মঙ্গলবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রাণীশূন্য রাজশাহী চিড়িয়াখানা

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

প্রাণীশূন্য রাজশাহী চিড়িয়াখানা

উত্তরাঞ্চলের বড় বিনোদন কেন্দ্র রাজশাহীর শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা ক্রমেই প্রাণীশূন্য হয়ে পড়েছে। কয়েক বছর আগেও পশু-পাখির বিচরণ কেন্দ্র ছিল এ চিড়িয়াখানা। বাঘ, ভাল্লুক, কুমির, ঘড়িয়াল, হরিণ, সিংহ থেকে শুরু করে হাজারো প্রজাতির বিরল সব প্রাণী ছিল এখানে। দর্শনার্থীরা তা দেখে আনন্দ পেতেন। নানা কারণে এখন চিড়িয়াখানার বেশির ভাগ খাঁচা পড়ে আছে প্রাণীশূন্য। আগের চেয়ে দর্শনার্থী বাড়লেও তাদের নির্মল আনন্দ দিতে পারছে না এ চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানায় এক যুগে প্রাণীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাঘ, সিংহ, মায়া হরিণ থেকে শুরু করে অনেক প্রাণী মারা গেছে। চিড়িয়াখানার অবকাঠামোগত উন্নয়নের পর দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে প্রাণী না থাকায় দর্শনার্থীদের মধ্যে হতাশাও লক্ষ্য করা গেছে।

২০০৩ সালে রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় ছিল দুটি সিংহ, একটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, ১৯৪টি চিত্রা হরিণ, দুটি মায়া হরিণ, ২৬টি বানর, ৯টি বেবুন, চারটি গাধা, দুটি ভাল্লুক, একটি ঘোড়া, দুটি সাদা ময়ূর, তিনটি দেশি ময়ূর, ৮৫টি তিলা ঘুঘু, ৬৮টি দেশি কবুতর, ২৮টি বালিহাঁস, দুটি ওয়াকপাখি, পেলিকেন, টিয়া, ভুবন চিল, বাজপাখি, হাড়গিল, হুতুম পেঁচা, শকুন, উদবিড়াল, ঘড়িয়াল ও একটি অজগর। এখন এসব প্রাণীর অর্ধেকও নেই। সিংহ, ময়ূর, রয়েল বেঙ্গল টাইগারের খাঁচা ফাঁকা পড়ে আছে। চিত্রা হরিণের সংখ্যা প্রায় ৫ গুণ কমে গেছে। কমেছে বেবুন, ঘড়িয়াল, ভাল্লুকের সংখ্যা।

চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে ৭টি গাধা, ২০টি বানর, ২টি বেবুন, ২টি হনুমান, ১টি মায়া হরিণ, ৪৪টি চিত্রা হরিণ, ২টি মেছো বাঘ, ৪টি গন্ধগোকুল, ১টি ভাল্লুক, ৩০টি খরগোশ, ১টি হুতুম পেঁচা, ১টি হাড়গিল, ৪৮টি রাজহাঁস, ১০টি বালিহাঁস, প্রায় ২০০টি তিলা ঘুঘু, ২টি পাতিহাঁস, ১১০টি হাইব্রিড কবুতর, ১টি কালিম পাখি, ৭টি চখা, ২টি ঘড়িয়াল, ১টি অজগর, ৭টি কচ্ছপ, ৩০টি বক, ২টি সাদা বড় বক, ১টি ওয়াকপাখি, ১টি পেলিকেন, ১টি চিল, ১টি মুরাল মাছ ও ২টি বনবিড়াল রয়েছে।

চিড়িয়াখানার তত্ত্বাবধায়ক ডা. ফরহাদ হোসেন জানান, শুধু প্রাণী আমদানি করলেই হবে না, তাদের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা এবং একটি পুরুষ ও একটি মেয়ে প্রাণী রেখে আন্তঃপ্রজননের ব্যবস্থা করতে হবে। এসব না করা হলে অল্প বয়সেই প্রাণীরা মারা যাবে। এখানে পর্যাপ্ত পরিসর থাকলেও প্রজনন ব্যবস্থা না থাকায় ক্রমেই কমে যাচ্ছে পশু-পাখি।

এদিকে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরে এ চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থী বেড়েছে, বেড়েছে লাভের পরিমাণও। বেড়েছে টিকিটের দাম। কিন্তু কাক্সিক্ষত প্রাণী না থাকায় দর্শনার্থীরা নির্মল আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানাটি নিয়ে কিছু পরিকল্পনা আছে। নতুন নতুন পশু-পাখি নিয়ে আসা হবে। দর্শনার্থীরা যাতে হতাশ না হন, সে জন্য আধুনিকায়নের কাজ চলছে।

সর্বশেষ খবর