৯ ডিসেম্বর, ২০১৬ ২১:৩৯

তৃতীয়বারের মত বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ঢাকা

অনলাইন ডেস্ক

তৃতীয়বারের মত বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ঢাকা

বিপিএলের প্রথম দুই আসরে যে দলটি শিরোপা হাতে উল্লাসে মেতেছিল সে দলটির 'ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স'। এখন সেই দলটির নাম 'ঢাকা ডায়নামাইটস'।  ২০১২ ও ২০১৩ সালের বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্স। পরিবর্তন বলতে ‘গ্ল্যাডিয়েটর্স’ এর বদলে ‘ডায়নামাইটস’। এছাড়া ঢাকা কিন্তু অপরিবর্তীতই আছে। কারণ তারা বিপিএল ২০১৬ এর চ্যাম্পিয়ন।

আর ঢাকা ডায়নামাইটস এর বিজয়ের মধ্যে দিয়ে শেষ হল বিপিএল ২০১৬। আজ মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিপিএল চতুর্থ আসরের ফাইনালে ঢাকা ডায়নামাইটস ৫৬ রানে রাজশাহী কিংসকে হারিয়ে তৃতীয়বারের মত শিরোপা নিজেদের করে নিল।

বিপিএলের ফাইনালের লড়াইয়ে টস হেরে আগে ব্যাট করা ঢাকা ডায়নামাইটস নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৫৯ রান। প্রথমবারের মতো বিপিএল শিরোপা জিততে রাজশাহী কিংসের দরকার ছিল ১৬০ রান। কিন্তু ১৭.৪ ওভার ব্যাট করে অল আউট হবার আগে রাজশাহী মাত্র ১০৩ রান তুলতে সক্ষম হয়।

শিরোপা নির্ধারণী এ ম্যাচে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রাজশাহী কিংস অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। ঢাকার হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন মেহেদি মারুফ এবং এভিন লুইস। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে স্যামি বল তুলে দেন টাইগার স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজের শিকার হন মেহেদি মারুফ। ১০ বলে একটি চারের সাহায্যে ৮ রান করেন ঢাকার ওপেনার মেহেদি মারুফ।

ফাইনালের মঞ্চে তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি নাসির হোসেন। মাত্র ৫ রান করে বিদায় নেন তিনি। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে স্যামি স্পিনার আফিফ হোসেনের প্রথম ওভারের শেষ বলে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন নাসিরকে। দলীয় ৩৫ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় ঢাকা। ব্যাট হাতে নেমে দ্রুত বিদায় নেন মোসাদ্দেক হোসেন। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে বোলিং আক্রমণে আসেন স্যামি। এসেই প্রথম বলে বিদায় করেন মোসাদ্দেক হোসেনকে। এলবির ফাঁদে পড়ার আগে মোসাদ্দেক করেন ৫ রান। দলীয় ৪২ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় ঢাকা।

এরপর জুটি গড়েন এভিন লুইস এবং কুমার সাঙ্গাকারা। এই জুটি থেকে আসে ২৫ বলে ৪১ রান। ইনিংসের ১১তম ওভারে ফরহাদ রেজার বলে উইলিয়ামসের তালুবন্দি হন এভিন লুইস। সাজঘরে ফেরার আগে ক্যাবিরীয় এই ওপেনার ৩১ বলে করেন ৪৫ রান।

ইনিংসের ১৩তম ওভারে বিদায় নেন ডোয়াইন ব্রাভো। রানআউট হয়ে ফেরার আগে তিনি করেন ১৩ রান। দলীয় ১০১ রানে পাঁচ উইকেট হারায় ঢাকা। ঢাকার তারকা অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল ইনিংসের ১৬তম ওভারে বিদায় নেন। সামিত প্যাটেল রাসেলকে ফেরান ৮ রানের মাথায়।দলীয় ১১৩ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারায় ঢাকা।

ঢাকার দলপতি সাকিব আল হাসান ৭ বলে দুই চারে ১২ রান করে ফরহাদ রেজার বলে বোল্ড হন। ইনিংসের ১৮তম ওভারে সপ্তম উইকেট হারায় ঢাকা। দলীয় ১৩০ রানের মাথায় বিদায় নেন সাকিব। ইনিংসের ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সাজঘরে ফেরেন আলাউদ্দিন বাবু। উইলিয়ামসের বলে স্যামির হাতে ধরা পড়ার আগে তিনি ১ রান করেন।

