বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি এখন ধ্বংসস্তূপ

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি এখন ধ্বংসস্তূপ

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। উপ-মহাদেশের এক ত্যাগী পুরুষের নাম। তার কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলার বাড়িটি অযত্ন অবহেলায় এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। কুমিল্লার সাংস্কৃতিক সংগঠক এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি তার স্মৃতিরক্ষার্থে বাড়িটি সংস্কার, সংরক্ষণ করে জাদুঘরে রূপান্তর করা হোক। ১৯৪৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান গণপরিষদে কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত সর্বপ্রথম বাংলাকে ‘রাষ্ট্রভাষা’ করার দাবি উত্থাপন করেন। এতে তৎকালীন সরকারের রোষানলে পড়ে তিনি কারাবরণ করেন। পরে ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ গভীর রাতে নিজ বাড়ি  থেকে পাকিস্তানি মিলিটারি ছেলে দিলীপ দত্তসহ তাকে কুমিল্লা  সেনানিবাসে ধরে নিয়ে যায়।

সেখানে ৮৫ বছর বয়স্ক এই দেশপ্রেমিক রাজনীতিকের ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও তার মৃতদেহ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, এখানে তার উত্তারিকারী কেউ থাকেন না। বাড়ির এক সময়ের পাহারাদার সুজন মিয়ার স্ত্রী জাহানারা বেগম পরিবার নিয়ে বাড়িটিতে থাকেন। পুরো বাড়ি যেন ময়লা আবর্জনার ভাগাড়। মাঝে টিনশেডের একটি ঘর, তার পেছনে জঙ্গলে ঢাকা পড়েছে চার কক্ষের ভবনটি। সেখানে লতা পাতায় ঢেকে যাচ্ছে ধীরেন্দ্রনাথের শেষ স্মৃতিচিহ্ন। সেখানে কিছু কচু গাছও জন্মেছে। বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্টিতেই এখানে হাঁটু পানি জমে। ২০১০ সালে তৎকালীন তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী বাড়িটি পরিদর্শন করে এখানে স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু ৭ বছরেও এ ব্যাপারে কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতনি এনজিও ব্যক্তিত্ব অ্যারোমা দত্ত বলেন, ভাষা আন্দোলনের প্রথম বীজ বপনকারী ধীরেন্দনাথ দত্ত। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি মিলিটারিদের হাতে ছেলেসহ তার মৃত্যু হয়। যিনি দেশের জন্য এত কিছু করেছেন সরকার তার স্মৃতি রক্ষায় কিছু করতে পারে।

 ধীরেন্দনাথ দত্ত স্মৃতি সংসদের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নাজমুল বারী চৌধুরী বলেন, আন্দোলনের অগ্রনায়ক ধীরেন্দনাথ দত্তের স্মৃতিরক্ষার্থে যে কোনো মূল্যেই হোক শচীন দেবের বাড়ির মতো এটিও সংস্কার করে সংরক্ষণ করা  হোক। কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম বলেন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়িটি সংস্কার করে জাদুঘর করার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। তার পরিবারের সহযোগিতা পেলে ভালো হতো। কারণ অন্যত্র জমি কিনে জাদুঘর করা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার।

সর্বশেষ খবর