মঙ্গলবার, ৬ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

হানিফ ফ্লাইওভারে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড!

রফিকুল ইসলাম রনি

হানিফ ফ্লাইওভারে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড!

হানিফ ফ্লাইওভারে তৈরি বাসস্ট্যান্ডে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে প্রতিদিন

রাজধানীর দক্ষিণ প্রবেশমুখে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার গত কয়েক বছরে যানজটের দুর্ভোগ থেকে স্বস্তি দিলেও সেই ফ্লাইওভারের ওপর নকশা বহির্ভূতভাবে তৈরি করা হয়েছে বাসস্ট্যান্ড। নিচ থেকে ফ্লাইওভারে উঠার জন্য তৈরি করা হয়েছে স্টিলের সিঁড়ি। গত আট মাস ধরে ফ্লাইওভারের ওপর বিপজ্জনক ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছে। নকশায় যাত্রী ওঠানামার কোনো স্টপেজ না থাকলেও যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে ৭-৮টি স্থানে অবৈধভাবে তৈরি করা হয়েছে যাত্রী ওঠানামার স্টপেজ ও সিঁড়ি। এতে একদিকে যেমন যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে অপরদিকে পথচারীদের এলোমেলো চলাচলের কারণে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এভাবে অপরিকল্পিতভাবে ফ্লাইওভারে যাত্রী ওঠানামার জন্য সিঁড়ি তৈরি করা ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে।

সরেজমিন যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভার ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর সুপার মার্কেটের আগে র‌্যাব-৩ অফিসের সামনে, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের ভিতরে, সায়েদাবাদ জনপথ মোড়ে, ধোলাইপাড় যাওয়ার পথে এভাবে বাস স্টপেজ তৈরি করা হয়েছে। প্রথম সিঁড়ি করা হয়েছে সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের ভিতরে, দ্বিতীয় সিঁড়ি বাস টার্মিনাল থেকে ২০০ গজ দূরে জনপথ সড়কে ও দুটি সিঁড়ি যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তার মোড়ে দুই পাশে। যাত্রাবাড়ী এলাকায় সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার জন্য যাত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। সাইনবোর্ডে গুলিস্তান, পলাশীগামী বাসে উঠতে এ সিঁড়ি ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাইনবোর্ড দুটিতে লেখা রয়েছে—‘গুলিস্তান যাওয়ার জন্য সিঁড়ি ব্যবহার করুন’, ‘পলাশী যাওয়ার জন্য সিঁড়ি ব্যবহার করুন’। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের ভিতরে সিঁড়িটি ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে।

দুই লেনের ফ্লাইওভারের ওপরে বাস স্টপেজের জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা নেই। কিন্তু ফ্লাইওভারের ওপরে ৫টি স্থানে বাস-বে তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া যাত্রীদের ফ্লাইওভারে ওঠানামার জন্য ৩টি স্থানে সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছে। ফ্লাইওভারে ওঠানামার র‌্যাম্পগুলোর সংযোগস্থলে ঝুঁকি নিয়েই এই সিঁড়ি দিয়ে নিয়মিত যাত্রীরা ওঠানামা করছে। বাস ছাড়াও হিউম্যান হলারে যাত্রীরা ওঠানামা করছে ওই স্টপেজগুলোতে। রাস্তার দুই পাশেই এভাবে যাত্রী ওঠানামা করে। এতে গুলিস্তান বা পলাশীগামী যাত্রীরা একদিক দিয়ে বাসে উঠছেন। ফেরত আসা যাত্রীরা অপরদিকে নামছেন। এরপর ঝুঁকি নিয়ে দৌড়ে ফ্লাইওভারের ওপর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাচ্ছেন যাত্রীরা। এজন্য ডিভাইডারের মাঝে সামান্য ফাঁকা জায়গাও রাখা হয়েছে। ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) সাবেক অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক, পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন বলেন, এরকম একটি রানিং ফ্লাইওভারের ওপর বাস স্টপেজ করা কোনোভাবেই উচিত নয়। দুই লেনের ফ্লাইওভারের ওপরে বাস স্টপেজ করা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি বলেন, যখনই একটি গাড়ি যাত্রী তোলার জন্য থেমে থাকবে তখন চলমান গাড়ির জন্য এটি বাধা সৃষ্টি করবে। দুর্ঘটনা ঘটবে। ফ্লাইওভারের ওপরও যানজটের সৃষ্টি হবে। মূল কথা হচ্ছে, মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপরে বাস স্টপেজ করার বিষয়টি মূল নকশায় নেই। এটি কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

সর্বশেষ খবর