মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভোগান্তির শেষ নেই ভূমি অফিসে

আফজাল, গাজীপুর সিটি

ভোগান্তির শেষ নেই ভূমি অফিসে

দুর্নীতির আখড়া এখন ভূমি অফিস। অল্প সময়ে কাগজপত্র পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দালাল চক্রের সদস্যরা সক্রিয় রয়েছে। নগরীর সবকটি ভূমি অফিসের একই চিত্র। ভূমি অফিসগুলোতে অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়ে আসছে। ভিত্তিহীন অভিযোগ আমলে নিয়ে প্রকৃত ভূমি মালিকদের চরমভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। মালিকানা প্রমাণের কাগজপত্র ছাড়াই কেবল ঘুষের বিনিময়ে একজনের জমি অন্যের নামে নামজারি হচ্ছে। একই জমি দুজনের নামে খারিজ দেওয়া হচ্ছে। এমনকি ভূমি অফিস কর্তকর্তারা ভূমিখেকো ও সরকারি খাসজমি দখলদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে উেকাচ বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। ভুক্তভোগীরা ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুফল পাচ্ছেন না।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, নগরীর টঙ্গী, গাছা, পুবাইল, গাজীপুর সদর ও এসিল্যান্ড অফিসসহ সবকটি অফিসের একই চিত্র। প্রতিটি টেবিলেই টাকা ছাড়া ফাইল নড়ে না। আবার এসিল্যান্ড অফিসে নামজারি জমাভাগের আদেশ নিতে অথবা কারোর নামজারি জমাভাগের আদেশ বাতিল করতে বৈধ কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না। ঘুষের বিনিময়ে শুধু সাদা কাগজে একখানা সাদামাটা আবেদন করলেই নতুন জোত সৃষ্টি অথবা পুরনো জোত বাতিল করা যায়। এক্ষেত্রে দলিল বা পর্চার প্রয়োজন হলে ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা নিজেরাই তা বানিয়ে নথিতে সংযুক্ত করে দেন। এমনকি কেউ আগে আবেদন করে না থাকলে পেছনের তারিখে আবেদন তৈরি করে জোত বাতিল অথবা নতুন জোত সৃষ্টি করা হয়। এ ব্যাপারে সম্প্রতি ডিসি অফিসে দাখিলকৃত অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে কয়েকটি নথির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন ১৪৮০/১৩-১৪ নম্বর নথিমূলে টঙ্গী কাকিল সাতাইশ মৌজায় ৫৯১৫ নম্বর জোত খোলা হয়। পরবর্তীতে ওই জোত বহাল রেখেই  ১৬৯৬/১৩-১৪ নম্বর নথিমূলে একই জমির আরেকটি জোত (নং-৫৯১৭) খোলা হয়।

এসিল্যান্ড অফিসের বারান্দায় জোত বাতিল বা বিবিধ মোকদ্দমা (মিস কেস) করার যেসব নিয়ম লেখা রয়েছে এগুলোর ধারে কাছেও নেই ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা। ফলে জাল জালিয়াত চক্রের দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়ছে। এদিকে কালু নামে এক ভুক্তভোগীসহ বেশ কয়েকজন বলেন, সরকারি নিয়মানুযায়ী নামজারি জমাভাগ ফি ১১৫০ টাকা ও কোর্ট ফি ২০ টাকা সর্বমোট ১১৭০ টাকা লাগে। অথচ ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা দালালের মাধ্যমে জমির নামজারি (খারিজ) করতে টাকা নিচ্ছেন ২০-২৫ হাজার টাকা।

এসিল্যান্ড অফিসের দেলোয়ারসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি জমির খারিজ করতে আসা ব্যক্তিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে টঙ্গী ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এসএম মান্নান ও গাজীপুর সদর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক এসব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ভূমি অফিসগুলো এখন সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অনিয়ম করার কোনো সুযোগ নেই।

সর্বশেষ খবর