মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা
পা ঠ ক প্র তি বে দ ন

হুমকির মুখে খুলনা শহর রক্ষা বাঁধ

আহছানুল আমীন জর্জ, খুলনা

হুমকির মুখে খুলনা শহর রক্ষা বাঁধ

চরম হুমকির মুখে পড়েছে খুলনা শহর রক্ষা বাঁধ। খুলনা মহানগরীর দৌলতপুর সরকারি বিএল কলেজ ও দৌলতপুর বাজার সংলগ্ন শহর রক্ষা বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধের বেশিরভাগ অংশ ভৈরব নদে ধসে গিয়ে তলিয়ে গেছে। শহর রক্ষা বাঁধটি জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। একাধিকবার কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও গত ৫ বছরেও আর্থিক বরাদ্দ পায়নি খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত ৫ বছর ধরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট অর্থ বরাদ্দের জন্য আবেদন করে আসছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহর রক্ষা বাঁধের কংক্রিট ব্লকগুলো ধসে গিয়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ ধসের ফলে স্থানীয় সরকারি বিএল কলেজের মন্দিরসহ কয়েকটি ছাত্রাবাস ও দৌলতপুর বাজার, খুলনা জেলখানা ঘাট, সদর হাসপাতাল ঘাট, রূপসা ও লবণচরা এলাকা এবং খুলনা বড় বাজারের আনুমানিক ৭০০ দোকান ঘর ও দৌলতপুরে ২৫০টি দোকান ঘর হুমকির মুখে পড়ায় বাজার ব্যবসায়ীরা ও সরকারি বিএল কলেজ কর্তৃপক্ষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রীর কারণে শহর রক্ষা বাঁধ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পাউবো কর্মকর্তাদের একটি সূত্র জানায়, একটি মহল অবৈধভাবে বাঁধসংলগ্ন এলাকায় নিয়মবহির্ভূত দোকানপাট তৈরি করার কারণে বাঁধটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, বাঁধ ভাঙনের বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই হতাশাগ্রস্ত। তিনি আরও জানান, সম্প্রতি কেসিসি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অপরদিকে দৌলতপুর বাজার ব্যবসায়ী আলহাজ এইচ.এম. এ রহিম, শেখ মোশারেফ হোসেন ও সাদ্দাম হোসেন, কামালসহ ব্যবসায়ীরা এ ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সত্ত্বেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে জানান। এ বিষয়ে পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। দ্রুত বাঁধটি পুনঃনির্মাণ করে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা করা খুবই প্রয়োজন বলে খুলনাবাসী মনে করেন।  এর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন পরিচালক মোজাফফর হোসেন জানিয়েছিলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ বরাদ্দ দিলে শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কার করা সম্ভব হবে। বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ আশরাফুজ্জামান বলেন, আমরা খুলনা শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কারের জন্য একাধিক বার আবেদন করেছি। খুলনা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি শরীফ শফিকুল হামিদ চন্দন বলেন, খুলনা  শহর রক্ষা বাঁধ যদি বাঁধ সংস্কার না করা হয় তবে এক সময় ভৈরব নদীর ভাঙনের ফলে খুলনা শহর নিশ্চিহ্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যুবলীগ কর্মী মিজানুর রহমান মিল্টন বলেন, আমরা দৌলতপুরবাসী শহর রক্ষা বাঁধ এর দ্রুত সংস্কার চাই। পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনা অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত শহর রক্ষা বাঁধ সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর