মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ট্যাক্সিক্যাবে ভোগান্তির শেষ নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্যাক্সিক্যাবে ভোগান্তির শেষ নেই

ঢাকার উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব ইমতিয়াজ আহমেদ অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে যাবেন স্কয়ার হাসপাতালে। নিজের গাড়ি নেই। রোগী নিয়ে বাসেও চড়তে পারছেন না। তাই ফোন করলেন ট্যাক্সিক্যাবের হটলাইন নম্বরে। প্রথমে তমা ক্যাবের ০১৭৫৫৬৬৭০৭০ নম্বরে ফোন দিলেন। পর পর সাতবার ফোন দিলেন। প্রতিবারই হটলাইন তাকে অপেক্ষায় রাখে। সাতবারে ১৮ মিনিট তিনি অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু ট্যাক্সি বুকিং দিতে পারলেন না। ১৮ মিনিটের মোবাইল বিল খরচ হলো। তারপর ফোন দিলেন ট্রাস্ট ট্যাক্সিক্যাবের ১০৭৫৫৬৬৭১৭১ নম্বরে। এবারও তিনবারে তিনি অপারেটরের সঙ্গে কথা বলতে পারলেন। গাড়ির বুকিংও দিলেন। একটু পরে ড্রাইভার তাকে ফোন করল এবং জানালো, তার গাড়ি উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে। ৬ নম্বর সেক্টরে যেতে হলে তাকে মিটার অন করে আসতে হবে। ইমতিয়াজ সাহেব তাতেই রাজি। কারণ, তার গাড়ি লাগবে। প্রায় ২৫ মিনিট পর তিনি গাড়ি পেলেন। গাড়িতে চড়ে মিটারের দিকে তাকিয়ে দেখেন বাসা পর্যন্ত গাড়ি আসতেই  ১৭৮ টাকা বিল উঠে গেছে। তিনি কিছু মনে করলেন না। কারণ, তাকে ডাক্তারের কাছে যেতেই হবে। স্কয়ার হাসপাতালে গিয়ে কত বিল হলো জানতে চাইলে মুদ্রিত একটি কাগজ চালক তার হাতে দিলেন। তাতে মোবাইল ফোন বিল বাবদ ২০ টাকা যোগ করা হয়েছে। এভাবেই একজন নাগরিক প্রয়োজনের সময় ট্যাক্সিসেবা পাচ্ছেন। এমন ঘটনা শুধু ইমতিয়াজ সাহেবের নয়, যারা ট্যাক্সিক্যাব ব্যবহার করেন তাদের সবার ভাগ্যেই এমন ঘটনা ঘটে। সমাজের বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক ইমতিয়াজ সাহেব মনে করেন, ট্যাক্সিক্যাব নগরবাসীর জন্য নতুন একটি যন্ত্রণা। কারণ, ফোন করে গাড়ি পাওয়া যায় না। ক্যাব কোম্পানিগুলোতে ফোন করলে তারা ফোন ধরে না। অথচ যিনি ফোন করছেন তার টাকা কাটা হয়। ক্যাব পাওয়া গেলেও যেখান থেকে গাড়িটি চলতে থাকে সেখান থেকেই মিটার অন করা হয়। সেই সঙ্গে বিলের সঙ্গে ২০ টাকা মোবাইল বিল যোগ করে দেওয়া হয়। আর বিভিন্ন স্ট্যান্ডে যেসব ট্যাক্সি অপেক্ষমাণ থাকে সেগুলোর চালকও চলে নিজের ইচ্ছা মতো। অথচ যাত্রীর চাহিদামতো তাদের চলাচলের বাধ্যবাধকতা আছে। কিন্তু কেউ কোনো আইন মানছে না। সবাই শুধু যার যার ধান্ধায় সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে নিচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। এ ধরনের নাগরিক যন্ত্রণার অবসান কীভাবে হবে সে প্রশ্ন ইমতিয়াজ সাহেবের মতো নগরবাসীর।

সর্বশেষ খবর