মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

শিল্পাঞ্চলে বর্জ্যের ভাগাড়

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

শিল্পাঞ্চলে বর্জ্যের ভাগাড়

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) দৈনিক ৯৮৫ টন গৃহস্থালি বর্জ্য ফেলছে সিঅ্যান্ডবি মোড় থেকে কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকায়। ফলে, প্রায় ৫০ হাজার জনবহুল অধ্যুষিত এলাকাটি পরিণত হচ্ছে আবর্জনার ভাগাড়ে। চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন স্থানীয়রা। হচ্ছে জটিল রোগ। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।  স্থানীয়দের অভিযোগ, এক বছর আগে অস্থায়ী ভিত্তিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কথা বলেছিল চসিক। কিন্তু সেই এক বছর এখনো শেষ হচ্ছে না। দুর্গন্ধের কবলে পড়েছে স্থানীয়রা। সঙ্গে আছেন কালুরঘাট শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকরা। প্রতিনিয়ত দেখা দিচ্ছে নানা রোগ। দুর্গন্ধের কারণে গত এক বছর ধরে এলাকা থেকে চলে যাচ্ছে ভাড়াটিয়া। ভাড়াটিয়াশূন্য পড়ে আছে ভবন। আবর্জনা থেকে ময়লাপানি চুইয়ে দূষিত হচ্ছে আশপাশের পুকুর। ক্ষতি হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ, গাছপালা। বৃষ্টিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে বর্জ্য। ফলে দ্বিগুণ হয় দুর্ভোগ।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদফতর চসিককে চিঠি দিলেও সমাধান মিলেনি। বর্জ্যের ভাগাড়টির তিন দিকে আছে নাথ পাড়া, মধ্যম বড়ুয়া পাড়া, হারিসন মাঝি পাড়া, আফজল মাঝি পাড়া ও ছালেহ আহমদ চৌধুরী পাড়া। পূর্ব-দক্ষিণ পাশে কালুরঘাট বিসিক শিল্পনগরী। এখানে আছে ৫০টি পোশাক কারখানাসহ ১৫৮টি কারখানা। এসব কারখানায় কর্মরত লক্ষাধিক শ্রমিক।  চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী শফিউল আলম বলেন, শিগগিরই ডাম্পিং স্টেশনটি সরিয়ে নগরীর বায়েজিদের আরেফিন নগরে নিয়ে যাওয়া হবে। ইতিমধ্যে সেখানে নতুন ডাম্পিং সাইট তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া আমরা সেখানে আবর্জনা ফেলতে নিষেধ করেছি। তবে জায়গা না থাকায় সাময়িকভাবে বর্জ্য ফেলতে হচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক বলেন, ভাগাড়টি করতে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি নেয়নি চসিক। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, সাধারণত জনবসতি থেকে অন্তত দেড় কিলোমিটার দূরে ডাম্পিং সাইট করতে হয়। কিন্তু জনবহুল স্থানে বর্জ্যের ভাগাড়ের কারণে তৈরি হতে পারে স্বাস্থ্যগত দুর্যোগ। তা ছাড়া বিকলাঙ্গ সন্তান জন্ম, চর্মসহ নানা ধরনের সংক্রমণ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। দেখা দিতে পারে ফুসফুস, লিভার ও চোখের সমস্যা। বর্জ্যের বিষাক্ত গ্যাস মানুষের দেহে প্রবেশ করলে হার্ট, ফুসফুস, ক্যান্সার ও যকৃৎ আক্রান্ত হতে পারে।

সর্বশেষ খবর