কুমার সাঙ্গাকারা ৩৩ বলে ৩৬ রান করে ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হন। ফরহাদ রেজা নিজের বলে নিজেই ক্যাচ নেন। লঙ্কান এই গ্রেট ব্যাট হাতে উইকেটের একপ্রান্ত ধরে না রাখলে আরও আগেই ঢাকার লোয়ারঅর্ডারদের পরীক্ষায় নামতে হতো। সাঙ্গার ইনিংসে ছিল মাত্র দুটি চারের মার, সঙ্গে ছিল একটি ছক্কা। সাঞ্জামুল ১২ রানে অপরাজিত থাকেন।

সাত বোলার বল হাতে নেন রাজশাহীর হয়ে। ফরহাদ রেজা তিনটি উইকেট তুলে নেন। একটি করে উইকেট পান উইলিয়ামস, মিরাজ, আফিফ, স্যামি আর প্যাটেল।

ঢাকার দেওয়া ১৬০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে রাজশাহীর হয়ে ব্যাটিংয়ে ওপেন করতে নামেন মুমিনুল হক ও নুরুল হাসান সোহান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে আবু জায়েদের বলে আন্দ্রে রাসেলের তালুবন্দি হওয়ার আগে সোহান করেন মাত্র ৫ রান। দলীয় ১৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় রাজশাহী।

এরপর জুটি গড়েন সাব্বির রহমান এবং মুমিনুল হক। সেট হয়েও নিজের ইনিংস বড় করতে পারেননি সাব্বির। ইনিংসের দশম ওভারে সাজঘরে ফেরেন রানআউট হয়ে। ব্যক্তিগত ২৬ রানে বিদায় নেন তিনি। ২২ বলে সাব্বির দুটি চার হাঁকান। সাব্বির-মুমিনুল মিলে স্কোরবোর্ডে আরও ৪৭ রান যোগ করেন। ইনিংসের ১১তম ওভারে সাকিব ফেরান মুমিনুলকে। রাজশাহীর এই ওপেনার ৩০ বলে তিনটি বাউন্ডারিতে ২৭ রান করে এলবির ফাঁদে পড়েন। দলীয় ৬৬ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় রাজশাহী।

চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন জেমস ফ্রাঙ্কলিন। ইনিংসের ১৩তম ওভারে সাঞ্জামুলের বলে ব্রাভোর তালুবন্দি হন তিনি। এরপর সামিত প্যাটেল এবং ড্যারেন স্যামি দলকে বেশি দূর টানতে পারেননি। ইনিংসের ১৪তম ওভারে সাকিব বোল্ড করেন স্যামিকে (৬)। আর এই উইকেটের মধ্যদিয়ে কেভিন কুপারকে হটিয়ে সাকিব বিপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটের (৬১) মালিক হন। 

পরের ওভারে সাঞ্জামুল ফিরিয়ে দেন সামিত প্যাটেলকে। ব্যক্তিগত ১৭ রানে আন্দ্রে রাসেলের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তার আগে ১২ বলে একটি বাউন্ডারির দেখা পান প্যাটেল। দলীয় ৯১ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারায় রাজশাহী।

দলীয় ৯৩ রানের মাথায় বিদায় নেন মেহেদি মিরাজ। তিনি করেন ১ রান। ১৭তম ওভারে ব্রাভো বোল্ড করেন ফরহাদ রেজাকে (২)। দলীয় ৯৮ রানের মাথায় অষ্টম উইকেট হারায় রাজশাহী। একই ওভারে ব্রাভোর থ্রোতে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন উইলিয়ামস (৪)। ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে আন্দ্রে রাসেল ফেরান নাজমুল ইসলামকে। আফিফ ৪ রানে অপরাজিত থাকেন। আর এর মধ্যদিয়ে তৃতীয় শিরোপা নিজেদের ঘরেই রাখে ঢাকা। আর একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে একটি সম্মান জনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হয়েছেন কুমারা সাঙ্গাকারা।


বিডি-প্রতিদিন/৯ ডিসেম্বর, ২০১৬/তাফসীর-১৫

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর