শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

নগর পুলিশ গঠনের সিদ্ধান্তে খুশি গাজীপুরবাসী

ষখায়রুল ইসলাম, গাজীপুর

নগর পুলিশ গঠনের সিদ্ধান্তে খুশি গাজীপুরবাসী

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর টাঁকশাল, সমরাস্ত্র কারখানা, পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থাকা গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) ইউনিট গঠনে সরকার সিদ্ধান্তে খুশি গাজীপুরবাসী। গাজীপুর মহানগর পুলিশ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ মহানগর পুলিশের কাঠামো আইনে রূপান্তরিত হলে এখানে একজন ডিআইজিসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োগ দেওয়া হবে। তাদের আশা, জিএমপির কার্যক্রম শুরু হলে নগরবাসীর নিরাপত্তা বাড়বে এবং যানজট থেকে মুক্তি মিলবে। রাজধানীর খুব কাছে দেশের বৃহত্তম সিটি করপোরেশন গাজীপুর। প্রায় ৬০ লাখ মানুষ অধ্যুষিত গাজীপুরে একজন মেয়র ও ৫৭টি ওয়ার্ডের ৫৭ সাধারণ ও ১৯ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর দায়িত্ব পালন করলেও এটি কার্যত পূর্ণাঙ্গ সিটি করপোরেশনে রূপ লাভ করেনি। আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিল্পসমৃদ্ধ গাজীপুর সিটি করপোরেশন গঠনের আড়াই বছর পার হলেও পুলিশের নাগরিক সেবা কাঠামো আগের মতোই টঙ্গী মডেল থানা ও জয়দেবপুর থানার মাধ্যমেই চলছিল। বর্ধিত এলাকা নিয়ে সিটি করপোরেশন গঠনের পরেও মহানগরের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে একজন পুলিশ সুপারের অধীনে দুটি থানার জনবল দিয়ে।

রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ছাড়াও এখানে রয়েছে হাজার হাজার তৈরি পোশাক শিল্প ও কলকারখানা। এসবে কাজ করে লাখ লাখ শ্রমিক। ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক এবং ঢাকা বাইপাস সড়ক নগরীর ওপর দিয়ে গেছে। এসব মহাসড়ক ও বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। বিভিন্ন শিল্প-কারখানার পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত রয়েছে হাজার হাজার ট্রাক, লরি। এসব যানবাহনের হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করে। ফলে জেলা পুলিশের কার্যপরিধি বেড়েছে। তবে স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

এ কারণে গাজীপুরে মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিট গঠন বিষয়ে গত বছরের ২২ আগস্ট পুলিশ সদর দফতর থেকে প্রস্তাবনা পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। মহানগরী এলাকার মধ্যে বর্তমানে থাকা দুই থানা ভেঙে আটটি থানা নিয়ে গঠিত হতে যাচ্ছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। বর্তমানে পুরো জেলায় এসপিসহ বিভিন্ন পদমর‌্যাদার ৩২৬ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য রয়েছেন। সেখানে মেট্রোপলিটনের প্রধান ডিআইজিসহ আট হাজার ২২৬ পদের প্রস্তাব করা হয়েছে। গাড়ি চাওয়া হয়েছে এক হাজার ২১৭টি। বছরে খরচ হবে ১৮৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। গত ৭ ডিসেম্বর ‘গাজীপুর মহানগরী পুলিশ আইন ২০১৫’ খসড়া অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। এখন খসড়া আইনটি আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হবে। এরপর তা বিল আকারে সংসদে যাবে। সংসদে পাস হওয়ার পর সেটি রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পাবে। এরপরই যাত্রা শুরু করবে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিট।

মহানগরের বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, মহানগর পুলিশ গঠিত হলে অধিকসংখ্যক থানা ও পর‌্যাপ্ত পুলিশ সদস্য নগরের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখবে। আমরা মহানগরবাসী নিরাপদ ও স্বস্তিতে জীবনযাপন করতে পারব। দ্রুত এ সিদ্ধান্ত কার্যকরের দাবি জানান তিনি।

গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি নতুন ইউনিট হচ্ছে এজন্য জেলা পুলিশ আনন্দিত। এ কাজে সব রকম সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন জেলার পুলিশপ্রধান।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ জানান, প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার কারণে গাজীপুর মহানগর পুলিশ প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এজন্য তিনি নগরবাসীর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি প্রত্যাশা করেন, নগরবাসীর সেবা বৃদ্ধিকল্পে প্রধানমন্ত্রী সবসময় গাজীপুরবাসীর পাশে থাকবেন।

সর্বশেষ খবর