মঙ্গলবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

গণপরিবহনেও ভেজাল চলছে!

মাহবুব মমতাজী

গণপরিবহনেও ভেজাল চলছে!

গত ১৯ এপ্রিল দুপুর সোয়া ১টা। রাজধানীর কারওয়ান বাজার সার্ক ফোয়ারা মোড়ে অবস্থান নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় লাব্বাইক ও আয়াত পরিবহনের দুটি বাস ফার্মগেটের দিক থেকে সামনের দিকে যাচ্ছিল। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান বাস দুটিকে থামার নির্দেশ দিলেন। চালক সেই নির্দেশ অমান্য করে পালানোর চেষ্টা করেন। কিছুদূর যেতেই আটক করা হয় আয়াত পরিবহনের বাসটিকে। কিন্তু তখনো ছুটছিল লাব্বাইক পরিবহনের বাস। একপর্যায়ে বাসটির পিছু নেয় ট্রাফিক পুলিশ। দৌঁড়ে লাব্বাইকের দরজার হ্যান্ডেল ধরলেও চালক থামেনি। তখনো তিনি ঝুঁকি নিয়ে বাসটির সঙ্গে দৌড়াচ্ছিলেন। একপর্যায়ে বাসটির হেলপার স্বপনকে নিচে নামিয়ে আনতে সক্ষম হন। এরপরও লাব্বাইক বাসটি থামেনি। পরে হেলপার স্বপনকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই দিন বিকালে বাসাবো এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে যৌন নিপীড়নের মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। বাসাবোর বৌদ্ধমন্দির এলাকায় লাব্বাইক বাসে দুই ছাত্রী যৌন নিপীড়নের শিকার হন। বাস খালি করে তাদের মুখ চেপে ধরে পা বেঁধে ফেলার চেষ্টা করেছিল পরিবহনকর্মীরা। এ নিয়ে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টও করেন জাতীয় টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রী। ঘটনা দুটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এমএম লাইব্বাইক পরিবহনের বাস। এই বাসের সড়কে চলাচলের অনুমোদন নেই বলে জানা গেছে।

পরিবহনের নাম নিয়েও বিভ্রান্তি লক্ষ্য করা গেছে। ঘটনা এক কোম্পানির বাসের, ধরা খায় আরেক কোম্পানির বাস। রাজধানীতে সাভার-সাইনবোর্ড রুটে একই নাম ব্যবহার করে চলে দুটি কোম্পানির বাস। একটি লাব্বাইক ট্রান্সপোর্ট প্রা. লি.। অপরটি এমএম লাব্বাইক পরিবহন প্রা. লি.। একই নাম ব্যবহারে রশি টানাটানির বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এরপর উচ্চ আদালত লাব্বাইক ট্রান্সপোর্ট প্রা. লিমিটেডকে গণপরিবহনে লাব্বাইক নাম ব্যবহারের অনুমতি দেয়। আর লাব্বাইক পরিবহন লিমিটেড কোম্পানির মালিকদের নাম পরিবর্তনের নির্দেশ দেয়। তবুও বদল হয়নি নাম।

সূত্র জানায়, এমএ হাসান ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনুমোদনপ্রাপ্ত লাব্বাইকের। তিনি ২০০৯ সাল থেকে পরিবহন ব্যবসা করছেন। এর রুট নম্বর এ-১৯২। অনুমোদনহীন নকল এম এম লাব্বাইকের রুট নম্বর- এ-৪২১। লাব্বাইকের নাম নকল করে ছোট আকারে লাব্বাইকের আগে এম এম শিকদার দিয়ে অবৈধভাবে রোড পারমিটের স্লিপ ছাড়াই এর গাড়ি রাস্তায় চলছে। 

লাব্বাইক ট্রান্সপোর্ট প্রা. লিমিটেডের এমডি বলেন, এমএম লাব্বাইক নাম ব্যবহারকারী গাড়ির প্রতিদিনের দুর্ঘটনার দায়ভার আসল লাব্বাইকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর