২২ অক্টোবর, ২০১৮ ১৩:০৬

ক্রিকেটে ফিক্সিং নিয়ে আল জাজিরার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক

ক্রিকেটে ফিক্সিং নিয়ে আল জাজিরার চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ

কাতারের টিভি চ্যানেল আল জাজিরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ম্যাচ ফিক্সিং নিয়ে আবারও অভিযোগ তুলেছে। তারা কয়েক মাস আগেও গোপন ক্যামেরা অভিযান চালিয়ে একই দাবি তোলে এবং এই নিয়ে ক্রিকেটবিশ্ব তোলপাড় হয়ে যায়। এবার আরও নির্দিষ্ট ও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ এনেছে আল জাজিরা।

২০১১-১২ সালে ফিক্সিং হয়েছে, এমন ১৫টি ম্যাচের তালিকা প্রকাশ করেছে এই চ্যানেলটি। যার মধ্যে বিশ্বকাপের একাধিক ম্যাচ এবং লর্ডসে ভারতের টেস্ট ম্যাচও রয়েছে। 

ক্রিকেটে ফিক্সিং হয় বলে এর আগেও অভিযোগ করেছিল এই আন্তর্জাতিক চ্যানেল। সেই সময়ে তাদের গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল ক্রিকেট ফিক্সিংয়ের কয়েকজন খলনায়কের কথাবার্তা। যেখানে তারা আলোচনা করেছিল, ক্রিকেটবিশ্ব জুড়ে কী ভাবে ফিক্সিং হয়। কাঠগড়ায় উঠেছিল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো দেশ। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট দুই দেশের বোর্ড।  

এই ফিক্সিং চক্রের অন্যতম একজন সুনীল মুনাওয়ার এবার ফোনে ও গোপন ক্যামেরার সামনে সরাসরি বলেছেন, ২০১১-১২ মৌসুমে কোন কোন ম্যাচে ফিক্সিং হয়েছে। যা তাঁর ফোনের কথাবার্তা রেকর্ড করে জানা গেছে বলে দাবি ওই চ্যানেলের। 

২০১১ সালে ভারত-ইংল্যান্ড লর্ডস টেস্ট নিয়ে দাবি করা হয়েছে, ওই টেস্টের দশ ওভারের একটি অংশে কত রান হবে, তা নাকি আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল। যে অংশ ফিক্সিং হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে, দেখা যায় সেই অংশে সত্যিই ততো রানই হয়েছিল এবং ‘ভবিষ্যদ্বানী’ অনুযায়ী সেই দশ ওভারের শেষ ওভারটি মেডেনই হয়। ম্যাচের আগেই এক ভারতীয় জুয়াড়ি দীনেশ খাম্বাট ওরফে ডিকে-কে নাকি বলে দেন মুনাওয়ার। রবিবার রাতে প্রচারিত এক ঘণ্টার তথ্যচিত্রে এই ফোন-কথোপকথনের রেকর্ডিং শোনানো হয়।

এর আগে ২০১৭ সালে রাঁচীতে ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্টেও ফিক্সিং হয়েছিল বলে দাবি করেছিল তারা। যে দাবি অবশ্য উড়িয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়া বোর্ড। 

২০১১ সালে ভারতে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের পাঁচটি ম্যাচে ও ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তিনটি ম্যাচেও এই ধরনের সেশন ফিক্সিং বা স্পট ফিক্সিং হয়েছে বলে অভিযোগ। যা মুনাওয়ারের কথার রেকর্ডিংয়ে শোনা যায়। তাঁর দাবি, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের বহু ক্রিকেটার এই ফিক্সিংয়ে যুক্ত রয়েছেন। 

যে সব ম্যাচে ফিক্সিং হয়েছে বলে অভিযোগ, তার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার মতো বড় ক্রিকেট খেলুড়ে দেশের ম্যাচও রয়েছে। 

চ্যানেলটির দাবি, ফিক্সিংয়ের খলনায়কেরা ২৬টি 'ভবিষ্যদ্বানী' করেছিল, তার মধ্যে ২৫টিই সঠিক ছিল। অভিযোগ, কয়েকটি ম্যাচে ৮-১০ ওভারের একাধিক সেশন ফিক্সিং ছিল। এমনকি কয়েকটি ম্যাচে দুই দলের ক্রিকেটারদেরই ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে নেওয়া হয়। 

আল জাজিরার দাবি, কোন ম্যাচে কোন সেশন ফিক্সিং হয়েছিল, তার বিস্তারিত তথ্যও নাকি তাদের কাছে আছে। কিন্তু সেগুলো তারা এখন প্রকাশ করবে না, পরবর্তীকালে সম্ভাব্য আইনি তদন্তের স্বার্থে। 

রবিবার এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আইসিসি-র দুর্নীতি দমন বিভাগ এই চ্যানেলের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। তাদের কাছে যা গোপন তথ্য ও প্রমান রয়েছে, তা আইসিসি'কে দিতে অনুরোধ করেছে।    


বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ

সর্বশেষ খবর