মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

গাজীপুরে মাদকের বিষাক্ত ছোবল

আফজাল, টঙ্গী

গাজীপুরে মাদকের বিষাক্ত ছোবল

গাজীপুরে মাদকের ছোবলে বিষাক্ত যুব সমাজ। মাদকের ভয়াল থাবায় লণ্ডভণ্ড হচ্ছে নিম্ন ও উচ্চবিত্ত পরিবার। এক শ্রেণির মাদক ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে সমাজকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যুব সমাজ থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ এখন মাদকের ছোবলে বিষাক্ত। নেশার টাকা না পেয়ে ছিনতাই, ডাকাতি, খুন, হত্যা এমনকি পিতা-মাতাকেও মারধরসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আবার নেশাগ্রস্ত স্বামীর হাত থেকে রেহাই পেতে অনেক গৃহবধূ ক্ষোভে আত্মহত্যার পথও নিয়েছেন। তবে এলাকাবাসী বলছে, পুলিশ প্রশাসন ইচ্ছা করলেই এই মাদক ব্যবসা বন্ধ করতে পারে। এদিকে পুলিশ বলছে, মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে তারা। তবে কারা এই মাদক ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে এমন প্রশ্ন সর্বত্র। মহানগরীর টঙ্গী বড়দেওড়া, আউচপাড়া, খাঁ-পাড়া, মুদাফা, গাজীপুরা সাতাইশ, দত্তপাড়া, টঙ্গী হাজী মাজার বস্তি, আরিচপুর, মধুমিতা, মাছিমপুর, পাগাড়, মরকুন, সিলমুন, ব্যাংকের মাঠ, আমতলি, টিঅ্যান্ডটি, পুবাইল, মিরের বাজার, বোর্ড বাজার, জয়দেবপুর, সালনা, কাশেমপুর, কোনাবাড়ীসহ প্রতিটি এলাকায় গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিল ও বিভিন্ন মাদকের ছোবলে বিষাক্ত হচ্ছে যুব সমাজ। মাদক ব্যবসায়ীদের নেটওয়ার্ক শক্তিশালী হওয়ায় এলাকাবাসী ভয়ে মুখ খুলছেন না। গত ২৩ নভেম্বর গাজীপুরা খরতৈল এলাকায় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ফাটা মনিরের বিরুদ্ধে কথা বলায় এক মুদি ব্যবসায়ী আবুল কাশেমের হাত কেটে নেওয়া হয় এবং হানিফ ও মোরশেদ আলম নামে দুই যুবককে কুপিয়ে আহত করে ফাটা মনির ও তার লোকজন। এ ঘটনার পর খরতৈল সুখীনগর এলাকায় জননিরাপত্তায় লাঠি নিয়ে রাত জেগে পাহারা দেয় এলাকাবাসী। সুখীনগর এলাকার লোকজন বলেন, ওই এলাকার কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগিতায় ফাটা মনির অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে। এদিকে গত ডিসেম্বরে এরশাদ নগর এলাকায় নেশার টাকা না পেয়ে পিতাকে মারধর করার ঘটনায় ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন পিতা। টঙ্গী বাজার এলাকার বাসিন্দা মিতালী ফিলিং স্টেশনের মালিক এস এম রুহুল আমিন (মনি) সরকার বলেন, মাদকের ছোবলে যেভাবে যুব সমাজ বিষাক্ত হচ্ছে এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পুলিশের পাশাপাশি সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। গাজীপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আজিজুল হক বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। জেলার প্রতিটি স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সভা করে সচেতনতার মাধ্যমে যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। থানায় কিংবা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ে মামলা হয়। পরে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী জেল থেকে বেরিয়ে আবার শুরু করে। তাই আলোচনা ও সেমিনার করে সচেতনতার মাধ্যমেই প্রতিকার করা সম্ভব।

সর্বশেষ খবর