১৮ অক্টোবর, ২০১৭ ১৬:৪৫

বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপোর জাঁকজমক উদ্বোধন

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপোর জাঁকজমক উদ্বোধন

'মেক ইন বাংলাদেশ' স্লোগানে আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো ২০১৭’। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেইমে আনুষ্ঠানিকভাবে তিন দিনব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। 

জাঁকজমক এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ইমরান আহমেদ প্রমুখ।

এই মেলা চলবে শুক্রবার ২০ অক্টোবর পর্যন্ত। সবার জন্য উন্মুক্ত এ প্রদর্শনী চলবে সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। তবে মেলায় প্রবেশের জন্য অনলাইন নিবন্ধন বা স্পট নিবন্ধন করতে হবে। এর জন্য মেলায় থাকবে নিবন্ধন বুথ। এ ছাড়া নিবন্ধনের ওয়েবসাইট (www.ictexpo.com.bd) থেকে নিবন্ধন করা যাবে। নিবন্ধন করলে কিউআর কোডসহ ভিজিটর কার্ড ও উপহার পাবেন দর্শকেরা।

মেলায় গোল্ড স্পন্সর হিসেবে রয়েছে প্রযুক্তি ব্র্যান্ড এইচপি, টিপিলিংক; সিলভার স্পন্সর হিসেবে অংশগ্রহণ করছে ডাহুয়া টেকনোলজি। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের প্রায় ৬,৫০০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শতাধিক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছে। 

তথ্যপ্রযুক্তির নতুন সব পণ্য, সেবা, জীবনশৈলী ও ধারণা উপস্থাপন করছে এসব প্রতিষ্ঠান। ১৩২টি প্যাভিলিয়ন ও স্টলে বিভিন্ন সেবা প্রদর্শন করা হচ্ছে। নানা ছাড় ও উপহারে বিক্রি করা হচ্ছে প্রযুক্তিপণ্য।

মেলা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন অনেকটাই সম্পন্ন হয়েছে। এর সুফল পেতে হলে ডিজিটাল বাংলাদেশকে বাণিজ্যিকরণ করতে হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী প্রজন্মের হাত ধরে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো। এদেরকে তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন বিশেষায়িত শিক্ষক। আমাদের দেশে উপযুক্ত শিক্ষকের অভাব রয়েছে। প্রয়োজনে উন্নত দেশ থেকে শিক্ষক এনে তরুণদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন,  ‘তৈরি পোশাক শিল্পের মতো আইসিটি খাতেও বিপুল পরিমাণ সম্ভাবনা রয়েছে। এ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হলে ইন্টারনেট অব থিংকস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি,রোবোটিকসসহ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা বাড়াতে হবে।’ 

তিনি  বলেন, ‘প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে না পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নেবে না। ডিজিটাল বাংলাদেশের বাণিজ্যিকরণের অংশ হিসেবে আউটসোর্সিং খাতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে।’ 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘হার্ডওয়্যার খাতে সক্ষমতা বাড়াতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস ২০২১ সালের মধ্যেই হার্ডওয়্যার রফতানি করবে বাংলাদেশ।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম ও বিসিএসের সভাপতি আলী আশফাক, বিসিএসের মহাসচিব ইঞ্জি. সুব্রত সরকার, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইমরান আহমেদ এমপি, আইসিটি সচিব সুবীর কিশোর চৌধুরী, বিসিএস সভাপতি আলী আশফাক।

বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) যৌথ উদ্যোগে এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবার বর্ণাঢ্য প্রদর্শনী ‘বাংলাদেশ আইসিটি এক্সপো ২০১৭’। 

ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এ আয়োজন। যেসব অধুনা প্রযুক্তি ও ধারণা তথ্যপ্রযুক্তির প্রকৃতি ও ব্যবহার অবিশ্বাস্য গতিতে বদলে দিচ্ছে সেসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কতটুকু এগোতে পেরেছে, আমাদের সক্ষমতা ও দক্ষতা কী- তা উপস্থাপন করা হচ্ছে এ প্রদর্শনীতে। বিশেষ করে হার্ডওয়ার, ম্যানুফ্যাকচারিং ও গবেষণা খাতের সম্ভাবনা, কর্মপ্রচেষ্টা ও রূপকল্প তুলে ধরা হচ্ছে এতে। উপস্থাপন করা হচ্ছে হাই-টেক পার্ক এবং তথ্যপ্রযুক্তির উৎপাদন অবকাঠামোর অগ্রগতিও। জনসচেতনতা সৃষ্টি, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যবান্ধব পরিবেশ তৈরি, তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ ও উদ্যোক্তা তৈরি করতে সহায়ক হবে এ প্রদর্শনী।

মেলার আহ্বায়ক ইঞ্জি. সুব্রত সরকার জানান, এবারের মেলা শুরু থেকে জমজমাট। সবাই দারুণ সাড়া দিয়েছেন। তরুণদেও অংশগ্রহণ চোখে পড়ার মতো। এবার মেলায় তরুণ উদ্ভাবকদেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবারের মেলায় আটটি দেশ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসায়ী, প্রতিনিধি, স্পিকার অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিটুবিতে অংশ নেবেন। এতে দেশের প্রযুক্তি খাতের সম্ভাবনা আরও বাড়বে। প্রদর্শনীতে আরও থাকছে লোকাল ম্যানুফ্যাকচারাস ফোরাম, গেমিং, সেলফি, কুইজ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, মিট দ্যা লিডারস, লাইভ ইভেন্ট, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিনামূল্যে প্রবেশ ও ইন্টারনেট, ডিজিটাল সেবা ইত্যাদি। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য প্রদর্শনী উপলক্ষে বিভিন্ন অ্যাওয়ার্ড ও সম্মাননা দেয়া হবে। প্রদর্শনী চলাকালে মেলা প্রাঙ্গনে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তি ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কয়েকটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

প্রদর্শনীর বিস্তারিত থাকছে এক্সক্লুসিভ ওয়েব পোর্টাল www.ictexpo.com.bd-তে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও (www.facebook.com/BangladeshICTexpo) প্রদর্শনী নিয়ে থাকছে নানা আয়োজন।

বিডি প্রতিদিন/১৮ অক্টোবর ২০১৭/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর