মঙ্গলবার, ১৫ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

মতিঝিলের খেয়াঘাট

আলী রিয়াজ

মতিঝিলের খেয়াঘাট

ব্যাংকপাড়া বলে খ্যাত রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা মতিঝিলে সারা দিন গাড়ি, রিকশার জ্যাম লেগেই থাকে। কিন্তু এই জ্যাম থেকে বাঁচতে খেয়া পারাপারের সুবিধাও রয়েছে। মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঘেঁষা ছোট্ট একটি ডোবায় রয়েছে খেয়া পারাপারের সুবিধা। মতিঝিল গুদারাঘাট নামে পরিচিত এই ঘাটের আরেক পাড়ে রয়েছে দক্ষিণ কমলাপুর। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডানদিকে লাগোয়া এই খেয়া পার হয়ে দক্ষিণ কমলাপুর থেকে মতিঝিলে আসতে লাগে মাত্র দুই মিনিট। কিন্তু এই ঘাট না থাকলে মতিঝিল মোড় পর্যন্ত পৌঁছতে সময় লাগত কমপক্ষে আধাঘণ্টা। এই খেয়ায় প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হন।

সরেজমিন দেখা গেছে, এ ঘাট দিয়ে নিয়মিত পারাপার হচ্ছে কর্মব্যস্ত নগরবাসী।

এদের সংখ্যা কয়েক হাজারের মতো। মতিঝিল থেকে দক্ষিণ মুগদাপাড়া, কমলাপুর, সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে যেতে ওই এলাকার রাস্তায় রিকশায় গেলে সময় ও অর্থ বেশি লাগে। কিন্তু এ ঘাট দিয়ে পারাপার হলে দুটোই সাশ্রয় হয়। যেখানে ঘুরে যেতে ২০ টাকা লাগে, সেখানে মাত্র দুই টাকা দিয়ে নৌকায় পার হওয়া যায়। প্রতিদিন সূর্য ওঠার পর থেকে যাত্রীদের পারাপার করা শুরু হয়। চলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। তবে যাত্রীদের চাপ থাকলে আরও বেশি সময় পারাপার করা হয় বলে জানালেন ঘাটের এক মাঝি মোখলেস মিয়া। কুড়িগ্রামের বাসিন্দা মোখলেস মিয়া থাকেন গোপীবাগে। তারা তিন ভাই দানা মিয়া (৬৫), হেজু মিয়া (৬০) ও মোখলেস মিয়া (৫০)— সবাই এই ঘাটের মাঝি বলে জানালেন তিনি। তিনি জানালেন, পারাপারের জন্য জনপ্রতি দুই টাকা করে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, এখানে ১০-১২ জন মাঝি আছেন। নৌকা দুই-তিনটি আছে। এগুলো ভাগে ভাগে সবাই চালান। একেকজন মাঝি এক ঘণ্টা করে চালান। এতে একেকজন প্রতিদিন দুই-তিন ঘণ্টা ভাগে পান। প্রতিদিন ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয়। আরও বেশি আয় হয়। যারা ঘাট চালান তারা এ টাকায় ভাগ পান। কারা চালান এই ঘাট, জানতে চাইলে তিনি কারও নাম বলতে রাজি হননি। জানা গেছে,  এই ঘাটটি নিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের দীর্ঘদিন ধরে মামলাও চলছে। ফলে অযত্নেই পড়ে আছে মতিঝিলের ঘাটটি। পুরো ঘাটে ময়লার স্তূপ। পানি কুচকুচে কালো। পানিতে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ। গরমের দিনে অনেক সময় যাত্রীদের নাকে হাত দিয়ে পার হতে দেখা যায়। এ ঘাটের সঙ্গে কারখানার বর্জ্য অপসারণের নালা যুক্ত রয়েছে। পারাপার হওয়া অনেক যাত্রী দাবি করেন, সরকার যেন এ ঘাটটি হারিয়ে যেতে না দেয়। সরকার যেন এটি রক্ষণাবেক্ষণ করে, আরও আধুনিক করে তোলে। এ সময় তারা ঘাটের পানি পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান এবং ঘাটে বাঁধ দিয়ে এর চারদিকে হাঁটাচলার রাস্তা করার দাবি করেন।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর