আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একের পর এক সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়ে চলেছেন ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। চোটের অজুহাত দেখিয়ে নেশন্স লিগে ফ্রান্সের হয়ে না খেলে রিয়ালের জার্সিতে মাঠে নেমে এবং পরে সুইডেনে নৈশক্লাবে সময় কাটিয়ে সমালোচনার জন্ম দেন তিনি।
এবার ধর্ষণ অভিযোগের তদন্ত চলায় তাকে পড়তে হলো খোদ রিয়াল মাদ্রিদের খাঁড়ার নিচে। ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। আন্তর্জাতিক বিরতিতে ছুটি পেয়ে সেদিন সুইডেনে গিয়েছিলেন এমবাপ্পে। সেখানে তিনি যে হোটেলে ওঠেন, সেখানে নাকি তার অবস্থানকালে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
সুইডেনের সংবাদপত্র আফ্টনব্লাডেট সর্বপ্রথম ওই ধর্ষণের অভিযোগ প্রকাশ্যে আনে। তবে, অভিযুক্তের নাম খোলাসা করেনি তারা। এরপর আফ্টনব্লাডেটের বরাত দিয়ে রোববার ফ্রান্সে খবরটি প্রচার করে ফরাসি ক্রীড়া বিষয়ক সংবাদমাধ্যম আরএমসি স্পোর্ট।
এমবাপে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কি না, তা উল্লেখ না করে ঘটনাটি নিয়ে সুইডিশ পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে খবর প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি। এমবাপে পুলিশি তদন্তের আওতায় রয়েছেন কি না, খবরে তাও স্পষ্ট করা হয়নি।
তবে, এ নিয়ে আরএমসির স্পোর্টের ওপর ক্ষোভ ঝাড়েন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। সোমবার এক্স পোস্টে তিনি ‘খবরটি ভুয়া’ বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাকে নিয়ে ঝুঁকি নেয়নি রিয়াল মাদ্রিদ।
মঙ্গলবার ‘আর্টিস্ট প্যাক’ নামে একটি নতুন পোশাকের ব্র্যান্ড চালু করেছে মাদ্রিদ জায়ান্টরা। রিয়াল মাদ্রিদ ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে সংস্থাটির দাতব্য কাজ প্রচারের উদ্দেশ্যে এই ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু হয়েছে।
এ উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্র্যান্ডের লোগো-সংবলিত পোশাক পরা অবস্থায় ক্লাবের খেলোয়াড়দের বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছে রিয়াল, কিন্তু কোথাও এমবাপ্পেকে লক্ষ্য করা যায়নি। ঘটনার শেষ এখানেই নয়। এ বিষয়টি নিয়ে জুড বেলিংহ্যামের একটি পোস্ট বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
বেলিংহ্যামের পোস্ট থেকে এটি বোঝা যাচ্ছে যে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমবাপেকে ব্র্যান্ডের প্রমোশনে রাখেনি রিয়াল মাদ্রিদ। এমনকি ব্র্যান্ডের ফটোসেশনের সময় তিনি থাকলেও পরে তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। গ্রুপ ছবি থেকেও তাকে এডিট করে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
রিয়াল মাদ্রিদ ব্র্যান্ডের প্রোমোশনাল ছবি প্রকাশের পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামে একই ছবি প্রকাশ করে বেলিংহ্যাম লেখেন, ‘এমন বিশেষ কিছুর অংশ হতে পেরে সত্যিই গর্বিত।’
তবে তার পোস্ট করা ছবিটি ছিল এডিট করার আগের, যেখানে এমবাপ্পেকে দেখা গেছে। অবশ্য, ছবিটি প্রকাশের পরপরই তিনি ডিলিট করে দিলেও ততক্ষণে অনেকেই তার স্ক্রিনশট নিয়ে ফেলেছেন। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ এমবাপেকে প্রমোশন থেকে মুছে ফেলার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।
এ নিয়ে স্পোর্টস জোন নামের একটি সংবাদমাধ্যম ব্যাখ্যা দিয়েছে, ‘আর্টিস্ট প্যাকের’ ব্র্যান্ডিং করেছে অ্যাডিডাস। কিন্তু এমবাপে নাইকির দূত হওয়ায় তাকে বিজ্ঞাপন থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। অথচ তারই স্বদেশি ও ক্লাব সতীর্থ এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গাও নাইকির দূত। কিন্তু বিজ্ঞাপনের ছবিতে স্থান পেতে সমস্যা হয়নি তার।
এদিকে, অভিযোগের বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টও করেন এমবাপ্পে। সেখানে তিনি বলেন, সুইডিশ ওই গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ততা আছে পিএসজির। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
পিএসজির কাছে ৫৫ মিলিয়ন ইউরো বেতন বকেয়া থাকায় ক্লাবের বিরুদ্ধে মামলা করেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। আর ধর্ষণের বিষয়টিও নাকি ওই মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত। এমন ধারণাই করছেন এমবাপ্পে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম