২০ জানুয়ারি, ২০১৭ ১১:২৪

দারুণ লড়েও অভিষেকে অর্ধশতক বঞ্চিত সোহান

অনলাইন ডেস্ক

দারুণ লড়েও অভিষেকে অর্ধশতক বঞ্চিত সোহান

ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভালে চলছে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। কিউইদের বিপক্ষে সিরিজের এই শেষ টেস্টে মাঠে নামার আগেই বড় ধাক্কা খায় টাইগার বাহিনী। দলের তিন ব্যাটিং স্তম্ভ মুশফিকুর রহিম, ইমরুল কায়েস ও মুমিনুর হককে ছাড়াই স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে নামতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে।

নিয়মিত অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম দলে না থাকায় সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবাল এই ম্যাচের অধিনায়ক। কিন্তু জীবনে প্রথমবার অধিনায়ক হিসেবে নেমেই টসে হেরেছেন তিনি। কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন।

ম্যাচের শুরুতেও ধাক্কা খায় টাইগার শিবির। দলীয় ৭ রানের মাথায় মাত্র ৫ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তামিম ইকবাল। শুরুতেই অধিনায়কের উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর ওয়ান ডাউনে নেমে উইকেটে থিতু হতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও। দলীয় ৩৮ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১৯ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে তিনিও সাজঘরে ফিরে যান। ইনিংসের প্রথম ঘণ্টায় দুই উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।  

দলের সিনিয়ররা যখন ব্যর্থতার পরিচয় দেন তখন সদ্য অভিষিক্ত একজন ক্রিকেটারের কাছে সেটাই মানসিক দুর্বলতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু ব্যতিক্রম রুপে দেখা দিলেন দুই অভিষিক্ত নুরুল হাসান সোহান এবং নাজমুল হোসেন। নাজমুল খুব ধীরস্থিরভাবে খেলে ১৮ রান করে আউট হলেও নুরুল ইনিংসটিকে টেনে নিয়ে যান আরও দূরে। শেষ পর্যন্ত অর্ধশতক থেকে ৩ রান দূরে শেষ হয় তার লড়াকু ইনিংস। একটুর জন্য অভিষেক ম্যাচটিতে একটি মাইলফলক স্পর্শ করতে পারলেন না তিনি।

দারুণ চাপের মাঝে যেভাবে ব্যাট করেছেন নুরুল যেভাবে ব্যাটিং করেছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। ছোট সংস্করণেও তার ব্যাটে দেখা গেছে প্রতিশ্রুতির ঝলক। দলের ব্যর্থতার মাঝে উজ্জ্বল হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান করলেন তিনি। প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে আছেন যথাক্রমে সৌম্য সরকার ও সাকিব আল হাসান।

নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গী করে লড়াইটা বেশ ভালোই জমিয়েছিলেন সোহান। ১৪ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারানোর পর এই জুটিই বাংলাদেশকে পথ দেখাচ্ছিল। দারুণ ব্যাট করে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন তারা। জুটিতে ৫৩ রান আসার পরই টিম সাউদির বলে জিত রাভালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। এরপর আবারও ধস নামে বাংলাদেশ শিবিরে। মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদ দ্রুত ফিরে। কিন্তু এক পাশ আগলে রেখে দারুন খেলে যাচ্ছিলেন নুরুল হাসান সোহান। তবে দলীয় ২৭৩ রানে বোল্টের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৯৮ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৪৭ রান করা এই উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। পরবর্তীতে কামরুল ইসলাম রাব্বি ও রুবেল হোসেন রান ও ওভারটাকে একটু বাড়িয়ে নিয়েছেন।

এর আগে ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভালে শুরু হয় বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। কিউইদের বিপক্ষে  তৃতীয় উইকেট জুটিতে সৌম্য সরকার ও সাকিব আল হাসানের অর্ধশতকে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। দলকে ২ উইকেটে ১৬৫ রানের দৃঢ় অবস্থানে নিয়ে যান সৌম্য সরকার ও সাকিব আল হাসান। এরপরই হঠাৎ ছন্দ পতন। দুই থিতু ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ১৭ বলের মধ্যে ফিরেন সাব্বির রহমানও। ১৭৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে বাংলাদেশ।  

সৌম্য সরকারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের প্রতিরোধ ভাঙেন ট্রেন্ট বোল্ট। শর্ট কাভারে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে বাঁহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান করেন ৮৬ রান। তার ১০৪ বলের ইনিংসটি গড়া ১১টি চারে। সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে তার সঙ্গে সাকিব আল হাসানের ২৫.৩ ওভার স্থায়ী ১২৭ রানের জুটি। সৌম্য সরকারের পর সাব্বির রহমানকে দ্রুত ফিরিয়ে বাংলাদেশকে চাপে ফেলেন ট্রেন্ট বোল্ট। বাঁহাতি পেসারের শর্ট বলে স্লিপে ক্যাচ তালুবন্দি করেন টিম সাউদি। পরে মাত্র ৭ রান করে সাব্বির ফিরে যান।  

সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমানের পর দ্রুত ফিরেন সাকিব আল হাসানও। টিম সাউদির লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটরক্ষক বিজে ওয়াটলিংকে ক্যাচ দেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানও। ৭৮ বলে ৯টি চারে ৫৯ রান করেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব।  

বিডি প্রতিদিন/২০ জানুয়ারি ২০১৭/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর