গেল দুই দশকে হেয়ার জেলের ব্যবহার অনেক বেড়ে যায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হেয়ার জেলের ব্যবহার কমে এলেও একেবারে হারিয়ে যায়নি। আজও পারলার বা হেয়ার স্যালনে স্টাইলিংয়ে এটি ব্যবহার করা হয়। আবার এটি ব্যবহার করে চুল হারানো মানুষের সংখ্যা কম নয়। কারণ, অনেকেই এর ক্ষতিকর দিক ও ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানেন না। ফলে চুলের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়।
চুল পড়ে যায় : বাজারে সাধারণত যেসব হেয়ার জেল পাওয়া যায়, তাতে অনেক ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকে। এগুলো চুলকে রুক্ষ ও শুষ্ক করে ফেলে। দীর্ঘদিন ব্যবহারে রাসায়নিকের জন্য চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে।
স্ক্যাল্পের আর্দ্রতা নষ্ট হয় : শুধু চুল নয়, মাথার স্ক্যাল্পও শুষ্ক করে ফেলে। বেশির ভাগ হেয়ার জেলে অ্যালকোহল ও প্রোপিলিন গ্লাইকল রয়েছে। এ দুই উপাদান মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অ্যালকোহল ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে। আর প্রোপিলিন গ্লাইকল স্ক্যাল্পের প্রোটিন ভেঙে ফেলে। ফলে সেলুলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারায়।
সংক্রমণ ও খুশকির প্রবণতা : হেয়ার জেল স্ক্যাল্পের সিবাম উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করে। এর কারণে স্ক্যাল্প শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে মাথায় সাদা ফ্লেকস দেখা দেয়। অন্যদিকে দীর্ঘ সময় ধরে হেয়ার জেল ব্যবহারের ফলে মাথার ত্বকের স্বাভাবিক বাস্তুসংস্থানের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। ফলস্বরূপ এখানে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস আক্রমণ করতে পারে। তখন চুলে খুশকির মতো বিরক্তিকর সমস্যা দেখা দেয়।
দ্রুত চুল পেকে যাওয়া : অতিরিক্ত হেয়ার জেল ব্যবহারে চুল বিবর্ণ হয়ে যায় এবং বয়সের আগেই চুল পাকতে শুরু করে। কারণ, এর ক্ষতিকর রাসায়নিকগুলো মাথার ত্বকে পিএইচের ভারসাম্যে হস্তক্ষেপ করে। এ জন্য চুল ধীরে ধীরে নিস্তেজ ও বিবর্ণ হয়ে যায়।
হেয়ার জেল ব্যবহারের সঠিক নিয়ম
চুলের স্টাইলিংয়ের জন্য যারা হেয়ার জেল ব্যবহার করেন, তারা একটু নিয়ম মেনে এটি ব্যবহার করলে এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে চুল রক্ষা করতে পারবেন। যেমন হেয়ার জেল সামান্য পরিমাণে ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্যবহারের পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, হেয়ার জেল চুলে ৪৮ ঘণ্টার বেশি যেন রাখা না হয়। তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে শুরু করবে। প্রতিদিন নয়, সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার যথেষ্ট।
হেয়ার জেলের বিকল্প ব্যবহার
হেয়ার জেলেরও প্রাকৃতিক বিকল্প রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অ্যালোভেরা অন্যতম। এর উপকারিতা অনেক। চুলের স্বাস্থ্য রক্ষার পাশাপাশি এটি স্টাইলিং করতেও ভালো কাজ করতে পারে। এ ছাড়া জেলের পরিবর্তে তেলও ব্যবহার করা যায়। সেটা যে কোনো তেল হতে পারে। তবে জোজোবা বা জলপাইয়ের তেল ভালো।
লেখা : উম্মে হানি