কুমিল্লা নগরীতে খেলার মাঠ না থাকায় শেষ ভরসা হিসেবে ঈদগাহকে বেছে নিয়েছে শিশু-কিশোররা। সকাল, বিকাল কিংবা শুক্রবারসহ ছুটির দিনে কেন্দ্রীয় ঈদগাহে গেলে বুঝা যাবে না- এটি ঈদগাহ না খেলার মাঠ। খেলোয়াড়দের অধিকাংশ শিক্ষার্থী। তারা খেলার মাঠ না পেয়ে এখানে আসে বলে জানান। ১০ বছর আগেও নগরীর বিভিন্ন স্থানে কিছু খোলা মাঠ ছিল। সেখানে শিশু-কিশোররা তাদের খেলার ক্ষুধা মিটাতে পারত। মাঠগুলো ফুরিয়ে যাওয়ায় তারা খেলার নির্মল আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নগরীর কয়েকটি স্কুলের মাঠ থাকলেও সেগুলোও বিকালে তালা দেওয়া থাকে। বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীরা পাড়ার গলিপথ কিংবা ঈদগাহে খেলে। ঈদগাহে শতাধিক ছেলে বিভিন্ন রকম খেলা খেলে। কেউ ফুটবল, কেউ ক্রিকেট, কেউ ভলিবল, সাইক্লিংসহ প্রভৃতি খেলায় তারা মেতে থাকে। একই পাকা মাঠে খেলতে গিয়ে তারা একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খায়, কেউ পড়ে গিয়ে আহত হয়। এতকিছুর পরেও তারা খেলতে পেরে আনন্দিত। ঈদগাহে কথা হয় কুমিল্লা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী অমিত মজুমদার, ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান ও জিসানের সঙ্গে। তারা বলেন, খেলতে পারলে মনে আনন্দ থাকে। আর অলস মস্তিষ্ক হচ্ছে শয়তানের কারখানা। যারা খেলতে পারে না, তারা মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। নগরীর স্কুল-কলেজের মাঠগুলো উন্মুক্ত করে দিলে শিক্ষার্থীদের জন্য উপকার হতো। ক্রীড়া সংগঠক বদরুল হুদা জেনু বলেন, নগরীর জিলা স্কুল, হোচ্ছামিয়া স্কুল ও ইউসুফ হাইস্কুলের মাঠগুলো বিকালে খেলার জন্য খুলে দেওয়া যেতে পারে। এতে শিক্ষার্থীরা নির্মল আনন্দের খোরাক পাবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন উদ্যোগ নিতে পারে। কুমিল্লা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আহসান রোমেন বলেন, নগরায়ণের কারণে কুমিল্লা নগরীর খেলার মাঠ কমে গেছে। তরুণ সমাজকে মাদক থেকে দূরে রাখতে খেলার বিকল্প নেই। নগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠ খেলার জন্য খুলে দেওয়া উচিত। আমরা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনের সঙ্গে কথা বলব।