মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নতুনভাবে সাজছে ঢাকা শিশুপার্ক

জয়শ্রী ভাদুড়ী

নতুনভাবে সাজছে ঢাকা শিশুপার্ক

রাজধানীর শাহবাগে ঢাকা শিশুপার্কে চলছে আধুনিকায়ন কার্যক্রম। ৭৮ কোটি টাকার প্রকল্পটি ডিসেম্বরেই শেষ হবে -জয়ীতা রায়

শিশুদের বিনোদনের কেন্দ্র রাজধানীর শাহবাগের ঐতিহাসিক শিশুপার্ক। দীর্ঘ ৩৯ বছর পর ঢেলে সাজানো হচ্ছে সরকারি এই বিনোদন কেন্দ্রটি। দীর্ঘ ২৯ বছর আগের মেয়াদোত্তীর্ণ রাইড পাল্টে নকশায় আধুনিকায়ন এনে ঢেলে সাজানো হচ্ছে এই বিনোদন কেন্দ্রকে।

ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে অবস্থিত শাহবাগ শিশু পার্কটি ঢাকা শিশুপার্ক হিসেবে পরিচিত। ১৯৭৯ সালে ‘শহীদ জিয়া শিশুপার্ক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় এটি। শিশুদের বিনোদনের জন্য পাবলিক সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম এ শিশুপার্কটি ১৯৮৩ সাল থেকে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের উদ্যোগে ১৫ একর জায়গার ওপর গড়ে উঠা এ পার্ক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। শিশু পার্কটিতে ১২টি রাইড ছিল। একটি খেলনা ট্রেন, একটি গোলাকার মেরি গো রাউন্ড রাইড ও একাধিক হুইল রাইড। ১৯৯২ সালে এ পার্কে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে সৌজন্য হিসেবে একটি জেট বিমান দেওয়া হয়। ভাঙাচোরা রাইড এবং চারপাশের জরাজীর্ণ অবস্থার পরিবর্তনে শুরু হয়েছে সংস্কার কাজ।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২৬৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্পের (তৃতীয় প্রকল্প) অধীনে ৫০০টি ভূগর্ভস্থ গাড়ি পার্কিং, দৃষ্টিনন্দন জলাধারসহ হাঁটার পথ, আন্ডারপাস, মসজিদ ও অত্যাধুনিক রাইডসহ শিশুপার্কের আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মূল প্রকল্প মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়ন করবে গণপূর্ত অধিদফতর। শিশুপার্কের রাইড স্থাপন এবং স্থাপত্য নকশা আধুনিকায়নের কাজ বাস্তবায়ন করবে ডিএসসিসি। এজন্য সংস্থাটিকে মূল বাজেট থেকে ৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ টাকা থেকে পার্কের একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করার জন্য কনসালটেন্সি ফি বাবদ ১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে পুরনো স্থাপনা অপসারণ ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে। বাকি ৭২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে পার্কে নতুন ১৩টি রাইড ও ভূগর্ভস্থ পার্কিং নির্মাণে। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ বছর পর্যন্ত। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিডেট (এনডিই) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

সরেজমিন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটকে নোটিশ টাঙানো রয়েছে ‘পার্কের সংস্কার কাজ চলছে।’ ভিতরে ঢুকে দেখা যায়, পুরনো রাইডগুলো সরিয়ে মাটি সমান করা হয়েছে। মাটি প্রস্তুত করার পর পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। একপাশে পুরনো জেট বিমান রাইড খুলে রাখা হয়েছে। অধিকাংশ রাইড খুলে ফেলা হলেও স্থাপনা এখনো রয়ে গেছে। চূড়ান্ত পরিকল্পনা হাতে পেলে এগুলো ভাঙার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান কর্মরত শ্রমিকরা।

এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক সার্কেল) আনিছুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তিনটি সংস্থা একসঙ্গে মিলে এই পার্কের সংস্কার কাজ চলছে। এর মধ্যে ভিতরের নকশাও সবুজায়নের কাজ এবং রাইড বসানোর কাজ করবে সিটি করপোরেশন। আগের রাইডগুলোর মধ্যে কোনটি বাতিল করা হবে সে বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে। আধুনিক বিনোদন কেন্দ্রের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে এই পার্ককে। তিনি আরও বলেন, পার্কের বাইরের দেয়াল থেকে শুরু করে সার্বিক সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করবে গণপূর্ত অধিদফতর। মূল পরিকল্পনা হাতে পেলে পার্কের ভিতরে কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

সর্বশেষ খবর