রাজধানীতে বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত খুব বেড়ে গেছে। বেওয়ারিশ কুকুরের অত্যাচারে বিপদের মধ্যে আছেন অনেক এলাকার মানুষ। রাজধানীর বনশ্রী, মেরাদিয়ায় কুকুরের অত্যাচারে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় আছেন নিম্নবিত্তরা। বিশেষ করে যারা টিন শেডের একতলা বাড়িতে থাকেন তাদের প্রতিদিনই কোনো না কোনোভাবে কুকুরের অত্যাচার সহ্য করতে হয়। সময়-অসময়ে ঘরের দরজা খোলা থাকলেই সেখানে কুকুর ঢুকে পড়ে। রান্না করা খাবার খেয়ে ফেলে। চলতি পথে মানুষকে কামড়ে দেয়।
এলাকাবাসী আরও জানান, বেওয়ারিশ কুকুরের অত্যাচারে তারা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন। এ নিয়ে আতঙ্কেও রয়েছেন তারা। একদিকে কামড়ানোর আশঙ্কা অন্যদিকে খাবার খাওয়া বা মুখ দেওয়ার ভয়ে বাড়ি ফেলে কোথাও যেতেও পারছেন না তারা। বেওয়ারিশ কুকুরের উৎপাত নগরীর আরও অনেক এলাকায়ও।
জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ৬৬ হাজার ২০৪ জন জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এলজিইডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, কুকুর মারা বন্ধ রেখে টিকাদান কর্মসূচি ও বন্ধ্যাকরণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।২০১২ সালে উচ্চ আদালত কুকুর নিধনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে, ঢাকায় এ মুহূর্তে দেড় লাখের বেশি বেওয়ারিশ কুকুর আছে। একটি মাদি কুকুর বছরে আটটি পর্যন্ত বাচ্চা দেয়। গত তিন বছর কুকুর মারা বন্ধ থাকায় কুকুরের সংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়েছে।
আদালতের নিষেধাজ্ঞার পর দুই সিটি করপোরেশন একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে কুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও জলাতঙ্ক প্রতিরোধী টিকা দেওয়ার চুক্তি করে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত সংস্থাটি ১০ হাজার কুকুরকে বন্ধ্যাকরণ করেছে অথবা টিকা দিয়েছে। এ বছর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় চার হাজার কুকুরকে বন্ধ্যাকরণ ইনজেকশন দেওয়া হবে।
সম্প্রতি সংসদে নুরুন্নবী চৌধুরী এমপির প্রশ্নের জবাবে এলজিইডি মন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে রাজধানীতে বেওয়ারিশ কুকুর নিধনের কাজ বন্ধ রয়েছে।
বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কুকুর মারা বন্ধ রেখে টিকাদান কর্মসূচি ও বন্ধ্যাকরণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।