মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভরাট-দখল জোয়ারের পানিতে রাজা খাল

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ভরাট-দখল জোয়ারের পানিতে রাজা খাল

কর্ণফুলী নদীর অন্যতম শাখা রাজা খাল। নগরীর সিংহভাগ পানি নিষ্কাশন হয় এই খাল দিয়ে। কিন্তু দখল-ভরাট-আবর্জনার কারণে এ খাল দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে এই শুষ্ক মৌসুমেও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে খালসংলগ্ন অন্তত পাঁচটি সড়ক। এতে ছোট-বড় ৫০০ দোকানকে জোয়ারের পানিতে থাকতে হবে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা। ক্ষতির মুখে পড়েন ব্যবসায়ীরা। দুর্ভোগে পড়েন পথচারী। ভোগান্তি সৃষ্টি হয় যান চলাচলে।

রাজা খালের চাক্তাই স্কুল ও পোড়া ভিটা এলাকায় ভরাটের কারণে আশপাশের ইসমাইল ফয়েজ রোড, আবু জাফর রোড, ইছহাকের পুল রোড (পশ্চিম পাড়), তজুম আলী বাপের রোড এবং চাক্তাই নয়া বাজার এলাকা জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। এসব পানি স্থায়ী থাকে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা।

আমরা সচেতন বাকলিয়াবাসীর আহ্বায়ক আবদুল মান্নান বলেন, সম্প্রতি রাজাখালের বেহাল দশা সরেজমিন পরিদর্শন করে মেয়র সংশ্লিষ্টদের ওপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ওই দিনই রাজা খাল সংস্কারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। অতীতেও এ খাল সংস্কারে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও ফল অনেকটা শূন্য।     

চসিক এক্স কাউন্সিলর ফোরামের সদস্য সচিব মুহাম্মদ জামাল হোসেন বলেন, জনগণের আর্তনাদ যতদিন পর্যন্ত জনপ্রতিনিধির কানে পৌঁছবে না ততদিন এসব সমস্যা নিরসন হবে না। সিদ্ধাস্ত প্রণেতাদেরকেই এ ব্যাপারে উদ্যোগী ভূমিকা রাখতে হবে।   

চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন বলেন, রাজা খালের বেদখল অংশ উদ্ধারে শিগগির উচ্ছেদ অভিযান শুরু হচ্ছে। একই সঙ্গে খালটি সংস্কারে একটি স্কেবেটরও দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া এই খাল খনন নিয়ে বড় একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।      

জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর খালটি খননে একটি স্কেভেটর দেয় চসিক। কিন্তু দুই কাউন্সিলরের দ্বন্দ্বে হয়নি খননকাজ। দীর্ঘদিন সেই স্কেভেটর পড়ে থেকে নষ্ট হয় নানা যন্ত্রাংশ। ২০০০ সালেও এই রাজা খালে ছিল ছোট-বড় ১৪টি ঘাট। এসব ঘাট দিয়ে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা নৌপথে বাণিজ্য করত।

 কুতুবদিয়া, বাঁশখালী, নোয়াখালী, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, কাপ্তাই, রাঙ্গামাটি, মহেশখালী, বোয়ালখালীসহ বিভিন্ন এলাকায় নৌপথে মালামাল সরবরাহ করত। কিন্তু এখন অস্তিত্বহীন সেই সব ঘাট। খালে নেই পানি। বর্ষাকালে যৎসামান্য পানি দেখা গেলেও শুষ্ক মৌসুমে হেঁটেই যাতায়াত করা যায়। খাল ভরাটের কারণে বর্ষা মৌসুমে চরম জলাবদ্ধতায় পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের।

সর্বশেষ খবর