মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সংকটে ধুঁকছে রামেক হাসপাতাল

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

সংকটে ধুঁকছে রামেক হাসপাতাল

জনবল সংকটে ধুঁকছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল। শয্যা ও ওয়ার্ড সংখ্যা বাড়ানো হলেও বাড়েনি জনবল। ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ বেশি রোগীর চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। সেবার মান ধরে রাখা যাচ্ছে না। রোগীর স্বজনদের সঙ্গে শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে। হাসপাতালের শয্যা ৫৫০ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১২০০। ওয়ার্ড প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে বর্তমানে ৫৭টি। কিন্তু সেই অনুপাতে বাড়েনি জনবল। হাসপাতালে সরকার অনুমোদিত ১৭৬টি পদ শূন্য রয়েছে।

রামেক হাসপাতালে রয়েছে দুটি অপারেশন থিয়েটার, ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি), আইসিইউ, এইচবিইউ, রন্ধনশালা, ব্লাড ব্যাংক, এক্স-রে বিভাগ ও বহির্বিভাগ। এসব গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডে প্রতি শিফটে কর্মরত থাকেন এক থেকে দুজন কর্মী। বিশেষ করে অপারেশন থিয়েটারের মতো জায়গায় এমএলএসএস পদে দুজন করেও পাওয়া যায় না। ওয়ার্ড মাস্টার অফিসের হিসাব অনুযায়ী, প্রতিটি ওয়ার্ডে তারা প্রতি শিফটে একজনের বেশি লোক দিতে পারছেন না। কারণ, অনেকেই থাকেন ছুটিতে। জনবল সংকটে অতিরিক্ত রোগীর চাপে বেহাল দশা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। কাগজ-কলমে ১২০০ শয্যার হাসপাতাল হলেও সব সময় রোগী ভর্তি থাকে ১৮০০ থেকে ২ হাজার। রোগীর চাপ সামলাতে না পেরে ওয়ার্ডের কর্মচারীরা রোগীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কর্মচারীদের বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি লেগেই থাকে। রোগী অনুপাতে চিকিৎসক সংকট থাকায় নির্ভর করতে হয় শিক্ষানবিস চিকিৎসকদের ওপর।

অভিযোগ রয়েছে, অতিরিক্ত রোগীর চাপে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার সময় বিরক্তবোধ করেন। অনেক সময় তারা বিরক্ত হয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে বসে থাকেন। তবে গত বছর ১৫ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে ৬৯৬ জন সিনিয়র নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকের ঘাটতি এখন তারাই মেটাচ্ছেন। হাসপাতালে প্রফেসরদের নির্দেশনা মেনে ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেন এসব নার্স।

সম্প্রতি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ রোগী রয়েছে হাসপাতালে। বেশির ভাগ ওয়ার্ডেই বেডে জায়গা না পাওয়ায় রোগীরা হাসপাতালের মেঝেতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বেডের চেয়ে সব সময় দ্বিগুণ কখনো কখনো তিনগুণ রোগী থাকেন হাসপাতালে। বেড না পেয়ে অনেকে বারান্দার মেঝেতেও চিকিৎসা নেন।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএফএম রফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে যারা টেকনোলজিস্ট তাদের নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। বাকিদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দেয়। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। সংশোধনীর মাধ্যমে নতুন নিয়োগ বিধি প্রণয়নের পরই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হবে। তারপরও হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিতে তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর