মঙ্গলবার, ৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

ঢাকাকে ঘিরে হবে এলিভেটেড রিং রোড

মানিক মুনতাসির

ঢাকাকে ঘিরে হবে এলিভেটেড রিং রোড

রাজধানী ঢাকাকে ঘিরে এলিভেটেড রিং রোড নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ঢাকার যানজট নিরসনে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নতুন মেয়াদে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। ঢাকার চারপাশের  বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু, তুরাগ- এই চার নদীরই পাড় ঘেঁষে ভবিষ্যতে রিং রোড তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। অবশ্য একই সঙ্গে এই চার নদীতে ড্রেজিং করে নৌপথ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) রাজধানী ঢাকার ২০ বছর মেয়াদি পরিকল্পনায় এই রিং রোড নির্মাণের প্রাথমিক নকশা তৈরি করা হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে পুরো ঢাকা ঘিরে একটা এলিভেটেড রিং রোড নির্মাণ করে বিভিন্ন ইন্টারসেকশনে নির্মাণাধীন ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা ইস্ট-ওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যয় অনুযায়ী রাজউক ইতিমধ্যে তার এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ভূমি পরীক্ষা ও প্রথামিক নিরীক্ষার কাজ শুরু করেছে। রাজউক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে সব ধরনের যানবাহন চলবে ওপর দিয়ে। যা মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজ করবে। ঢাকায় ঢুকতে কিংবা ঢাকা থেকে বের হতে বিভিন্ন পয়েন্ট ল্যান্ডিং ও স্টার্টিং পয়েন্ট থাকবে এই এলিভেটেড রিং রোড ঘুরে। তবে নিচের রাস্তাগুলো থাকবে স্বাভাবিক। যা রাজধানীবাসীকে স্বচ্ছন্দে পথচলার পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ প্রকল্পে অর্থায়ন ও বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি ও বৃহৎ প্রকল্প হওয়ায় মূল কাজ শুরু করতে আরও সময় নিতে চায় রাজউক। এছাড়া বিদেশি কোনো উন্নয়ন সহযোগীকে অর্থায়নকারী হিসেবে না পেলে পাবলিক প্রাইভেট-পার্টনারশিপের (পিপিপি) বিকল্প অপশন রাখা হবে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য। টানা তিন টার্ম একই সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন অনেকটা সহজ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ২৮ জুলাই হাতিরঝিল সংলগ্ন বাড্ডা-রামপুরা নর্থ ইউলুপ উদ্বোধনকালে এলিভেটেড রিং রোর্ড নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন।  রাজউক সূত্র জানায়, এ প্রকল্পটি এখনো পরিকল্পনাতেই রয়ে গেছে। একেবারেই প্রাথমিক দিক হিসেবে এর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু হতে আরও সময় প্রয়োজন। তবে এ প্রকল্পের সঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পিতভাবে ল্যান্ডিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। স্থাপিত এলিভেটরগুলোর সঙ্গে প্রয়োজনে সংযোগ দেয়া হবে ঢাকায় নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েগুলোতেও।

এদিকে বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। এ প্রকল্পের বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত প্রথম অংশের প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। অন্যদিকে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়ালসড়ক) নির্মাণের জন্য ১৬ হাজার ৯০১ দশমিক ৩২ কোটি          টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য হবে ২৪ কিলোমিটার; যা বিমানবন্দর থেকে সাভার নবীনগর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এ প্রকল্পের মূল কাজ যে কোনো সময়ই শুরু হবে বলে জানা গেছে।

সর্বশেষ খবর