মঙ্গলবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

শিশু পার্কের সামনে অবৈধ বাণিজ্য

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

শিশু পার্কের সামনে অবৈধ বাণিজ্য

রাজধানীর শাহবাগ শিশু পার্কের পার্কিংস্থল দখল করে প্রায় দেড় যুগ ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালাচ্ছে একটি মহল। এসব দোকান থেকে প্রতি মাসে আদায় হচ্ছে মাসোহারা। শিশু পার্কে আসা লোকজন উপায় না পেয়ে সড়কেই গাড়ি পার্কিং করছে। এতে শাহবাগ এলাকায় যানজটের কবলে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।

ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, পার্কিং স্পেস দখল করে অবৈধ দোকান বসানো হয়েছে শুনেছি; তবে পার্ক কর্তৃপক্ষ আমাদের জানালে আমরা উচ্ছেদ করে দেব। তিনি বলেন, শিশু পার্কের জায়গায় একটি প্রকল্প হচ্ছে। ওই প্রকল্পটা বাস্তবায়ন হলেই এমনিতেই অবৈধ স্থাপনা থাকবে না।

বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন স্থানীয় কাউন্সিলর চৌধুরী আলম শিশু পার্কের ওই জায়গা অবৈধভাবে দখল করে শতাধিক দোকান বসিয়ে আগে টাকা উঠিয়েছেন। আর এখন সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে সেখান থেকে টাকা তুলছেন প্রভাবশালী মহল। এই সিন্ডিকেটকে সহযোগিতা করছে ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগেরই কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী। পার্কিংস্থলে অবৈধভাবে বসানো ছোট টং দোকান থেকে প্রতি মাসে ৫-৭ হাজার টাকা, আর বড় দোকান থেকে ২৫-৩০ হাজার টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি দোকান থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত অগ্রিমও নেওয়া হয়েছে। কুমিল্লার লাকসাম থেকে আসা এক আচার বিক্রেতা বলেন, তিনি প্রায় ১৮ বছর যাবৎ কার-পার্কিংয়ের জায়গায় বিভিন্ন আইটেমের আচার বিক্রি করছেন। তিনি মাসে পাঁচ হাজার টাকা ভাড়া দেন। এর মধ্যে আড়াই হাজার টাকা নেয় সিটি করপোরেশনের কিছু লোক। আর বাকি টাকা স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এখানকার এক বিরিয়ানি হোটেলের মালিক বলেন, শুনেছি সরকারি দলের কয়েকজন নেতা এ জায়গাটি ইজারা নিয়েছেন। আমরা তাদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়েছি। তবে এর বেশি কিছু বলতে তিনি রাজি হননি। পার্কে ঢুকতেই দুপাশে সারি সারি ছোট-বড় দোকান। যার সবই অবৈধ। এসব দোকানে নানা প্রসাধনীসহ সব ধরনের খাবার বিক্রি হচ্ছে। অথচ এ জায়গাতেই গাড়ি পার্কিং করার কথা ছিল। বছরের পর বছর এভাবে অবৈধ দোকান বসিয়ে প্রভাবশালীরা ভাড়া দিয়ে এলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই। শিশু পার্কের দায়িত্বে নিয়োজিত এক কর্মকর্তা বলেন, আগে বেশ কয়েকবার সিটি করপোরেশন পার্কিংয়ের জায়গা থেকে অবৈধ দোকান-পাট উচ্ছেদ করেছে। কিন্তু এখন ওইসব দোকান-পাট উচ্ছেদ করা হয় না। তিনি বলেন, এ বিষয়ে ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তাদের অনেক বলা হয়েছে। তারা এখন নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করছেন। শিশু পার্কের দেয়ালের ভিতরের চত্বর অবৈধভাবে দখল করে বড় বড় প্যান্ডেল নির্মাণ করে বসানো হয়েছে চটপটি, খাবার হোটেল, প্রসাধনীর টং, আচারের দোকান ইত্যাদি। ফলে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন গাড়ি পার্কিং করতে পারছেন না। সড়কের ওপর গাড়ি রাখায় পুরো এলাকায় দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট লেগে থাকে।

সর্বশেষ খবর