মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

যন্ত্রপাতি জনবল সংকট দুর্ভোগে রোগীরা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

যন্ত্রপাতি জনবল সংকট দুর্ভোগে রোগীরা

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যন্ত্রপাতি আর জনবল সংকটে রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। বেডের তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় বেকায়দায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে সিটিস্ক্যান, এমআরআই, ডিজিটাল এক্স-রে ও শিশু বিভাগের কয়েকটি মেশিন নেই। ৭০২টি অনুমোদিত পদের মধ্যে ১১১টিই শূন্য। এই জনবল ৫০০ শয্যার জন্য পর্যাপ্ত নয়।  ১৯৯২ সালে এ হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০৮ সালে এটি ৫০০ শয্যায় উন্নীত হয়। তবে জনবল বাড়েনি। এখানে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৮০০ রোগী ভর্তি থাকে। আউটডোরে চিকিৎসা নেন গড়ে প্রতিদিন ১২০০ রোগী। তাদের সেবা দিতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকটে অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে হাসপাতালটি। রাজনৈতিক তদবিরে চতুর্থ শ্রেণিতে নিয়োগ হওয়ায় প্রকৃত পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না, তাই তারা পরিচ্ছন্নতার কাজ করতে চায় না। এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ নিরুপায়। এখানে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী অঞ্চলের স্বল্প আয়ের রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন।

যন্ত্রপাতি না থাকায় তারা বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছেন। অনেকের সেই ব্যয়ভার মেটানোর সামর্থ্য নেই। ২০০৬ সালে এ হাসপাতালে সিটিস্ক্যান মেশিন বসানো হয়। ২০১৪ সালের আগস্টে সেটি অকেজো হয়ে যায়। ২০০৭ সালে স্থাপন করা এমআরআই মেশিন পাঁচ বছর ধরে অচল। হাসপাতালের তিনটি এনালগ এক্স-রে মেশিনের একটি অচল। বর্তমানে হাসপাতালে কোনো ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন নেই। একটি মাত্র অ্যাম্বুলেন্স। বয়স ১৪ বছর, চলছে জোড়াতালি দিয়ে। একদিন রোগী নিয়ে ঢাকা গেলে তিন দিন তা ওয়ার্কশপে ফেলে রাখতে হয়। একটি বুড়ো জেনারেটর দিয়ে চলছে হাসপাতাল। সেটি মাঝে মধ্যে বিকল হয়ে যায়। রোগীদেরসহ পরিচালকের বাথরুমে পানি সরবরাহ নেই। এদিকে সরঞ্জাম সংকটে অপরিণত বয়সে জন্ম নেওয়া নবজাতকদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসকরা। হাসপাতালে ইনকিউবেটর ও রেডিয়েন্ট ওয়ার্মার না থাকায় শিশুদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না।

জানা গেছে, এখানে অপরিণত বয়সের নবজাতকদের পরিচর্যা কেন্দ্রে ৪২টি সিট রয়েছে। কিন্তু সেখানে নবজাতক ভর্তি করা হচ্ছে ৭০-৮০ জন। ভর্তি হওয়া অধিকাংশ নবজাতক নিম্নবিত্ত পরিবারের। নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের ১৩টি ইনকিউবেটরের সবই নষ্ট। ১২টি রেডিয়েন্ট ওয়ার্মারের মধ্যে ১১টিই নষ্ট। নবজাতকের অভিভাবক সালমা বেগম জানান, সামর্থ্য না থাকায় বেসরকারি হাসপাতালে না নিয়ে নবজাতককে সরকারি হাসপাতালে এনেছি। এখানে এনে জানা যায় যন্ত্রপাতি নষ্ট। হাসপাতালের পরিচালক স্বপন কুমার অধিকারী বলেন, হাসপাতালে সংকটের শেষ নেই। যন্ত্রপাতি ও জনবলের বরাদ্দ চেয়ে বারবার চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। সীমিত জনবল দিয়ে হাসপাতাল সচল রাখার চেষ্টা করছি।

সর্বশেষ খবর