মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

গাজীপুরে অবৈধ গ্যাস লাইনের ছড়াছড়ি

আফজাল, টঙ্গী

গাজীপুরে অবৈধ গ্যাস লাইনের ছড়াছড়ি

গাজীপুরে হাজার হাজার অবৈধ গ্যাস লাইনের ছড়াছড়ি। তিতাস গ্যাসের কিছু অসাধু কর্মীর যোগসাজশে রাতের আঁধারে এসব গ্যাস লাইন স্থাপন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। ইতিমধ্যে গ্যাস কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কয়েক হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। এমনকি অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারের কারণে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ শত শত গ্রাহকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করে। এতে গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন গ্রাহকরা। এ ঘটনায় ৬ অক্টোবর গাজীপুর উন্নয়ন কমিটির উদ্যোগে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বৈধ করার দাবিতে ডিসি অফিসের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। মানববন্ধনে গাজীপুর ডিবি পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জে প্রায় ২০-২৫ জন আহত হয়। এলাকা ঘুরে জানা গেছে, গ্যাসের অবৈধ সংযোগকে বৈধ করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঠিকাদাররা গ্রাহক প্রতি ৪০-৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে গ্যাস সংযোগ দেয়। এর মধ্যে গাজীপুরের বড়বাড়ী, গাছা, বোর্ড বাজার, বাসন, ছয়দানা মালেকের বাড়ি, গাজীপুর সদর, কালিয়াকৈর, সালনা, শ্রীপুর, পুবাইলের হায়দরাবাদ, মীরের বাজার, তালুটিয়া, মাজুখান, হারবাইদ ও টঙ্গীর ভাদাম, তিলারগাতী, দেওড়া, আউচপাড়া, সাতাইশ, গাজীপুরা, এরশাদনগর, দত্তপাড়া, মরকুন, শিলমুন, আরিচপুরসহ আশপাশে হাজার হাজার অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও কতিপয় কারখানার মালিক আবাসিক লাইনগুলো ওয়াশিং কারখানায় বাণিজ্যিক হিসেবে ব্যবহার করছেন। এতে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছেন। অবৈধ সংযোগের কারণে বৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীরা কল-কারখানা ও বাসা বাড়িতে গ্যাস সংকটে ভুগছেন।

এ বিষয়ে মুদাফা এলাকার বেশ কয়েকজন গ্রাহক জানান, ঠিকাদারের মাধ্যমে ৪০-৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে আমরা গ্যাস সংযোগ নেই। এখন গ্যাস কর্তৃপক্ষ আমাদের সংযোগ কেটে দেওয়ায় আমরা গ্যাসের অভাবে রান্নাবান্না করতে না পেরে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে অবৈধ সংযোগগুলো বৈধকরণের দাবি জানান তারা। এদিকে বিসিক নর্দান গ্রুপের এক কর্মকর্তা ও শিকদার গ্রুপের জিএম সামিউল ইসলাম বলেন, গ্যাস লাইনে চাপ কম থাকায় আমরা কারখানায় পণ্য উৎপাদন করতে পারছি না।

এতে বিদেশি ক্রেতাদের নির্ধারিত সময়ে মাল সরবরাহ করতে না পারায় লাখ লাখ টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে তিতাস গ্যাস টঙ্গী জোনের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী অজিত চন্দ দেব বলেন, টঙ্গী জোনে প্রায় ২০ হাজার অবৈধ সংযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা টঙ্গীর মুদাফা ভোলারটেক, কান্নারটেক, দেওড়া চণ্ডীতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় চার হাজার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। এ ছাড়াও অবৈধভাবে গ্যাস ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে টঙ্গী থানায় মামলা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিতাস গ্যাস গাজীপুর সদর জোনের ব্যবস্থাপক মো. সাব্বির আহমেদ তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে অবৈধ গ্যাস সংযোগের কথা অস্বীকার করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রাতের আঁধারে যারা অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়েছে তারা লাইসেন্সধারী ঠিকাদার নয়। আমরা ইতিমধ্যে অভিযান চালিয়ে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি।

সর্বশেষ খবর