মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বেহাল রাজদেবী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

বেহাল রাজদেবী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র

পুরো হাসপাতালে রোগী মাত্র একজন

জনবল সংকট, চিকিৎসক স্বল্পতা, দালালদের উৎপাত, অপরিচ্ছন্নতা এবং অ্যাম্বুলেন্স সংকটসহ নানা সমস্যায় খুঁড়িয়ে চলছে নগরীর রাজদেবী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, স্থানীয়ভাবে শিশুমঙ্গল নামে এটি পরিচিত। কুমিল্লার নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের গর্ভবতী মহিলাদের চিকিৎসা সেবা দিতে ১০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটির যাত্রা। কিন্তু হাসপাতালের নিজস্ব কর্মী ও আয়াদের দালালি, কর্মরত চিকিৎসকদের অনিয়মে হাসপাতালের কার্যক্রম বেহাল।

ফাতেমা বেগম দীর্ঘ ৩০ বছর রাজদেবী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কর্মরত আছেন। নগরীর টমছম ব্রিজ এলাকায় মাতৃছায়া নামে একটি ক্লিনিকের মালিক তিনি। শিশুমঙ্গলে প্রসব সেবা নিতে আসা রোগীদের তিনি বিভিন্ন কৌশলে তার মাতৃছায়া ক্লিনিকে নিয়ে যান। আরও অভিযোগ ওঠে এফডব্লিউএ মাঠকর্মী শিল্পী আক্তার ও আয়া হোসনা বেগম, শিশুমঙ্গলে প্রসব সেবা নিতে আসা প্রসূতিকে অন্যত্র ক্লিনিকে উন্নত চিকিৎসা  সেবা নেয়ার পরামর্শ দেন। তারপর রোগিণীর সঙ্গে থাকা লোকজনদের কৌশলে এফডব্লিউভি ফাতেমা বেগমের মাতৃছায়া, সিডিপ্যাথ হাসপাতালসহ তাদের নির্ধারিত হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নিয়ে যায় প্রসব সেবা দিতে। বেডগুলো স্যাঁতসেঁতে, দীর্ঘদিন না ধোয়ায় বিছানার চাদরগুলো ময়লা হয়ে গেছে, বাথরুম- টয়লেটের অব্যবস্থাপনা, আঙ্গিনাতে ময়লা জমে থাকায় মশা-মাছির উপদ্রব রয়েছে। পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ না দেওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। রোগী পরিবহনের জন্য ২০ বছর পূর্বের কেনা একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি দিয়ে রোগী পরিবহনের কোনো দৃষ্টান্ত নেই। দীর্ঘদিন মেরামত না করায় সেটি অকেজো হয়ে পড়েছে। কুমিল্লা সদর উপজেলার গোমতী নদীর উত্তর পাড় থেকে আসা রোগীর মা মিনা আক্তার জানান, হাসপাতালের এই পরিবেশের কারণে অনেক সময় দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। শুধু আর্থিক সঙ্কটের কারণে বাধ্য হয়ে এখানে আসতে হয়। এ বিষয়ে এফডব্লিউভি (পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা) ফাতেমা বেগমের কাছে তার ক্লিনিকে রোগী স্থানান্তরের বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কল কেটে দেন। হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. শাহানাজ আরেফিন বলেন, এই হাসপাতালে প্রচুর রোগী আসে। তবে কেন অন্যত্র চলে যায় তা রহস্যজনক। শুনেছি এই হাসপাতালের এফডব্লিউভি পদে দায়িত্বে থাকা ফাতেমা বেগম, এফডব্লিউএ শিল্পী আক্তার ও আয়া হোসনা বেগম রোগী স্থানান্তরের সঙ্গে জড়িত। হাসপাতালে সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্লিনার বয় ও আয়া নেই। তাই হাসপাতালের বাথরুম ও টয়লেটগুলো অপরিচ্ছন্ন থাকে। আমরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৩ জন ক্লিনার ও ৩ জন আয়া অস্থায়ীভাবে রেখেছি। কুমিল্লা পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালক ডা. মো. মাহবুবুল করিম বলেন, মাতৃছায়ার মালিক এফডব্লিউভি ফাতেমা বেগমের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। হাসপাতালের বিভিন্ন সমস্যা ও সংকট নিরসনের জন্য আমরা কাজ করছি।

সর্বশেষ খবর