মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

সীমা-সাক্কুর ‘কল্পনাবিলাসী’ ইশতেহার

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

সীমা-সাক্কুর ‘কল্পনাবিলাসী’ ইশতেহার

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ৩০ মার্চ। ভোটারদের মাঝে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। ২১ মার্চ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। ইশতেহারে তিনি ২৯ দফায় উন্নয়ন করবেন উল্লেখ করে যানজট, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ কুমিল্লাকে আধুনিক নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া তিনি নির্বাচিত হলে ১০০ বছরের পরিকল্পনাকে সামনে রেখে আগামী ৫ বছর কাজ করতে

চান বলেও উল্লেখ করেন। এদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ২৪ মার্চ তার নির্বাচনী ইশতেহারে তিনি পুনর্নির্বাচিত হলে জলাবদ্ধতা এবং যানজট নিরসন করবেন বলে জানান। তিনি পুরাতন গোমতী নদীতে ঢাকার হাতিরঝিলের আদলে একটি বিনোদন কেন্দ্র  গড়ারও কথা বলেন। পাশাপাশি তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয় করার কথা বলেন। ইশতেহারে তাদের অনেক প্রতিশ্রুতিকে বিশিষ্ট নাগরিকরা কল্পনাবিলাসী বলে মন্তব্য করেছেন।

তাদের বক্তব্য— জলাবদ্ধতা, যানজট ও অপরিকল্পিত নির্মাণ নগরীর প্রধান সমস্যা। তাই এগুলোকে আগে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। আঞ্জুম সুলতানা সীমা তার ইশতেহারে বলেন, সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। এগুলো হবে মানসম্মত এবং অলাভজনক। কর্মজীবী তরুণদের জন্য নৈশ মহাবিদ্যালয় চালু করা হবে। নগরীর পূর্বাঞ্চলে মেয়েদের জন্য একটি মানসম্মত মাধ্যমিক বিদ্যালয় করা হবে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভিক্টোরিয়া কলেজে পর্যাপ্ত আসন না থাকায় অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। এ জন্য সদর দক্ষিণ এলাকায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। সদর দক্ষিণে আন্তর্জাতিক মানের একটি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে। আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের সুবিধার্থে ৫ তারকা হোটেল স্থাপনে জমি বরাদ্দ করে সহযোগিতা করা হবে। কুমিল্লাতে একটি আইটি পার্ক স্থাপন করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ফ্রি ওয়াইফাই জোনের আওতায় আনা হবে। এদিকে সাবেক মেয়র সাক্কু ১১ পৃষ্ঠার ২৭ দফা ইশতেহারে বলেন, আগামী ৫ বছরে বিদ্যমান স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের পাশাপাশি নতুন করে সদর দক্ষিণে কোটবাড়ীকে কেন্দ্র করে একটি শিক্ষা নগরী গড়ে তোলা হবে। এ এলাকায় নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরাণীর নামে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে। লালমাই ও ময়নামতি পাহাড়ের আদিবাসী নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী ত্রিপুরাদের জন্য মাতৃভাষা কেন্দ্র  স্থাপন করা হবে। শচীন দেব বর্মণের নামে নগরে একটি সংগীত কলেজ স্থাপন করা হবে। পূর্বাঞ্চলে কুমিল্লা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। দক্ষিণাঞ্চলে মেয়েদের জন্য দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় করা হবে।

লালমাই, ময়নামতি এবং গোমতী নদীকে কেন্দ্র করে একটি মনোরম পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ইতিমধ্যে পুরাতন গোমতী নদীতে ঢাকার হাতিরঝিলের আদলে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়তে ২০০ কোটি টাকার প্রকল্প শিগগিরই বাস্তবায়িত হবে। দক্ষিণাঞ্চলে একটি স্টেডিয়াম ও প্রাসঙ্গিক অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। শিশুদের কল্যাণে এখানে একটি শিশুপার্ক নির্মাণ করা হবে।

নিউমার্কেটের ৫ম তলায় একটি আইটি সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। দুই প্রার্থীর ইশতেহার নিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বপ্নের প্রয়োজন আছে, তবে আমাদের বাস্তবমুখী থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় আর আইটি পার্কের আগে জলাবদ্ধতা আর যানজটের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। কুমিল্লায় ওয়াসার মতো একটি প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। সুজন কুমিল্লার সহ-সাধারণ সম্পাদক মায়মুনা আক্তার রুবী বলেন, আকাশ ডাক দিলে কুমিল্লার মানুষের মন খারাপ হয়ে যায়। কারণ, তাকে জলাবদ্ধতায় পড়তে হবে। তাই জলাবদ্ধতা আর যানজট নিরসনে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

সর্বশেষ খবর