প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে ব্যক্তির রুচির ওপর অনেকটাই নির্ভর করে। ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেমের কারণে অনেকেই অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনতে বেশি আগ্রহ দেখান। তবে অ্যান্ড্রয়েডকে বেশি মাত্রার ভাইরাস ঝুঁকির কারণ হিসেবে দেখে অনেকেই আবার আইফোন পছন্দ করেন। কিন্তু বেশির ভাগ ব্যবহারকারীই এ দুটি অপারেটিং সিস্টেমের তুলনা করতে নারাজ।
অ্যাপ সোর্সিং : অ্যাপল তার অ্যাপ স্টোরে থাকা সব অ্যাপ নিখুঁতভাবে পরীক্ষা করে। ফলে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোরে অ্যাপের সংখ্যা কম হলেও ক্ষতিকর অ্যাপ নেই বললেই চলে। অপরদিকে অ্যান্ড্রয়েডের প্লে-স্টোরে অ্যাপের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা হয় না বলে ক্ষতিকর অ্যাপও থাকতে পারে। ফলে, হ্যাকারদের পক্ষে ক্ষতিকর অ্যাপের সাহায্যে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করা সহজ।
ডিভাইস ও আপডেট : অ্যাপলের ডিভাইস এবং এর আইওএস এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ফলে ডিভাইসের ফিচারগুলো অ্যান্ড্রয়েড ফোনের তুলনায় বেশ রেস্ট্রিক্টেড। অন্যদিকে, অ্যান্ড্রয়েডের উন্মুক্ত প্রকৃতির কারণে এটি বিভিন্ন ডিভাইসে ইনস্টল করা যায়। ফলে কিছু ডিভাইস অ্যান্ড্রয়েডের সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে সমন্বিত হলেও কিছু ডিভাইসে দুর্বলতা থেকে যায়। আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েডকে সুরক্ষিত রাখার জন্য অ্যাপল এবং গুগল ধারাবাহিকভাবে নিজস্ব ওএসের আপডেট নিয়ে আসে। অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে সেবা দেওয়ায় গুগলের জন্য সব অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসকে একই স্তরের নিরাপত্তা এবং ধারাবাহিক আপডেট সরবরাহ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
থার্ড পার্টি অ্যাপ ও ভিপিএন : উভয় অপারেটিং সিস্টেমই ভিপিএনসহ থার্ড পার্টি সিকিউরিটি অ্যাপ চালানোর অনুমতি দেয়। আইওএস এবং অ্যান্ড্রয়েড, উভয়ই জনপ্রিয় ও দরকারি সুরক্ষা অ্যাপগুলো চালানোর অনুমতি প্রদান করে।
সোর্স কোড : সোর্স কোডের দিক দিয়েও অ্যাপল ও অ্যান্ড্রয়েড সমানে সমান। অ্যাপল তাদের সোর্স কোড রক্ষা করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সঙ্গে। অন্যদিকে অ্যান্ড্রয়েডের বেশির ভাগ ওএস তৈরি হয় ওপেন-সোর্স থেকে। সেক্ষত্রে অ্যাপল কিছুটা হলেও এগিয়ে।
জনপ্রিয়তার ঝুঁকি : স্ট্যাটিস্টার তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বব্যাপী মোট স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর মধ্যে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী ছিল ৮৬.২ শতাংশ এবং আইওএস ব্যবহারকারী ১৩.৮ শতাংশ। জনপ্রিয়তায় অ্যান্ড্রয়েড এগিয়ে থাকলেও এটি অ্যান্ড্রয়েডকে হ্যাকারদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। অন্যদিকে আইফোন হ্যাকারদের জন্য কম আকর্ষণীয়।
দুর্বলতা : ঝুঁকির কথা বলতে গেলে আইওএস অবশ্যই অ্যান্ড্রয়েডের চেয়ে বেশি নিরাপদ। কেননা অ্যান্ড্রয়েড হ্যাকারদের জন্য দুর্বলতা শনাক্ত করা এবং ম্যালওয়্যার তৈরি করা সহজ, যার ফলে হুমকির মাত্রা বৃদ্ধি পায়। কিন্তু অ্যাপলের গোপন নির্মাণশৈলীর ফলে তাদের অপারেটিং সিস্টেমে হ্যাকারদের প্রবেশ আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে।
তথ্যসূত্র : বিজনেস ইনসাইডার