মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

মিরপুরে একখণ্ড নীলক্ষেত

মাহবুব মমতাজী

মিরপুরে একখণ্ড নীলক্ষেত

বইয়ের বাজার হিসেবে নীলক্ষেতের খ্যাতি দেশজুড়ে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের পাঠকের বই মেলে নীলক্ষেতের বই বাজারে। বইয়ের সন্ধানে সেখানে ছুটে যান নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সেই বই বাজারের কিছু বিক্রেতা এখন বইয়ের নতুন ঠিকানা গড়েছেন মিরপুর ১০ নম্বরে। ফায়ার সার্ভিস ট্রেনিং কমপ্লেক্সের পূর্ব পাশের এ বাজারটিতে রয়েছে নীলক্ষেতের মতোই আমেজ। ক্রেতা সমাগমে প্রতিদিন জমে থাকে এলাকাটি। নীলক্ষেতের মতো অসংখ্য বইয়ের সংগ্রহ সেখানে না থাকলেও পাঠক ও শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম সেখানকার বিক্রেতারা। তারা বলেন, প্রয়োজনীয় সব ধরনের বই আছে এখানে। আর পাঠক চাইলে যে কোনো বই আমরা দিতে পারি।

সরেজমিন গিয়ে কথা হয় পাঠ্যবইয়ের খোঁজে আসা শ্রাবন্ত, ঝরা ও আশিকের সঙ্গে। তারা জানায়, আমাদের বাসা ও স্কুলের কাছে বইয়ের দোকানগুলো থাকায় অনেক সুবিধা হয়েছে। যখন প্রয়োজন তখনই আমরা এখানে চলে আসি। কিছু বই আছে যেগুলোর জন্য নীলক্ষেতে যেতে হতো। যানজটে পড়ে সারা দিন চলে যেত। এখন মিরপুরেই বই কিনি। এখানকার দোকানদাররা আমাদের চাহিদামতো বইয়ের ব্যবস্থা করে দেন। 

যেভাবে শুরু বাজারটি : তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নীলক্ষেতের ফুটপাথ থেকে বইয়ের বাজারটি উচ্ছেদ করা হয়। পরে পুলিশ তাদের পুনর্বাসনের জন্য রাজারবাগে বইয়ের দোকান বসানোর সুযোগ দিয়েছিল। সেখানে মন মতো ব্যবসা না হওয়ায় সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এলিফ্যান্ট রোডে বইয়ের হলিডে মার্কেট করার ব্যবস্থা করে পুলিশ। পরে দীর্ঘদিন বইয়ের দোকানে কাজের অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ মো. লিটন প্রথম মিরপুরে ছোট পরিসরে বইয়ের দোকান চালুর উদ্যোগ নেন। ফুটপাথের ওপর পাটি বিছিয়ে ১০০-১২০টি বই নিয়ে শুরু করেন দোকান। তারই হাত ধরে সেখানে এখন অন্তত ৩২টি বইয়ের দোকান বসেছে। মিরপুর এলাকায় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ প্রায় ৪ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বসবাস করছে প্রায় ২০ লাখ মানুষ। ৩৫ বছর ধরে বই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মো. কামাল হোসেন জানান, তিনি নীলক্ষেত ছেড়ে মিরপুরে দিয়েছেন তিনটি দোকান। তিনি বলেন, আমাদের এই দোকানগুলোতে ৮-১০ হাজার লোকের আনাগোনা থাকে। আর ছুটির দিনে দোকানগুলোতে অন্তত তিন, সাড়ে তিন লাখ টাকার মতো বিক্রি হয়।

কামাল আরও বলেন, আমাদের কাছে সব ধরনের বই পাওয়া যায়। তাত্ক্ষণিকভাবে কোনো বই না পাওয়া গেলে পরে তার ব্যবস্থা করা হয়। মিরপুর বই বাজারের প্রথম ব্যবসায়ী মো. লিটন বলেন, শুরুতে একা একা লাগলেও বিক্রি খারাপ হতো না। অনেকেই আমার কথায় রাজি হয়ে নীলক্ষেত ছেড়ে চলে আসে। এখানে বইয়ের ব্যবসাটা এখন ভালোই জমে উঠেছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর