শিরোনাম
মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কামরাঙ্গীরচরে বুড়িগঙ্গার শাখা নদী দখল

বাদল নূর

কামরাঙ্গীরচরে বুড়িগঙ্গার শাখা নদী দখল

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে নদীর দুই তীর দখল করে অসংখ্য দোকান ও বস্তিঘর নির্মাণ করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী এবং সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা। এসব দোকান ও বস্তিঘর ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। ভুয়া দলিলের মাধ্যমে দখলি দোকান ও বস্তির মালিকানা দাবি করা ছাড়াও জমি বিক্রি করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বিক্রীত জমিতে ইটের বাড়ি-ঘর নির্মাণ করেও বসতি স্থাপন করা হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সদরঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে লোহার পুল এলাকা থেকে শুরু করে রায়েরবাজার শিকদার মেডিকেল পর্যন্ত  নদীর দুই তীরে মাটি ফেলে নদীর দুই-তৃতীয়াংশ ভরাট করে অসংখ্য দোকান ও বস্তিঘর এবং কারখানা গড়ে উঠেছে। অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) বিভিন্ন সময় কামরাঙ্গীরচরে অভিযান চালিয়ে দোকান ও বস্তিঘর ভেঙে দেয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই পুরনো কায়দায় ফের দখল করা হয় নদীর দুই তীর। দখলদাররা রাতারাতি দোকান ও বস্তিঘর নির্মাণ করে সেখানে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেন। পুনরায় শুরু হয় ভাড়া দেওয়ার প্রক্রিয়া। স্থানীয় বাসিন্দা মো. আতিয়ার বলেন, নদী দখল প্রতিরোধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ না থাকায় দিনে দিনে কামরাঙ্গীরচরের এই নদীটি দখল হয়ে যাচ্ছে। সরকার নদী দখল বন্ধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলেও জানান তিনি। দখলকারীরা এবং বিআইডব্লিউটিএর কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে নদী দখলের কাজ চলে। সূত্র জানায়, স্থানীয়রা প্রথমে থাকার বস্তিঘর অথবা দোকান বানিয়ে নদী দখল প্রক্রিয়া শুরু করে। পরে সেখানে মাটি ফেলে স্থায়ীভাবে দোকান ও বাড়ি নির্মাণ করছে। এর পরে তা বিভিন্নজনের কাছে ভাড়া দিচ্ছে। এসব দখলি জমিতে দোকানের পজিশনও দ্রুত বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। কামরাঙ্গীরচর বেড়িবাঁধে হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী জানান, স্থানীয় জাবেদ মিয়ার কাছ থেকে নগদ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মাসে দুই হাজার টাকা ভাড়ার শর্তে এই দোকানটি ভাড়া নেন। তিনি বলেন, গত এক বছরে উচ্ছেদ অভিযানে দুইবার আমার দোকানটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। ফের নিজের টাকায় দোকান নির্মাণ করতে হয়েছে। একই কথা বলেছেন শরীয়তপুরের সোহরাব হোসেন। বেড়িবাঁধে একটি দোকানে ফল বিক্রি করেন তিনি। দোকান মালিককে ভাড়া দেন মাসে ১৫০০ টাকা। এ ব্যাপারে কামরাঙ্গীরচরের বাসিন্দা ফিরোজ মিয়া জানান, দখলকারীদের বেশিরভাগ লোক স্থানীয় এবং সরকারি দলের। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এর সঙ্গে জড়িত। এদিকে কামরাঙ্গীরচরে নদী ভরাট করে কয়েকটি বড় কারখানা গড়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা উপর মহলকে  মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে নদী দখল করে সেখানে কারখানা নির্মাণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআইডব্লিউটিএ এসব অভিযোগ অস্বীকার করলেও দখল রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।

সর্বশেষ খবর