মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভোগান্তির নাম শাপলা চত্বর-তাজহাট সড়ক

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

ভোগান্তির নাম শাপলা চত্বর-তাজহাট সড়ক

রংপুর নগরীর জনদুর্ভোগের নাম শাপলা চত্বর থেকে বাবুপাড়া রেলগেট হয়ে তাজহাট সড়ক। ব্যস্ততম ও জনবহুল তিন কিলোমিটার এ সড়কের বেহাল দশা ঘুচছেই না। সড়কে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে হাজারো যানবাহন।   গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের পাশে রয়েছে র‌্যাব-১৩ রংপুর সদর দফতর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, রংপুর রেলওয়ে স্টেশন, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, বিভাগীয় মৎস্য অফিস, যক্ষ্মা হাসপাতাল, দুর্নীতি দমন কমিশন অফিস, ডিজিএফআই অফিস, এনএসআই অফিস, রংপুর জাদুঘর, জেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হয় এই সড়ক দিয়ে। এই সড়কের পাশেই রয়েছে রংপুরের প্রসিদ্ধ আটা ও ময়দা ব্যবসা কেন্দ্র, ব্যাংক-বীমা, বেসরকারি অফিস, অসংখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও গার্মেন্ট। আছে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির সংস্কারসহ দুই পাশে নর্দমা নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২২ জুন। গত বছরের ১৮ জুন কাজ শেষ হওয়ার কথা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাফা এন্টারপ্রাইজের আবেদনের প্রেক্ষিতে কাজের সময়সীমা আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। যার মেয়াদ ছিল গত ৩১ জানুয়ারি। এ সময়ের মধ্যে শতকরা ৫৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু জানুয়ারি মাস থেকে ঠিকাদার কাজ বন্ধ রেখে লাপাত্তা হয়ে যায়।

সরেজমিন দেখা যায়, সড়কটির দুই পাশের নর্দমা নির্মাণও শেষ হয়নি। পুরো সড়কের কার্পেটিং তুলে ফেলায় ছোট-বড় অনেক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে এসব খানাখন্দে পানি জমে থাকে। যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। হেলেদুলে এপাশ-ওপাশ করে চলাচল করে যানবাহন। সড়কটিতে পায়ে হেঁটে চলারও কোনো উপায় নেই। বাধ্য হয়ে রিকশা ও অটোরিকশায় চলাচল করতে হয়। ঠিকাদারপাড়া এলাকায় কথা হয় কয়েকজন অটোচালকের সঙ্গে। নগরীর আলমনগর এলাকার অটোচালক আলতাফ হোসেন বলেন, এই রাস্তায় অটো চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়। তারপরও বাধ্য হয়ে ধীরে ধীরে চলাচল করতে হচ্ছে। বাবুপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সাঈদ পারভেজ বলেন, সড়কে কাজ শুরু হওয়ার পর স্বস্তি পেয়েছিলাম। মাঝপথে কাজ বন্ধ হওয়ায় দীর্ঘ দুই বছর থেকে আমরা খুব কষ্টে আছি। এই সড়কে কোনো ট্রাক আসতে চায় না। আর এলেও ভাড়া বেশি দিতে হয়। একই এলাকায় ট্রাকচালক রাজু মিয়া বলেন, রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। মালবাহী ট্রাক উল্টে যাওয়ার ভয় থাকে। যে কারণে এ রাস্তায় আসতে চায় না। সড়কটির বেহাল দশার সত্যতা নিশ্চিত করে রংপুর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন বলেন, শতকরা ৫৫ ভাগ নির্মাণ কাজের টাকা ঠিকাদারকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু টাকা নিয়েই লাপাত্তা হয়ে গেছে ঠিকাদার। ছয় দফায় চিঠি দিলেও ঠিকাদার যোগাযোগ করছে না।

সর্বশেষ খবর