গাজীপুরে অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয় এখন আবাসিক হোটেল। মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা এসব আবাসিক হোটেল অপরাধীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। অপরাধীরা ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার বিনিময়ে হোটেলের একটি রুম ভাড়া নিয়ে মাদক সেবন, মাদক বেচাকেনা, মদ্যপান এবং হোটেলে আশ্রয় নিয়ে এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি কাজে অংশ নেন। এমনকি অসামাজিক কার্যকলাপসহ নানা অপরাধের ঘটনা ঘটিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে তারা। অসাধু হোটেল মালিকরা পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দেদার হোটেল ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যেসব হোটেল জড়িত তা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। এলাকাবাসী ও সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, টঙ্গীবাজার এলাকায় কাজী মার্কেটে হোটেল সুন্দববন, হোটেল বন্ধু, হোটেল মুনস্টার, খান সাহেব মাকের্টে হোটেল পূর্ণিমা, হোটেল টঙ্গী, জলিল খান মাকের্টে হোটেল অনামিকা, হোটেল সানমুন, টঙ্গী বাজার ইসলামিয়া মার্কেটে হোটেল হলিডে ইন, হোটেল চ্যানেল, চেরাগআলী নিউ গোল্ডেন, টঙ্গী রেলস্টেশন এলাকায় সজীব হোটেলসহ আরও ৫/৬টি, আউচপাড়া এলাকায় আবাসিক হোটেল ডন, চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় রাজমণি, ঈশা-খাঁ, হোতাপাড়া এলাকায় রোজ বেলী, বৈশাখী, এশিয়া, দক্ষিণ বাংলা এলাকায় রয়েল, রওশন সড়কে শাপলা, নগরপাড়া এলাকায় রাজমণি, বিলাস, ভোগড়া বাইপাস সড়কে পালকি, রংধনুসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অর্ধ-শতাধিক আবাসিক হোটেলে অবাধে অপরাধমূলক কার্যক্রম চলছে। স্থানীয় বাসিন্দা মালেক ও শাহ আলম বলেন, হোটেল ব্যবসার নামে কতিপয় ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবৎ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অসামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের দিয়ে রাস্তার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে ভিজিটিং কার্ড বিতরণ করে খদ্দের সংগ্রহ করে হোটেল কর্তৃপক্ষ। এসব ভিজিটিং কার্ড স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের হাতেও দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন মালিকের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, সবাইকে ম্যানেজ করেই হোটেল ব্যবসা চালানো হয়। টঙ্গী ৫৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, প্রতিটি হোটেলে অবৈধ কার্যক্রম চলছে। হোটেল মালিকরা এগুলো বন্ধ না করলে আমরা গাজীপুর সিটি মেয়রের সঙ্গে কথা বলে উচ্ছেদের ব্যবস্থা করব। জয়দেবপুর থানার ওসি রেজাউল করিম রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ভোগড়া বাইপাস এলাকার ফাঁড়ি ইনচার্জ জাকিরের সঙ্গে কথা বলুন। জাকির বলেন, বাইপাস সড়কে মাত্র দুইটি আবাসিক হোটেল ছিল তা বর্তমানে বন্ধ আছে।