চট্টগ্রাম নগরীর অন্যতম সবুজ আঙিনা বিপ্লব উদ্যান। এ উদ্যানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সবুজ ধ্বংস করে ২০১৯ সালে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করে। এ নিয়ে নাগরিক সমাজ প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করলেও চসিক দাবি উপেক্ষা করে। এবার এ উদ্যান বাঁচানোর আশার আলো দেখা দিয়েছে। আদালতের নির্দেশনা মতে চসিক বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ রাখতে বলেছে। একই সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরও উদ্যানটি বাঁচাতে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে। উদ্যান বাঁচাতে নগরীর পরিবেশবাদী ও নগর পরিকল্পনাবিদসহ সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ নেবে চসিক। আগামী সপ্তাহে এ পরামর্শ সভা হবে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর বিপ্লব উদ্যান রক্ষায় ৬ দফা দাবিতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা অধিকার রক্ষা পরিষদ’-এর ব্যানারে দুই নম্বর গেট মোড়ে সমাবেশ হয়। গত ১৮ আগস্ট বৈষম্যবিরোরী ছাত্র সমাজ চসিকে একটি স্মারকলিপিও দেয়। এ ছাড়া ১৪ আগস্ট মানববন্ধন করে বিপ্লব উদ্যান দোকান মালিক সমিতি।
দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, আদালতের নির্দেশনা মতে চসিক বর্তমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে কাজ বন্ধ রাখতে চিঠি দিয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরও এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখছে। তাছাড়া চসিক সব অংশীজন নিয়ে একটি পরামর্শ সভা করবে। আমরাও চাই সম্মিলিত পরামর্শে নগরীর অন্যতম এই উদ্যানকে বাঁচাতে। তিনি বলেন, আগে পার্কে মাত্র ১০ শতাংশ জায়গায় স্থাপনা হয়েছিল। এখন আরও ২৫টি দোকান নির্মাণের চুক্তি হয়। এগুলো নির্মাণ হলে পার্কের প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাবে। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল আলম বলেন, আমরা বিপ্লব উদ্যানের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিয়েছি। সেখানে নতুন করে আর স্থাপনা হবে না। আমরা নগরীর নানা শ্রেণি- পেশার মানুষের মতামত নিয়ে সবার পরামর্শে যা করতে হয় সেই সিদ্ধান্ত নেব।
১৯৭৯ সালে নগরের ২ নম্বর গেট মোড়ে প্রায় দুই একর জায়গায় বিপ্লব উদ্যান নির্মিত হয়। নির্মাণের পর থেকেই সেখানে প্রতিদিন বিকালে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষে মুখর থাকত। ২০১৮ সালে চসিক আধুনিকায়নের নামে প্রকল্প নিয়ে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ বছরের জন্য ইজারা দেয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে গত বছর চুক্তি সংশোধন করে আবারও একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২৫ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়।