মঙ্গলবার, ২৬ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

চসিকের ১৯টি ওয়ার্ড কার্যালয়ই জীর্ণশীর্ণ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

চসিকের ১৯টি ওয়ার্ড কার্যালয়ই জীর্ণশীর্ণ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ৪১টি ওয়ার্ড কার্যালয়ের মধ্যে ১৯টিই জীর্ণশীর্ণ। কোনোটির কক্ষে জমে থাকে পানি, কোথাও আছে পরিত্যক্ত কক্ষ। কোনোটির দেয়ালে ধরেছে ফাটল, কোনোটির খসে পড়েছে পলেস্তারা। কোথাও ইট-সিমেন্ট ভেদ করে দেখা যাচ্ছে লোহার রড, কোথাও ভাঙছে ছাদের কার্নিশ। কোনোটির শৌচাগারের দরজা ভাঙা। এভাবে জীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলে নাগরিক সেবা কার্যক্রম। আবার কোনো কোনো ওয়ার্ডের কার্যক্রম চলছে ভাড়া বাসায়। অথচ এসব ওয়ার্ড কার্যালয়ই নগরবাসীর দৈনন্দিন জীবনের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজের কেন্দ্রবিন্দু। এখান থেকেই নাগরিকদের নিতে হয় জন্মনিবন্ধন সনদ, জাতীয়তা সনদ, ওয়ারিশ সনদ, মৃত্যু সনদসহ নানা প্রয়োজনীয় সনদ। কিন্তু এগুলোই এখন জরাজীর্ণ ভবনে পরিণত হয়েছে। তবে চসিকের নগর অবকাঠামো, নির্মাণ ও সংরক্ষণবিষয়ক স্থায়ী কমিটিসহ চারটি কমিটির যৌথসভায় নগরীর ৪১টি ওয়ার্ড কার্যালয়কে অভিন্ন ডিজাইনে তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৯ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়ার কাউন্সিলর এ কে এম জাফরুল ইসলাম বলেন, আমার আগে ১৭ বছর ও বর্তমানে আমি ৬ বছর কাউন্সিলর থাকলেও এখনো পর্যন্ত ভাড়া বাসায় ওয়ার্ড কার্যালয়ের কাজ চলছে। এখানে একজন সচিব ও দুজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বসার জায়গাও সংকুলান হয় না। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ওয়ার্ড কার্যালয়গুলো দীর্ঘ দিনের পুরনো। এগুলো ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে। তবে সব ভবন একসঙ্গে ভাঙা সম্ভব হবে না। প্রতি বছর একটি করে ভেঙে চসিকের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হবে। এ ব্যাপারে দরকার হলে সরকারের কাছেও অর্থ চাওয়া হবে। চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ওয়ার্ড কার্যালয়গুলোর কোনটির কী অবস্থা তার একটি প্রতিবেদন ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো পুনর্নির্মাণ করার সুপারিশ করা হয়। প্রতিবেদন মতে, ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ড কার্যালয়গুলো হলো— দক্ষিণ পাহাড়তলী, জালালাবাদ, পাঁচলাইশ, মোহরা, পশ্চিম ষোলশহর, উত্তর পাহাড়তলী, উত্তর কাট্টলি, সরাইপাড়া, লালখান বাজার, পশ্চিম বাকলিয়া, দক্ষিণ বাকলিয়া, উত্তর পাঠানটুলী, উত্তর হালিশহর, দক্ষিণ আগ্রাবাদ, পাঠানটুলী, পশ্চিম মাদারবাড়ি, পূর্ব মাদারবাড়ি, আন্দরকিল্লা ও উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়। তা ছাড়া পুরনো হয়ে পড়েছে পাথরঘাটা, বকশিরহাট, উত্তর পতেঙ্গা ও দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড কার্যালয়ের ভবনগুলো। জানা যায়, প্রকৌশল বিভাগ ওয়ার্ড কার্যালয়গুলোর বর্তমান অবস্থা নিয়ে একটি প্রাথমিক প্রতিবেদন তৈরি করেছে। তবে ভবনগুলোর অবস্থা জানতে আরও ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই করা হবে। এ জন্য একটি বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান দিয়ে জরিপ চালানো হচ্ছে। জরিপের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ভবনগুলোর ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর