মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নগরের চার প্রবেশপথই যেন টার্মিনাল!

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

নগরের চার প্রবেশপথই যেন টার্মিনাল!

চট্টগ্রাম নগরের প্রবেশপথগুলো যেন সড়ক নয়, বাস টার্মিনাল। প্রবেশপথে  দাঁড়িয়েই গণপরিবহনগুলো যাত্রী ওঠা-নামা করে। উপজেলা থেকে শহরে আসা মানুষদের এ সব প্রবেশপথ দিয়েই আসতে হয়। কিন্তু সড়কে যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকায় তৈরি হয় যানজট। সঙ্গী হয় দুর্ভোগ। বিলম্ব হয় গন্তব্যে যাওয়া। চার প্রবেশপথ হলো- কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু গোলচত্বর, অলংকার  মোড়, অক্সিজেন মোড় এবং মোহরা রাস্তার মাথা। এর মধ্যে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু গোলচত্বর হয়ে নগরে প্রবেশ করে কক্সবাজার-বান্দরবানসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ। অক্সিজেন মোড় ও মোহরা রাস্তার মাথা দিয়ে প্রবেশ করে রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়িসহ উত্তর চট্টগ্রামের মানুষ। অলংকার মোড় দিয়ে প্রবেশ করে ঢাকাসহ সীতাকুন্ড-মীরসরাইয়ের মানুষ। জানা যায়, ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দার হাটে একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়। এরপর আর কোনো টার্মিনাল নির্মিত হয়নি। ৬০ লাখেরও বেশি জনসংখ্যার এই শহরে মাত্র একটি বাস টার্মিনাল! তবে বিলম্বে হলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরের কুলগাঁও এলাকায় একটি বাস টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। যাত্রীদের অভিযোগ, সড়কের ওপর গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী তোলার কারণে প্রতিনিয়তই লেগে থাকে যানজট। যাত্রীদের দুর্ভোগ-ভোগান্তি বাড়লেও এ নিয়ে কোনো প্রতিকার নেই। নগরে প্রবেশের চারটি পথেই একই চিত্র। কিন্তু এই সমস্যা প্রতিকারে সরকারি সংস্থার জরুরি ভিত্তিতে উদ্যোগ নেয়া দরকার ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি। চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘নগরে প্রয়োজনীয় বাস-ট্রাক টার্মিনাল না থাকায় যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। তবে চসিক নগরের কুলগাঁও এলাকায় একটি অত্যাধুনিক টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়াও বন্দর এলাকায় আরও দুটি বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। এগুলো নির্মিত হলে নগরে যানজট সমস্যা নিরসন হবে।’

সরেজমিন দেখা যায়, প্রতিটি প্রবেশপথে বাস দাঁড়িয়ে থাকায় অন্যান্য যানবাহন চলতে অসুবিধা হয়। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগেই থাকে সড়কগুলোতে। শাহ আমানত সেতু গোলচত্বরে দেখা যায়, সড়কের ওপরই দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখী অনেক বাস দাঁড়িয়ে আছে। সড়কে দাঁড়িয়েই যাত্রী ওঠানো হচ্ছে। এ সময় মূল সড়ক সংকুচিত হওয়ায় সৃষ্টি হয় যানজট। অভিন্ন চিত্র অক্সিজেন, অলংকার এবং মোহরা রাস্তার মাথা মোড়েরও। এসব মোড়ে এলোমেলোভাবে রাস্তার ওপরই দাঁড়িয়ে থাকে বাস। জানা যায়, যানজট নিরসনে কুলগাঁও বালুছড়া এলাকায় ১৬ একর জায়গায় ২৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হবে বাস-ট্রাক টার্মিনাল। শেষ হয়েছে ভূমি অধিগ্রহণ, পাওয়া গেছে পরিবেশ ছাড়পত্র। প্রকল্প বাস্তবায়নে ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় করা হবে ২৬০ কোটি ৫ লাখ ৫ হাজার টাকা, জমির উন্নয়ন ব্যয় হবে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ৩৯ হাজার টাকা, বাস-ট্রাক টার্মিলালের অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় হবে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ ইয়ার্ড নির্মাণ ব্যয় ২৫ কোটি টাকা।

 

সর্বশেষ খবর