মঙ্গলবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

সুবিধাবঞ্চিত চার লাখ নগরবাসী

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

সুবিধাবঞ্চিত চার লাখ নগরবাসী

রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) গঠনের সাত বছর পেরিয়ে গেছে। এ দীর্ঘ সময়ে বর্ধিত এলাকায় উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। সিটি করপোরেশনের সব সুবিধা থেকে বঞ্চিত বর্ধিত এলাকার চার লাখ মানুষ। অথচ তারা নিয়মিত কর প্রদান করছে। রংপুর পৌরসভার আয়তন ছিল ৫২ বর্গকিলোমিটার। এর সঙ্গে ১৫১ বর্গকিলোমিটার যুক্ত করে ২০১২ সালের ২৮ জুলাই পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত করা হয়। পৌরসভার ১৫টি ও বর্ধিত ১৮টি ওয়ার্ড নিয়ে সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড সংখ্যা ৩৩টি। মোট জনসংখ্যা ৮ লাখ। এর মধ্যে চার লাখ মানুষের বাস বর্ধিত এলাকায়। গত সাত বছরে মূল নগরীর সড়কের সঙ্গে বর্ধিত এলাকার সংযুক্ত সড়ক নির্মাণ ছাড়া আর কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অধিকাংশ সড়কই কাঁচা আর খানাখন্দে ভরা। ফলে বর্ষায় ঘর থেকে বের হতে পারে না বাসিন্দারা। পানি নিষ্কাশনের জন্য নেই কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থাও। এখনো নগরীর বর্ধিত অংশে পল্লী বিদ্যুৎ রয়ে গেছে। ফলে সিটি করপোরেশনের নাগরিক হয়েও বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার তারা। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ইউনিট প্রতি বিল ৩ টাকা ৫৩ পয়সা। আর পল্লী বিদ্যুতের ৩ টাকা ৮৭ পয়সা। সিটি করপোরেশনে বসবাস করে বর্ধিত এলাকার বাসিন্দাদের এখনো ৩৪ পয়সা অতিরিক্ত বিল বেশি দিতে হচ্ছে। নগরীর পুরনো পাঁচটি ওয়ার্ডে নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র  স্থাপন করা হলেও ২৮টি ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। পানি সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা নেই। সড়কে বাতিও জ্বলে না। অথচ বর্ধিত এলাকার বাসিন্দাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি কর।  ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বড়বাড়ি বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমরা শুধু নামেই সিটির বাসিন্দা। নিয়মিত কর প্রদান করছি। কিন্তু নাগরিক কোনো সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি না। সড়কবাতি না থাকায় মাঝেমধ্যেই চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।’ ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কামদেবপুর এলাকার স্কুলশিক্ষক মজিবর রহমান বলেন, ‘বর্ধিত এই ওয়ার্ডে সংস্কারের অভাবে সড়কগুলোতে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে কাদাপানি জমে চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়ে’। তিনি অভিযোগ করেন, ‘সুবিধা ভোগ করার আগেই সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিটি বাড়িতে কর প্রদানের রসিদ দেওয়া হয়েছে। আমার ওপর পানি, সড়কবাতিসহ মোট চার বছরের ১০ হাজার টাকার কর নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ এলাকায় পানির লাইন নেই, সড়কবাতিও দেওয়া হয়নি।’ মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, ‘উন্নয়নের ক্ষেত্রে বর্ধিত এলাকার মানুষ বৈষম্যের শিকার হয়েছে—এটা ঠিক। ছয়মাস হলো দায়িত্ব নিয়েছি। এরই মধ্যে জলাবদ্ধতা ও গ্রামীণ অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ২১০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প একনেকে পাস হয়েছে। বর্ধিত এলাকার মূল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা দ্রুত সমাধানের জন্য প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর