২৫ এপ্রিল, ২০১৭ ১২:১২

৪৯ রানেই বিরাট বাহিনীকে গুটিয়ে দেয়ার রহস্য ফাঁস করলেন গম্ভীর

অনলাইন ডেস্ক

৪৯ রানেই বিরাট বাহিনীকে গুটিয়ে দেয়ার রহস্য ফাঁস করলেন গম্ভীর

এবারের আইপিএলে সবচেয়ে শক্তিশালী দলগুলোর একটি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। দলটিতে আছেন ক্রিস গেইল, এ বি ডিভিলিয়ার্স, বিরাট কোহালিদের মতো প্রভাবশালী ব্যাটম্যানরা। আইপিএলে সর্বোচ্চ রান করার রেকর্ডও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের দখলে। কিন্তু  গত রবিবার দুর্ভাগ্যজনকভাবে কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) এর ১৩২ রানের তাড়া করতে গিয়ে আইপিএলে সর্বনিম্ন রানের (৪৯) রেকর্ডও গড়ে আরসিবি। 

সংবাদ প্রতিদিনে লেখা কলামে কেকেআর অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর ফাঁস করলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে ৪৯ রানে অলআউট করার রহস্য।গম্ভীর লিখেছেন-

কেকেআরের সঙ্গে আমার সাত বছর ঘর করার মধ্যে গতকালই প্রথম আমি রাগে গরগর করছিলাম! গুজরাট ম্যাচ হারাটা আমাকে তখনও খোঁচা মেরে চলেছে। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো পিঠে চেপেছে আরসিবি-র বিরুদ্ধে আমাদের এক উইকেটে ৬৫ থেকে ১৩১ রানে অল-আউট হওয়াটা! আইপিএল-এর ব্রেকে সাধারণত আমার প্রিয় ডিশ ভেটকি মাছের পাতুরির সঙ্গে আমি আরও একটু কিছু খেয়ে-টেয়ে থাকি।

রবিবার তার বদলে ওই সময়টায় আমি ইডেনের ড্রেসিংরুমে বাথরুমের শাওয়ার খুলে তার নিচে তিন-চার মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলাম। নিজের তীব্র আবেগটাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলাম। কিন্তু সেই কাজে ডাহা ফেল হলাম। ইনিংস ব্রেকের সময়ও প্রায় শেষ হয়ে আসছে। তাই গোটা টিমকে কাছে ডেকে নিজের বক্তব্য পেশ করলাম। আর নিজের ভেতরে যা-যা ছিল, সব উগড়ে দিলাম।

টিমমেটদের থেকে ওদের সবচেয়ে বেশি তীক্ষ্মতাটা দাবি করলাম। ওদের কাছে জয় চাইলাম। সবাইকে সাফ বলে দিলাম, শোনো ভাই, মাঠে যার ভেতর লড়াইয়ে একুটও হালকা দেখব, জানবে কেকেআরের জার্সিতে এটাই তার শেষ ম্যাচ। অন্তত আমি যদ্দিন ক্যাপ্টেন আছি। ম্যাচের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পরে এই কলম লেখার সময়েও ভেসে উঠছে, ইনিংস ব্রেকের সময় আমার কয়েকজন টিমমেটের মুখগুলো। আমার দিকে কেউ হা করে তাকিয়ে। কেউ অবাক। 

এত বছর কেকেআর অধিনায়ক হিসেবে বেশিরভাগ সময় ছেলেরা আমাকে হালকা চালে দেখে এসেছে। তাদের উপর কখনও নিজেকে চাপিয়ে দিইনি। কিন্তু রবিবারের ব্যাটিং বিপর্যয় আমাকে কষ্ট দিয়েছিল। জানি না, ইডেনে টিভি ক্যামেরা বা মাইক্রোফোন ব্যাপারটা ধরতে পেরেছিল কি না, তবে আরসিবি ইনিংসের সময় আমরা সারাক্ষণ ওদের ব্যাটসম্যানদের দিকে বিড়বিড় করে গিয়েছি। ওদের মনঃসংযোগ ঘেঁটে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আইপিএল-এর ফেয়ারপ্লে পুরস্কারের লিস্টে আমি জায়গা হারাতে রাজি আছি, কিন্তু পয়েন্ট টেবিলে কেকেআরকে হড়কাতে দেখতে কিছুতেই নই।

আমার দল গতকাল দুর্ধর্ষভাবে সাড়া দিয়েছে। রিংটোনটা ঠিক করে দিয়েছিল নাথন কুল্টার-নাইল।জাস্টিন ল্যাঙ্গারের কাছে পার্থে আমার সেই ব্যাটিং কোচিং নেওয়ার সময় কুল্টার-নাইলকে প্রথম দেখেছিলাম ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া টিমে। এদিন নিজেদের মধ্যে কথা বলিনি। কেবল বলটা ওর দিকে ছুড়ে দিয়েছিলাম। ও ওর কাজটা কী জানত। আমিও আমারটা। রবিবার মাঠে হেলমেট মাথায় আমার ফিল্ডিং করাটা আসলে একটা বার্তা। যতটা না সেটা ক্লোজ ইন পজিশনে দাঁড়ানোর জন্য। মাঠের আরও একটা ছবি নিশ্চয়ই প্রত্যেক ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থককে খুশি করেছে। ‘ইউনিভার্সাল বস’ ক্রিস গেইল এক ভারতীয় ফাস্ট বোলার উমেশ যাদবের ডেলিভারিতে ‘ডাক’ করছে!

আমার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট কী? ব্যাপারটা এভাবে দেখা যাক। রবিবার ইডেনে দু’টো কেকেআর টিম খেলেছে। প্রথম দলটা প্রথমার্ধে ব্যাট করেছে। দ্বিতীয় কেকেআর-টা খেলেছে জীবনের জন্য। ম্যাচ জিতে ড্রেসিংরুমে ফেরার পর আমার খুব ইচ্ছে করছিল, টিমকে ‘সরি’ বলতে। কিন্তু বলিনি। আরে, সময়টা তো এখন পাতুরি নিয়ে পড়ার!


বিডি প্রতিদিন/২৫ এপ্রিল, ২০১৭/ফারজানা

সর্বশেষ খবর