মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে বহুতল ভবন

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে বহুতল ভবন

রংপুর নগরীর বহুতল ভবনগুলোর অধিকাংশেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। ফলে এসব ভবনের বাসিন্দা অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে বসবাস করছেন। এমন ১৫৮টি সরকারি-বেসরকারি বহুতল ভবন চিহ্নিত করেছে রংপুর সিটি করপোরেশন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ বলেছে, এসব ভবন তৈরির সময় ইমারত নির্মাণ বিধিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। ফলে অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটলে জানমালসহ সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

সিটি করপোরেশন এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সূত্র জানায়, ছয়তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয় সিটি করপোরেশন। আর ছয়তলার থেকে ওপরে ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেয় ফায়ার সার্ভিস। নগরীতে ছয়তলা ভবন রয়েছে ১৫৫টি এবং ৮-১০ পর্যন্ত ভবন রয়েছে ১৫টি। ‘অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩’ অনুযায়ী বহুতল ভবনে নিজস্ব স্থায়ী অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, নিজস্ব পাম্প, রাইডার, ভবনে ওঠানামার জন্য দুটি করে প্রশস্ত সিঁড়ি, ভবনের উপরে ও নিচে সংরক্ষিত পানির ব্যবস্থা এবং প্রতি এক হাজার বর্গফুট পর পর ফায়ার এক্সটিংগুইশার অবশ্যই থাকতে হবে। কিন্তু ছয়তলা ১৪৫ এবং ৭-১০ তলা ১৩টি ভবনে এসবের কোনো বালাই নেই। কোনো কোনো ভবনে দু-একটি ফায়ার এক্সটিংগুইশার ঝোলানো থাকলেও তার বেশিরভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ। চিহ্নিত ভবনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আরডিআরএস, রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর ডেন্টাল কলেজ, প্রাইম মেডিকেল কলেজ ও হা্সপাতাল, সেন্ট্রাল টাওয়ার, এসএ টাওয়ার, ভরসা টাওয়ার, গোল্ডেন টাওয়ার, শাহ আমানত শপিং কমপ্লেক্স, জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্স, মোতাহার কমার্শিয়াল কমপ্লেক্স, চেম্বার ভবন, রেজেকা টাওয়ার, শাহ বারী টাওয়ার, রজনীগন্ধা সুপার মার্কেট, জেলা পরিষদ কমিউনিটি মার্কেট, জেলা পরিষদ সুপার মার্কেট, মানচিত্র শপিং কমপ্লেক্স, মোজাফফর টাওয়ার, পপুলার ডায়াগনস্টিক ভবন, আপডেট ডায়াগনস্টিক, ল্যাব এইড ডায়াগনস্টিক ও জিএম টাওয়ার। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার বেহাল দশা বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। গত বছরের জুনে এ হাসপাতালে তিন দফায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কাজে আসেনি। ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।  রংপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আজিজুল ইসলাম বলেন, বহুতল ভবনে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকলে অগ্নিকাণ্ডে জানমালের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি থাকে। আমাদের আওতাধীন যে সব ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই সেসব ভবন মালিকদের চিঠি দিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আর যেসব ভবনে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই সেসব ভবনে বসবাস ও ব্যবহারে ছাড়পত্র দেওয়া হচ্ছে না।   

রংপুর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন বলেন, বর্তমানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই এমন নকশা অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। আগে বেশিরভাগ বহুতল ভবনের মালিক চারতলার নক্শা অনুমোদন করে ৬-৭ তলা পর্যন্ত ভবন করেছেন। এমন ভবন মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর