মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

ছিনতাই চক্র বেপরোয়া

আফজাল, গাজীপুর সিটি

ছিনতাই চক্র বেপরোয়া

গাজীপুরের মালেকের বাড়ি এলাকায় গাড়িতে ও কারখানা মালিককে গুলি করে ৬৬ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা

গাজীপুরে ছিনতাই চক্রের সদস্যরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নগরীর বিভিন্ন স্পট সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই চলে যায় ছিনতাইকারীদের দখলে। থানায় থানায় পুলিশের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর উেকাচ বাণিজ্যের কারণে অপরাধীরা রয়েছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। যেদিকে টাকার পাল্লা ভারী সেদিকে পুলিশ কথা বলছে। সরকারের সুনাম ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যেই কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, নগরীর বেশ কিছু স্পট সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলেই চলে যায় ছিনতাইকারীদের দখলে।

পুলিশের নাকের ডগায় দেদার তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নগরীর এমন কয়েকটি স্পট হলো টঙ্গী নিমতলী, রেলগেট নতুন বাজার, তিস্তার গেট, গাজীপুরা বাসপট্টি, কামাড় পাড়া সড়ক, খরতৈল, সফিউদ্দিন রোড, মধুমিতা রোডের বিপরীত পাশে, মোল্লাবাড়ি রোড, এরশাদ নগর, বড়বাড়ী, মালেকের বাড়ি, জয়দেবপুর শিববাড়ী, পূবাইল মিরের বাজার, হারবাইদ ব্রিজ সংলগ্নসহ অসংখ্য স্পটে প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই পুলিশি হয়রানির ভয়ে থানায় আসে না।

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি ঘটনার মধ্যে গত ৭ মে দুপুর ১২টায় টঙ্গী টিএন্ডটি মরকুন আরবিআরএস ফ্যাশন লি. পোশাক কারখানা মালিক রবিউল ইসলাম ঢাকা মেট্রো (গ-২৭-০৭৭৭) প্রাইভেট কারযোগে চৌরাস্তা ইসলামী ব্যাংক শাখায় টাকা তুলতে যান। পরে শ্রমিকের বেতনের ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে টঙ্গী রওনা হন। এ সময় গাড়িটি মালেকের বাড়ি এলাকায় পৌঁছলে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা একদল দুর্বৃত্ত দুটি মোটর সাইকেলযোগে গাড়ির গতিরোধ করে। পরে গাড়ির সামনে দুই রাউন্ড গুলি ও গ্লাস ভাঙচুর করে কারখানা মালিকের বাম পায়ে গুলি করে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনার পর ১৫ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ টাকা ও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি।

গত ১৩ মে টঙ্গীর সফিউদ্দিন স্কুল মোড়ে মিল গেট এলাকার সিসিএল কারখানার এক শ্রমিক মিলনকে কুপিয়ে জখম করে ছিনতাইকারীরা। এ ঘটনায় স্থানীয় জনতা তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।

অন্যদিকে গত ১৮ মে সন্ধ্যায় আশুলিয়া বাইপাস টঙ্গী কামাড়পাড়া সড়কে তিন ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে মোবাইল ও ৯০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় একদল ছিনতাইকারী। পরে আহত রানা, সুমন ও নাছিরকে উদ্বার করে টঙ্গী হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, থানা পুলিশ এখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত। টাকা ছাড়া কথা কয় না পুলিশ। টাকা যেদিকে আইনগত ব্যবস্থা সেদিকে।

যার ফলে অপরাধ দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে পুলিশি সেবাবঞ্চিত সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ৬৬ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমরা দুজনকে আটক করেছি। টাকা ও অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে ছিনতাই রোধে চেকপোস্ট ও মোবাইল টিম বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের মানেজারকে নিয়ে টাকা লেনদেনের বিষয়ে সভাও করা হয়েছে। এ ব্যাপারে টঙ্গী থানার ওসি ফিরোজ তালুকদারের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আগের তুলনায় এখন ছিনতাই অনেক কম।

মাঝে-মধ্যে দু-একটি ঘটনা ঘটে। ছিনতাই রোধে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, এ বিষয়ে আমাদের পুলিশ তৎপর রয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর