বুধবার, ২০ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

গাজীপুরে জব্দ গাড়ির বেহাল দশা

আফজাল, টঙ্গী

গাজীপুরে জব্দ গাড়ির বেহাল দশা

মামলার আলামত হিসেবে শত শত গাড়ি টঙ্গী থানাসহ গাজীপুরের সবকটি থানা ক্যাম্পাসে পড়ে থাকতে থাকতে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। দেখার কেউ নেই

গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী ও জয়দেবপুরসহ বিভিন্ন থানায় পুলিশের হাতে জব্দকৃত মূল্যবান শত শত গাড়ি এখন মাটি আর লতা পাতায় খাচ্ছে। অবহেলা-অযত্নে খোলা আকাশের নিচে থাকা এসব গাড়ি পরিণত হচ্ছে স্ক্র্যাপে। রোদ-বৃষ্টিতে মরচে ধরে এমনকি গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি হওয়ার কারণে সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন মডেলের মূল্যবান গাড়ি বছরের পর বছর ধরে মামলার আলমত হিসেবে থানা চত্বরে পড়ে আছে। প্রতিটি থানা প্রাঙ্গণে এসব গাড়ির স্তূপ থাকায় পুলিশ কর্মকর্তারাও রয়েছে বিপাকে। গাড়িগুলো নষ্ট হওয়ার পূর্বে সরকারি কাজে ব্যবহার কিংবা সরকার নিলামের ব্যবস্থা করলে  রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বিপুল অর্থ জমা হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা যায়, ছিনতাই, ডাকাতি, দুর্ঘটনাকবলিত, কাগজপত্রহীন কিংবা মাদকবাহীসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহূত গাড়ি পুলিশ আটক করে। পরে এসব জব্দকৃত গাড়ি মামলার আলামত হিসেবে থানা চত্বরে পড়ে থাকে। মামলা নিষ্পত্তি হতে বছরের পর বছর সময় লাগার কারণে যন্ত্রাংশ চুরি কিংবা বিভিন্নভাবে গাড়ির যন্ত্রাংশ বিকল হয়ে ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। গাড়িগুলো থানায় পড়ে থাকার কারণ হলো মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া। আবার অনেক গাড়ির মালিক খুঁজে পাওয়া যায় না। দিন দিন জব্দকৃত গাড়ির সংখ্যা বেড়ে পুলিশের জন্য যেমন বোঝা হয়ে উঠেছে তেমনি পুলিশের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে মনে করেন থানার পুলিশ কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে টঙ্গী মডেল থানার ওসি ফিরোজ তালুকদার বলেন, জব্দকরা গাড়িগুলো আদালতের মাধ্যমে পুলিশি কাজে ব্যবহার কিংবা নিলামে বিক্রি করে দিলে সরকারি কোষাগারে টাকা জমা হতো। তিনি আরও বলেন, আটক হওয়া এসব গাড়ি থানা ক্যাম্পাসে পড়ে থাকতে থাকতে ইঞ্জিনই শুধু নষ্ট হচ্ছে না, গাড়িগুলো ক্রমেই মিশে যাচ্ছে মাটির সঙ্গে। অনেক গাড়ি রয়েছে যা মালিকানার কোনো দাবিদার নেই। এসব গাড়ি মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগ পর্যন্ত পুলিশি কাজে ব্যবহার করলে অনেকটাই সচল থাকত।  পরিত্যক্ত গাড়ি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মাদক বহনের দায়ে গত বছরের ১৯ অক্টোবর টঙ্গী থানার এএসআই লুত্ফর মধুমিতা এলাকায় প্রাইভেটকার ভর্তি বিদেশি বিয়ারসহ গাড়ি চালক মাহতাবকে আটক করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টঙ্গী থানায় একটি মামলা করেন। পরে ওই চালক কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে বেরিয়ে আসে। কিন্তু মামলার আলামত হিসেবে আটক গাড়িটির জামিন না দেওয়ায় আজও পড়ে আছে থানা চত্বরে। গাজীপুর জজকোর্টের এক আইনজীবী সরকার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান রিপন বলেন, মালিকবিহীন গাড়ি কিংবা গাড়ির কোনো কাগজপত্র নেই। এসব গাড়ি থানায় থানায় ফেলে না রেখে নিলাম দিলে সরকার অনেকটাই আর্থিক লাভবান হবে।

সর্বশেষ খবর