মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

কসাইখানা একটি, তাও অস্বাস্থ্যকর

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

কসাইখানা একটি, তাও অস্বাস্থ্যকর

পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১১ অনুযায়ী কসাইখানার বাইরে এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া পশু জবাই করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু রংপুর নগরীতে এ আইন কসাইরা মানছেন না, মানছে না সিটি করপোরেশনও। সিটিতে কসাইখানা মাত্র একটি। সেখানেও পশু জবাইয়ের পরিবেশ নেই। একজন ভেটেরিনারি সার্জন আছেন, তিনিও কসাইখানায় নিয়মিত যান না। রোগাক্রান্ত পশু অবাধে জবাই হচ্ছে। জবাই করা পশুর মাংস স্বাস্থ্যসম্মত কিনা এ নিয়ে ভোক্তাদের সংশয় রয়েছে। স্বাস্থ্যসম্মত পশু জবাই করতে দুই যুগ আগে নগরীর মাহিগঞ্জ সাতমাথা এলাকায় একটি কসাইখানা তৈরি করা হয়। এরপর থেকে সেটি সংস্কার করা হয়নি। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই প্রতিদিন পশু জবাই হচ্ছে। পানির ব্যবস্থা নেই। জবাইয়ের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ নেওয়া হচ্ছে না। 

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে যত্রতত্র পশু জবাই বন্ধ করতে ‘পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১১’ রয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে অনূর্ধ্ব এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ন্যূনতম ৫ হাজার টাকা অথবা অনূর্ধ্ব ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক দণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। কিন্তু এটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের।

রসিকের ভেটেরিনারি সার্জন রবীন্দ্রনাথ রায় বলেন, কসাইখানাটি দূরে এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ হওয়ায় নগরীর অন্য এলাকার কসাইরা এখানে পশু নিয়ে আসেন না। প্রতিদিন ৫-৭টি গরু জবাই হয়। কসাইরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই যত্রতত্র পশু জবাই করে বাজারে মাংস বিক্রি করছেন। কসাইখানাটি সংস্কারের জন্য তিন মাস আগে মেয়রের কাছে আবেদন করা হলেও সংস্কার করা হয়নি। বসার ব্যবস্থা নেই। ফজরের নামাজের পরই পশু জবাই করা হয়। এত সকালে যাওয়া সম্ভব হয় না বলে আমি নিয়মিত কসাইখানায় যাই না। 

রংপুর মহানগর মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম কাদের আনসারী বলেন, নগরীতে প্রতিদিন ৩০০ গরু, ৪০০ থেকে ৫০০ ছাগল জবাই হয়। কসাইখানায় ৫টি গরু জবাই করে রাখার মতো জায়গা নেই। ফলে কসাইরা সেখানে পশু নিয়ে যান না। রসিকের স্বাস্থ্য শাখার প্রধান আবদুল কাইয়ুম বলেন, বাজারে বিক্রি করা মাংসের মান নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। জনবল কম, কসাইখানা একটি। যে কারণে কসাইরা তাদের ইচ্ছা মতো পশু জবাই করে মাংস বাজারে বিক্রি করছেন। কসাইখানাটি সংস্কার করার পাশাপাশি নতুন আরও চারটি কসাইখানা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।

সর্বশেষ খবর