মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

দর্শনার্থী হারাচ্ছে রাজেশপুর ইকো পার্ক

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

দর্শনার্থী হারাচ্ছে রাজেশপুর ইকো পার্ক

প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা শালবনে ঘেরা কুমিল্লার রাজেশপুর ইকো পার্ক। পার্কে ঢুকতেই পর্যটককে অভিবাদন জানায় সবুজ শাল আর জারুলের বাগান। শোনা যাবে পাখির কিচির-মিচির শব্দ। নির্জনতার খোঁজে এবং সবুজের মাঝে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নিতে দর্শনার্থীরা এখানে ভিড় জমাতেন। কিন্তু নানা সমস্যায় এখানে দর্শনার্থী কমে গেছে। দর্শনার্থী কমে যাওয়ায় এখন কেউ পার্কটি লিজ নিতে চায় না। প্রথম দিকে বছরে ৪ লাখ টাকায় লিজ হলেও এখন তা ২ লাখে দাঁড়িয়েছে।

কুমিল্লা মহানগরীর ১৬ কিলোমিটার দক্ষিণে রাজেশপুর ইকো পার্ক ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়কের সদর দক্ষিণ উপজেলার লালবাগ থেকে ২ কিলোমিটার ভেতরে। এ পার্কে স্থাপন করা বিভিন্ন বন্য প্রাণীর মডেল, স্লিপার, দোলনা। বসার জন্য হেলান চেয়ার ভেঙে আছে দীর্ঘদিন ধরে। পিকনিক স্পটগুলোতে পানির ব্যবস্থা নেই। সীমানা প্রাচীর না থাকায় দর্শনার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। দর্শনার্থী কমে যাওয়ায় পার্কের গেটের দোকানগুলোও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

সাধারণভাবে এটি একটি শাল গাছের বন হলেও বর্তমানে প্রায় ৩০৬ একর শালবনের পাশাপাশি ৮৭ একর উডলট বাগান, ৭৩ একর কৃষি বন বাগান, ২৬০ একর বেত বাগান, তেলসুর. গর্জন, কাজু বাদাম, লোহা কাঠ, শোভা বর্ধনকারী গাছ, বাঁশ ঝাড়, কদম, জারুলের শোভা এখানে পর্যটকদের মোহিত করে। রাজেশপুর ইকো পার্কের উত্তর ও পূর্বে রয়েছে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য। প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত রাজেশপুরের এ বনাঞ্চলের গহিন অরণ্যে রয়েছে ব্যাপক প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য।

স্থানীয় জগপুর গ্রামের মো. সোলায়মান ও পলাশ চৌধুরী জানান, প্রাণীর মডেলগুলো ভেঙে আছে। সীমানা প্রাচীর নেই। নিরাপত্তার অভাবে এখানে মানুষ আসতে চায় না। পার্ক গেটের ব্যবসায়ী আহসান উল্লাহ ও ওমর ফারুক জানান, এখানে আগে অনেকগুলো দোকান ছিল। দর্শনার্থী কমে যাওয়ায় ব্যবসা কমে গেছে। কয়েকটি দোকান বন্ধ, অন্যগুলোও বন্ধের পথে। এ এলাকার এমপি পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দৃষ্টি দিলে পার্কটির উন্নয়ন হতো। 

রাজেশপুর ইকো পার্কের ঠিকাদার এম এ আউয়াল জানান, এক বছরে ২ লাখ টাকায় লিজ নিয়েছেন। খরচ মিলিয়ে তা ৪ লাখে দাঁড়াবে। টিকিট বিক্রি করে এ টাকা উঠাতেও কষ্ট হবে। এখানে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং নিরাপত্তা বাড়াতে হবে।

কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, আরও কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হলে রাজেশপুর ইকো পার্ক দেশের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে।

আগামী বছর একটি প্রকল্পের মাধ্যমে সংস্কার কাজ, ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ ও পানির ব্যবস্থা করা হবে।

সর্বশেষ খবর