মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

হাতিরঝিলের পানিতে পচা আবর্জনা

মানিক মুনতাসির

হাতিরঝিলের পানিতে পচা আবর্জনা

দৃষ্টিদন্দন হাতিরঝিলের পরিবেশ এখন বিপর্যয়ের মুখে। ঝিলের পানিতে ভাসছে ময়লা পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত আবর্জনা। দশনার্থী ও পথচারীরা নাকে রুমাল চেপে ঝিলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। শহরের কোলাহলের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে গড়ে ওঠা ঢাকাবাসীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হাতিরঝিলের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। গুলশান লেক, কারওয়ান বাজার ও বেগুনবাড়ী দিয়ে হাতিরঝিলের পানিতে প্রতিনিয়ত ময়লা-আবর্জনা ঢুকছে। দর্শনার্থী ও পথচারীরাও ঝিলের পানিতে ময়লা আবর্জনা ফেলে পানিকে দূষিত করছেন। দর্শনার্থীদের ফেলা কাগজের টুকরা, পলিথিন, খাবারের বক্স, থুথু, কফ ও অন্যান্য ময়লা-আবর্জনার কারণে দূষিত হচ্ছে ঝিলের পানি। অনেক দর্শনার্থী ঝিলের রাস্তার ও ব্রিজের পাশে মলত্যাগও করছেন, যা পুরো এলাকার পরিবেশকে দূষিত করছে। ঝিলের রাস্তার পাশে স্থাপিত ময়লা ফেলার বিন থাকলেও ময়লা-আবর্জনা পানিতেই ফেলছেন দর্শনার্থীরা।

হাতিরঝিল ঘুরে দেখা গেছে, চারদিকে শুধু ময়লা-আবর্জনার ছড়াছড়ি। পানির ময়লা পরিষ্কারের জন্য আধুনিক যন্ত্র বসানো হলেও তা শতভাগ চালু নেই। বরং এর পাশেই আগে উঠানো আবর্জনা জড়ো করে রাখা হয়েছে। ঝিলের কিনারা ঘেঁষেও অনেক স্থানে আবর্জনার স্তূপ দেখা গেছে। ঝিলের রাস্তার পাশে স্থাপিত ডাস্টবিনে ময়লা উপচে পড়ছে। প্রতিদিন ময়লা নেওয়া হয় না বলেই বিনগুলো উপচে পড়ছে। গত কয়েকদিন বৃষ্টি না হওয়ায় রামপুরা, গুলশান, মগবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি পয়েন্টে ঝিলের পানি নিচে নেমে গেছে। ঝিলের পানি বহমানও নয়। ফলে পানিতে ভেসে থাকা ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশে। কোন কোন এলাকার পানি কালো রং ধারণ করেছে। আবার কোন কোন এলাকার পানি ধূসর ও সবুজ রং ধারণ করেছে। ফলে হাতিরঝিল সংলগ্ন এলাকার পরিবেশও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঝিলের আশপাশের এলাকার পানি ড্রেন দিয়ে ঝিলের পানিতে পড়ে। বৃষ্টি হলে পানি বেড়ে যায়। এ পানির সাথে ময়লা-আবর্জনা চলে আসে। সেসব ময়লা পচে এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। গোড়ান থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা আসাদুল হক জানান, একটু নির্মল প্রকৃতি দেখতে এবং সময় কাটাতে পরিবার নিয়ে বেড়াতে এলেও দুর্গন্ধের জন্য অস্বস্তিতে পড়েছেন। বাচ্চাদের নিয়ে রীতিমতো নাকে রুমাল চেপে ধরে বেড়াতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। সোনারগাঁও হোটেলের পেছনে স্লুইস গেট দিয়ে হাতিরঝিলে স্রোতের বেগে ঢুকে পড়ছে পয়ঃবর্জ্য মিশ্রিত পানি। এতে হাতিরঝিলের পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। লেকের এ অংশের আশপাশের ওয়াকওয়েতে (হাঁটার পথ) নাকে রুমাল চেপে চলতে হয় দর্শনার্থীদের। এ ছাড়া আশপাশের বাসিন্দাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। বিজিএমইএ ভবনের পিছন মধুবাগ-গামী অংশের পানিতে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ। এদিকে রামপুরা ব্রিজ এলাকায়ও প্রচণ্ড দুর্গন্ধ নাকে রুমাল চেপে ঘুরতে হয় দর্শনার্থীদের। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাতিঝিলের প্রকল্প পরিচালক জামাল আখতার ভূঁইয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হাতিরঝিলের কাজ শেষ হতে আরও কিছু সময় লাগবে। আর শোধনাগার নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ খবর