মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

থমকে আছে কর্ণফুলী পাড়ের উচ্ছেদ

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

থমকে আছে কর্ণফুলী পাড়ের উচ্ছেদ

চট্টগ্রাম বন্দরের প্রাণ খ্যাত কর্ণফুলী নদীর পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম থমকে আছে। টানা পাঁচ দিনের উচ্ছেদ অভিযানের পর পুনরায় শুরু না হওয়ায় নানা শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাছাড়া উচ্ছেদকৃত স্থান আবারও বেদখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে বলে স্থানীয়রা মনে করেন। 

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ৪ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপের টানা পাঁচ দিনের অভিযানে ২৩০টি স্থাপনা উচ্ছেদ এবং বেদখলে থাকা প্রায় ১০ একর ভূমি উদ্ধার করা হয়। আলোর মুখ দেখে পাঁচটি খালের মুখ। বন্দর এলাকা থেকে শুরু করে বারিক বিল্ডিং মোড়-গোসাইলডাঙ্গা-সদরঘাট-মাঝিরঘাট-শাহ আমানত সেতু হয়ে মোহরা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার নদীর তীরকে তিন ভাগে ভাগ করে শুরু হয় অভিযান। প্রথম ধাপে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয় নগরের সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার অংশে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম ধাপের অভিযান সমাপ্ত করা ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন। কর্ণফুলী নদীর উত্তর তীরে দুই হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে প্রশাসন।

অভিযানের দায়িত্বপ্রাপ্ত পতেঙ্গা সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাহমিলুর রহমান বলেন, ‘মাঝখানে দাফতরিক নানা কাজে ব্যস্ত থাকায় অভিযান চালানো হয়নি। তবে দ্বিতীয় দফার অভিযানের জন্য আমরা প্রস্তুত। ইতিমধ্যে জরিপসহ প্রয়োজনীয় সব কাজ শেষ করেছি। শিগগিরই অভিযান শুরু হবে।’  

সরেজমিনে দেখা যায়, কর্ণফুলী নদীর তীর দখল করে যার যেমন ইচ্ছে দখল করেছে। কেউ বানিয়েছেন ডক ইয়ার্ড, কেউ তুলেছেন রাইসমিল, লবণ মিল, কেউ নদীর তীর দখলে রাখতে গড়ে তুলেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মন্দির। নদীর তীরে ডক ইয়ার্ড দিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছে। আছে কাঁচাঘর, দোকান, ভবন, বালুর স্তূপ, কলেজ, মৎস্য প্রকল্প, জসিম উদ্দীন প্রাথমিক বিদ্যালয়, সৎসঙ্গ বিহার, দাতব্য চিকিৎসালয়, প্লাস্টিক বোতল ও গার্মেন্ট কারখানা। প্রতিষ্ঠানগুলো কর্ণফুলীর প্রায় ১০০ একর তীর দখল করে জাহাজ তৈরি ও মেরামতের কাজ করছে।       

জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৬ আগস্ট হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে গড়ে ওঠা স্থাপনা সরাতে ৯০ দিনের সময় বেঁধে দেয়। ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এক কোটি ২০ লাখ টাকা অর্থ বরাদ্দ চেয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। অর্থ সংকুলান না হওয়ায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়নি। পরে ভূমি মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অর্থ সংস্থানের পর অভিযান শুরু হয়।

 

 

সর্বশেষ খবর