজও ব্যর্থ ওপেনার সৌম্য সরকার (১১ বলে ১১)। মিরওয়াইস আশরাফের বলে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। তবে তামিম আউট হওয়ার পরই শুরু মূলত শুরু হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপের বেহাল দশা। একের পর এক উইকেট হারাতে শুরু করে টাইগাররা।

তামিম আউট হওয়ার পর ব্যাট করতে নামেন মুশফিকুর রহীম। জুটি বাধেন সাকিবের সঙ্গে। তবে জুটিটা খুব বেশি বড় হলো না।  উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যাওয়ার আগে সাকিব ৩৫ বল খেলে ১৭ রান করেন।

এরপর আউট হন মুশফিকুর রহীম। ১৩ বল খেলে ১২ রান করার পর লেগ স্পিনার রশিদ খানের বলে লেগবিফোর আউট হয়ে গেলেন তিনি।

পরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেরের উপর আশা করেছিল দর্শকরা। কিন্তু দুর্ভাগ্য। ৪ বলে ৪ রান করার পর রশিদ খানের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে গেলেন মোসাদ্দেক। তবে মাহমুদুউল্লাহ শেষের দিকে ২২ বলে ৩২ রান করায় রানের চাকা কিছুটা সচল ছিল।

বিডি প্রতিদিন/ ০১ অক্টোবর ২০১৬/ এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর