মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজধানীর বিপর্যস্ত সড়কে দুর্ভোগ

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

রাজধানীর বিপর্যস্ত সড়কে দুর্ভোগ

রাজধানীর সড়ক মানেই এখন খানাখন্দ আর গর্ত। নগরীর এমন কোনো সড়ক নেই যেখানে খানাখন্দ ও বড় গর্ত নেই। সম্প্রতি তিন দিনের টানা বৃষ্টি ও জলজটের কারণে সড়কের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নগরবাসী। রাজধানীর মূল পাঁচটি সড়কের একই অবস্থা। কুড়িল থেকে প্রগতি সরণি হয়ে রামপুরা ও যাত্রাবাড়ী, আবদুল্লাহপুর থেকে মহাখালী ও ফার্মগেট হয়ে প্রেস ক্লাব, গাবতলী থেকে আজিমপুর, মহাখালী থেকে মগবাজার হয়ে গুলিস্তান এবং পল্লবী থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত সড়ক। এর মধ্যে আবদুল্লাহপুর থেকে প্রেস ক্লাব পর্যন্ত সড়কটিই একটু ভালো। এই পথে রাষ্ট্রীয় অতিথি, ভিভিআইপি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের চলাচল সবচেয়ে বেশি। এই পাঁচটি সড়কের দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৫০০ কিলোমিটার হলেও ৫২০ কিমি সড়ক চলাচলের অযোগ্য। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এ বছর একটু বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। বড় বড় গর্তগুলোর সাময়িক সংস্কার কাজ নিয়মিতই চলছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, অতিবর্ষণে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার অনেক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অচিরেই সংস্কার কাজ শুরু হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কুদরত উল্লাহ বলেন, বর্ষা মৌসুমে অনেক সড়কে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশি গর্ত হয়েছে এমন সড়কগুলোতে ইট বিছিয়ে চলাচলের উপযোগী রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে ভারী মেরামত করা হবে।

দুই সিটি করপোরেশনের সড়ক মেরামতের চিত্র বলছে, প্রতি বছর মেরামতযোগ্য সড়কের পরিমাণে তেমন হেরফের হচ্ছে না, বরং প্রতি বছরই বরাদ্দ বাড়ছে। গত বছর দুই সিটি করপোরেশন ৫২০ কিলোমিটার সড়ক মেরামত করেছে। চলতি বছর ৫১৯ কিলোমিটার মেরামতে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে গত অর্থবছরে দুই সিটির সড়ক মেরামতে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ বেড়ে হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮৩১ কোটি টাকা।

সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত নতুন সড়ক ঠিকভাবে নির্মাণ করা হলে ১৫-২০ বছর হাত দিতে হয় না। ঢাকার সড়ক যেহেতু পুরনো, তাই একবার ভারী মেরামত করলে ৬-৮ বছর টিকে থাকার কথা। একইভাবে সড়কগুলো ১০-১৫ টন ওজনের গাড়ি চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়। কিন্তু সেখানে চলে ৪০-৫০ টন ওজনের গাড়ি। এতে সড়কগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। একইভাবে বৃষ্টির পানিতেও সড়ক নষ্ট হচ্ছে। নগরবিদ ও প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক বলেন, শুধু জলাবদ্ধতার কারণে সড়কের এই অবস্থা হয়েছে, সেটি ঠিক নয়। ভারী যানবাহন চলাচল এবং নিম্নমানের কাজের কারণেও সড়ক ভেঙেছে। বছরের শুরুতেই সিটি করপোরেশনের সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির একটি রোডম্যাপ থাকলে এমন হতো না। এ ক্ষেত্রে সময় অনুযায়ী কাজ শুরু ও শেষ করতে হবে এবং অবশ্যই বর্ষা মৌসুমে সড়ক খোঁড়া বন্ধ রাখতে হবে।

 

সর্বশেষ খবর